পিভট পয়েন্ট কি?

পিভট পয়েন্ট কি?

ফরেক্স ট্রেড করতে হলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে পিভট পয়েন্ট কি? চলুন আমরা পিভট পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই..

বাই-সেল সিগন্যাল নির্ধারণ করার জন্য পিভট পয়েন্ট ফরেক্সে অনেক জনপ্রিয় একটি মেথড। রিভার্সাল পয়েন্ট (যেখানে গিয়ে প্রাইস বিপরীত দিকে ফিরে আসে) চিহ্নিত করার জন্য ট্রেডাররা পিভট পয়েন্ট ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে।

পিভট পয়েন্টে চার্টটিকে কয়েকটি সেকশনে ভাগ করা হয়। মাঝের পয়েন্টটি হল পিভট পয়েন্ট (PP)। পিভট পয়েন্টের ওপরে প্রাইস থাকলে মার্কেট বুল্লিশ (মার্কেটের গতিবিধি ঊর্ধ্বমুখী) এবং পিভট পয়েন্টের নিচে প্রাইস থাকলে মার্কেট বিয়ারিশ (মার্কেটের গতিবিধি নিম্নমুখী)। R1, R2 এবং R3 হল রেসিসট্যান্স লেভেল এবং পিভট পয়েন্টের (PP) অপরে থাকে। S1, S2 এবং S3 হল সাপোর্ট লেভেল এবং পিভট পয়েন্টের (PP) নিচে থাকে।

 

এখানে,

  • PP = Pivot point (পিভট পয়েন্ট)
  • S = Support (সাপোর্ট)
  • R = Resistance (রেসিসট্যান্স)

 

কিভাবে পিভট পয়েন্ট হিসাব করা হয়ঃ

পিভট পয়েন্টের ক্ষেত্রেঃ

  • High = গতকাল প্রাইস সর্বোচ্চ যে প্রাইসে গিয়েছে
  • Low = গতকাল প্রাইস সর্বনিম্ন যে প্রাইসে গিয়েছে
  • Close = গতকাল মার্কেট যে প্রাইসে ক্লোজ হয়েছে

ক্যালকুলেশনঃ

 

R3 = High + 2 x (PP – Low)

R2 = PP + (High – Low) = PP + (R1 – S1)

R1 = (PP x 2) – Low

PP = (High + Low + Close) / 3

S1 = (PP x 2) – High

S2 = PP – (High – Low) = PP – (R1 – S1)

S3 = Low – 2 x (High – PP)

আপনি এখন কষ্ট করে High, low এবং close বের করে পিভট পয়েন্ট বের করতে পারেন। অথবা পিভট পয়েন্ট ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে High, low এবং close সহজেই ডাটাগুলো বের করে নিতে পারেন। এছাড়া কিছু পিভট ইন্ডিকেটর রয়েছে, যেগুলো আপনার চার্টেই পিভট পয়েন্ট দেখিয়ে দেবে। এজন্য ইন্ডিকেটর বিভাগটি দেখুন।

 

কিভাবে পিভট পয়েন্ট ব্যবহার করে ট্রেড করবেনঃ

ব্রেকআউট ট্রেডিং

ব্রেকআউট হলে আপনি যেভাবে ট্রেড করেন, এখানেও তা ঠিক সেভাবেই কাজ করবে। প্রাইস যদি পিভট লাইনকে ক্রস করে এবং সেদিকে ক্লোজ হয়, তবে সাধারনত প্রাইস সেদিকেই যেতে থাকে। নিচের চার্টটি দেখুনঃ

 

সবুজ জায়গাটি বোঝাচ্ছে যে প্রাইস প্রথমে পিভট পয়েন্টের নিচে ছিল এবং সবুজ জায়গা থেকে পিভট লাইন অতিক্রম করে ওপরের দিকে উঠেছে।

যখন পিভট লাইন ভেঙ্গে যায়, তার মানে হল যে প্রাইস এখন সেদিকে যেতে শুরু করবে। ব্রেকআউট ট্রেড করার উপায় হল, ব্রেক হবার পরেই সেই দিকে ট্রেড ওপেন করা। আপনি যখন ট্রেড ওপেন করবেন, তখন আপনি ব্রোকেন লাইনের ঠিক বিপরীতে স্টপ লস সেট করবেন এবং টেক প্রফিট হবে পরবর্তী লাইন।

 

 

ওপরের চার্টটি দেখুন। ট্রেড ওপেন করা হয়েছিল ২.০৫৫০ (সবুজ লাইন) প্রাইসে। স্টপ লস সেট করতে হবে ১.০৫৩৫ এ পিভট পয়েন্টের (লাল লাইন) নিচে। আপনার টেক প্রফিট হবে ১.০৫৯৪ এর R1 এর আশেপাশে।

এই ট্রেডটি মাত্র ৪০ পিপসের ছিল। খুব বেশী উত্তেজিত হবার কোন কারন নেই। কারন এগুলো সবসময় কাজ করে না। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের অন্য কোন কিছুর সাথে আপনি এটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি আরেকটু নিশ্চিত হতে পারনে যে আপনি ভুল ট্রেড করতে যাচ্ছেন না।

রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং

রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং হল যখন প্রাইস ২টি পিভট পয়েন্টের মধ্যে আঁটকে থাকে, অর্থাৎ ২টি লাইনের মধ্যেই বারবার ঘুরতে থাকে। নিচের চার্টটি দেখুনঃ

 

যতবার প্রাইস পিভট পয়েন্টকে হিট করে, কিন্তু ব্রেক না করে ফিরে যায়, পিভট পয়েন্ট তত শক্তিশালী হয়। যদি প্রাইস দিনে কোন পিভট পয়েন্টকে ৫ বার হিট করে, কিন্তু ব্রেক না করে, তবে বুঝতে হবে পিভট পয়েন্টটি অনেক শক্তিশালী। কিন্তু প্রাইস যদি পিভট পয়েন্টকে ১ বার হিত করে, তবে রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং ট্রেডিং করার জন্য আপনি আরও ১ বার ঐ পিভট পয়েন্ট হিট করার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন।

আপনি যদি কোন চার্ট দেখতে থাকেন এবং দেখেন যে প্রাইস কমপক্ষে ২ বার পিভট পয়েন্টকে হিট করেছে কিন্তু ব্রেক না করে বিপরীত দিকে ফিরে গেছে, তাহলে আপনি রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং করার কথা ভাবতে পারেন।

চ্যানেল

আমরা এখানে চ্যানেল আই, বিটিভি কিংবা কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেল নিয়ে আলোচনা করব না। আমরা যদি ট্রেন্ড লাইন থিওরিকে আর এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাই এবং আপট্রেন্ড বা ডাউনট্রেন্ড লাইনের সাথে একই দিকে সমান্তরাল ভাবে আরেকটি লাইন আঁকি, তবে একটি চ্যানেল তৈরি হবে।

চ্যানেল হল টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের আরেকটি টুলস যা বাই বা সেল করার জন্য ভাল প্রাইস নির্ধারণ করতে আমাদের সাহায্য করে।

 

ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল আঁকার জন্য আপট্রেন্ড লাইনের সমান্তরালে একটি লাইন আঁকতে হবে এবং তা সাম্প্রতিক বটম পয়েন্টগুলোর সাথে কানেক্ট করতে হবে। ট্রেন্ড লাইন আঁকার সময়ই এই লাইনটি আঁকতে হবে।

নিম্নমুখী চ্যানেল আঁকার জন্য ডাউনট্রেন্ড লাইনের সমান্তরালে একটি লাইন আঁকতে হবে এবং তা সাম্প্রতিক টপ পয়েন্টগুলোর সাথে কানেক্ট করতে হবে। ট্রেন্ড লাইন আঁকার সময়ই এই লাইনটি আঁকতে হবে।

যখন প্রাইস নিচের ট্রেন্ড লাইনকে হিট করবে, তখন আপনি বাই করতে পারেন। আর যদি প্রাইস ওপরের ট্রেন্ড লাইনকে হিট করে তবে আপনি সেল করতে পারেন।

চ্যানেল ৩ প্রকারঃ

  • ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল (higher highs and higher lows)
  • নিম্নমুখী চ্যানেল (lower highers and lower lows)
  • সমান্তরাল বা সাইডওয়ে চ্যানেল (ranging)
চ্যানেল সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্যঃ
  • চ্যানেল আঁকার সময়, দুটি ট্রেন্ড লাইনই সমান্তরাল হতে হবে।
  • চ্যানেলের নিচের অংশটি বাই জোন এবং ওপরের অংশটি সেল জোন হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • ট্রেন্ড লাইন আঁকার মত চ্যানেল আঁকার সময়েও জোর করে চ্যানেল আঁকার চেষ্টা করবেন না। তাহলে তা ভুল ট্রেডের নির্দেশনা দিতে পারে।

ট্রেন্ড লাইন

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয় একটি টুলস হল ট্রেন্ড লাইন। ট্রেন্ড লাইন সহজেই বোঝা যায়। ট্রেন্ড লাইন যদি সঠিকভাবে আকা যায় তবে তা অন্য যেকোনো মেথড থেকে ভাল ফলাফল দেয়। কিন্তু অধিকাংশ ট্রেডার সঠিকভাবে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে পারে না এবং জোর করে ট্রেন্ড লাইন আকে জার ফলে তা কার্যকর হয় না।

ট্রেন্ড লাইন আঁকার জন্য মেটা ট্রেডার এর টুলস থেকে ট্রেন্ড লাইন টুল দিয়ে লাইন টানতে হয়।

লো পয়েন্টগুলো একটি ট্রেন্ড লাইনের মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয় এবং হাই পয়েন্টগুলো একটি ট্রেন্ড লাইনের মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয়।

যদি কোন ক্যানডেল ট্রেন্ড লাইন ক্রস করে ওপরে বা নিচে চলে যায়, তখন বুঝতে হবে ট্রেন্ড লাইন ব্রেক হয়েছে।

নিচের চার্টটি ফলো করুনঃ

ট্রেন্ড ৩ রকমঃ

  • আপট্রেন্ড (higher lows)
  • ডাউনট্রেন্ড (lower high)
  • সাইডওয়ে ট্রেন্ড (ranging)

আপট্রেন্ডে মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী থাকে। তাই আপনি বাই করতে পারবেন। ডাউনট্রেন্ডে মার্কেট নিম্নমুখী থাকে। তাই আপনি সেল করতে পারবেন। সাইডওয়ে ট্রেন্ডে মার্কেট একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে ঘুরতে থাকে। তাই সাইডওয়ে ট্রেন্ডে ট্রেড না করাই ভাল।

 

ট্রেন্ড লাইন সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্যঃ

  • অন্তত ২টি টপ (top) অথবা বটম (bottom) পয়েন্ট সংযুক্ত করে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে হয়। তবে ৩টি পয়েন্ট হলে ট্রেন্ড লাইন কনফার্ম হয়।
  • সাপোর্ট এবং রেসিসট্যান্স লাইনের মত যতই প্রাইস ট্রেন্ড লাইনগুলোকে টেস্ট করবে, ট্রেন্ড লাইনগুলো তত শক্তিশালী হবে।
  • জোর করে ট্রেন্ড লাইন আঁকার চেষ্টা করবেন না যদি। সেক্ষেত্রে তা ভ্যালিড ট্রেন্ড লাইন হবে না।

সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স

—– সাপোর্ট হোল সেই লেভেল যেই লেভেল এ প্রাইস একবার অথবা অনেকবার টাচ করে আবার উপরে উঠে যায়। কিন্তু ব্রেক করে না..
—– রেসিসটেন্স হোল সাপোর্ট এর বিপরীত। এটি হোল সেই লেভেল যে লেভেল প্রাইস একবার অথবা অনেকবার টাচ করে নিচে নেমে যায় …

আপনি যদি সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স বুঝতে পারেন তবে আপনি বুঝতে পারবেন ফরেক্স মার্কেট কিভাবে কাজ করে।

এই পদ্ধতি আপনাকে সঠিক সময়ে ট্রেড খুলতে এবং ঠিক সময়ে ট্রেড থেকে আপনাকে বের হয়ে আসতে আপনাকে সাহায্য করবে।

বিভিন্নভাবে সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স লেভেল বের করা যায়।

যখন মার্কেট সাপোর্ট লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, সাধারণত প্রাইস আরও কমে যায় এবং পরবর্তী রেসিসটেন্স লেভেল তখন সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে।

আবার যখন মার্কেট রেসিসটেন্স লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, সাধারণত প্রাইস আরও বেড়ে যায় এবং পরবর্তী সাপোর্ট লেভেল তখন রেসিসটেন্স হিসেবে কাজ করে।

তাই সাপোর্ট ব্রেক করলে সেল করা উচিত এবং রেসিসটেন্স ব্রেক করলে বাই করা উচিত।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের ছবিটি দেখুন। এখানে একটি জিগজ্যাগ প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে।

ধরুন মার্কেট আপট্রেন্ডে রয়েছে। এখানে মার্কেট সর্বোচ্চ বাড়ার পর যে প্রাইসে আবার তা কমে যেতে শুরু করে সেটাই রেসিসটেন্স।

অর্থাৎ, বেড়ে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ পয়েন্টটিই হল রেসিসটেন্স লেভেল।

আবার কমে সর্বনিম্ন যত নিচে যায়, সেই পয়েন্টটি হল সাপোর্ট লেভেল।

মার্কেট ডাউনট্রেন্ডে থাকলেও একইরকম।

সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স নির্ধারণ

 

 

একটি বিষয় মনে রাখবেন যে সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স কখনও কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নয়। এটি এক ধরনের লেভেল বা এরিয়া।

অনেক সময় চার্ট দেখে মনে হয় যে মার্কেট সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স ব্রেক করেছে কিন্তু কিছুক্ষণ পর বোঝা যায় যে মার্কেট আসলে সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স ব্রেক হয়নি, মার্কেট শুধুমাত্র টেস্ট করেছে।

ক্যানডেলস্টিক চার্টে এই মার্কেট টেস্টসমূহকে এভাবে দেখান যেতে পারেঃ

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

চার্টটি দেখুন। দেখা যাচ্ছে মার্কেট ২ বার ১.৪৭০০ সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করেছে।

কিন্তু মার্কেট সাথে সাথেই আবার ওপরে উঠে গেছে অর্থাৎ সাপোর্ট লেভেল আসলে ভাঙ্গেনি।

মার্কেট শুধুমাত্র টেস্ট করেছে।

তাহলে কিভাবে বুঝবেন যে সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স লেভেল সত্যিই ব্রেক হয়েছে?

এই প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর নেই।

তবে কেউ কেউ বলে প্রাইস যদি আগের লেভেলে ক্লোজ হয় তবেই সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স ব্রেক হয়েছে বোঝা যায়।

কিন্তু এটা যে সবসময় হয় তা নয়।

নিচের চার্টটি দেখুন। প্রাইস ১.৪৭০০ এর অনেক নিচে গিয়েছে। কিন্তু পরে আবার বেড়ে গিয়েছে।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

কিন্তু সাপোর্টটি আসলে ব্রেক হয়নি। এটি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে এবং অনেক শক্তিশালী। এখন যদি আপনি আপনার বাই ট্রেড ক্লোজ করে সেল ট্রেড দিতেন, হয়ত আপনি লসের সম্মুক্ষীণ হতেন।

আপনি যদি প্রতিনিয়ত প্র্যাকটিস করেন তবে আপনি সহজেই সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স নির্ধারণ করতে পারবেন।

support_resistance_basic

সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স সম্পর্কে কিছু তথ্য

  • যখন মার্কেট রেসিসটেন্স লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, তখন পূর্ববর্তী রেসিসটেন্স লেভেল সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে  (উপরের ছবিতে দেখুন)..  আবার যখন মার্কেট সাপোর্ট লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, পূর্ববর্তী  সাপোর্ট লেভেল  তখন রেসিসটেন্স  হিসেবে কাজ করে
  • মার্কেট সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স লেভেল যত বেশি টেস্ট করে, ঐ সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স তত বেশি শক্তিশালী হয়।

নিউজ ইম্প্যাক্ট

প্রতিদিন ফরেক্সের অনেক নিউজ, জব রিপোর্ট, স্পিচ প্রকাশিত হয়। এগুলো মার্কেটকে প্রভাবিত করে। তাই অনেকেই এই নিউজগুলো টার্গেট করে ট্রেড করে। কিন্তু আমাদের কি সব নিউজই ট্রেড করা উচিত? সব নিউজের প্রভাব বা ইম্প্যাক্ট সমান নয়। দেখা যাক কি কি ধরনের নিউজ আসে।

ফরেক্সের নিউজের জন্য সবাই প্রধানত FOREXFACTORY.COM অনুসরন করে থাকে। কারন তারা সবচেয়ে ভাল নিউজ প্রকাশ করে থাকে এবং সবার আগে প্রকাশ করে। আপনি সেখানে প্রতিটি নিউজের পাশে ওপরের ৪টি চিহ্নের একটি দেখতে পাবেন। সুতরাং, চিহ্ন দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন ওই নিউজের প্রভাব কি হবে এবং সে অনুসারে ট্রেড করতে পারবেন। হাই ইম্প্যাক্ট নিউজ দ্বারা বোঝায় যে তা মার্কেটে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। মিডিয়াম ইম্প্যাক্ট নিউজগুলোর প্রভাব তুলনামূলক কম হয়। লো ইম্প্যাক্ট নিউজগুলোর প্রভাব একেবারেই কম। সাদা চিহ্ন দিয়ে বোঝায় এই নিউজটি ইকোনমিক নিউজ নয়, যেমন- ব্যাংক হলিডে। যেহেতু লাল হাই ইম্প্যাক্ট এবং কমলা মিডিয়াম ইম্প্যাক্ট নিউজগুলো মার্কেটে বেশী প্রভাব ফেলে, তাই আপনি সেগুলো ট্রেড করতে বা সেগুলো মার্কেটে কি রকম প্রভাব তৈরি করতে পারে তা জেনে রাখতে পারেন।

 

 

ওপরের ছবিতে দেখুন। ECB President Trichet Speaks এবং Manufacturing Production m/m এই নিউজ ২টি হাই ইম্প্যাক্ট নিউজ। এগুলো মার্কেটকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে। BOJ Monthly Report হল মিডিয়াম ইম্প্যাক্ট নিউজ। Household Confidence এবং Economy Watchers Sentiment হল লো ইম্প্যাক্ট নিউজ, যার প্রভাব মার্কেটে খুব একটা বেশী হবে না।

 

কোন নিউজ কোন কারেন্সিকে প্রভাবিত করে

প্রতিটি নিউজের সামনে লেখা থাকে নিউজটি কোন কারেন্সির জন্য। যেমনঃ RBA Assist Gov Debelle Speaks নিউজটির রেজাল্ট ভাল বা খারাপ আসলে তা AUD পেয়ারকে প্রভাবিত করবে। আবার French CPI m/m নিউজটির রেজাল্ট EUR পেয়ারকে প্রভাবিত করবে।

 

 

টিপস এন্ড ট্রিকস

কাস্টোমাইজড নিউজ

আপনার যদি Forex Factory তে নির্দিষ্ট কিছু নিউজ দেখতে চান তবে ওপরে কর্নার থেকে “Filter” ক্লিক করে আপনার পছন্দমত কনফিগারেশন থিক করে দিতে পারেন।

 

নিউজ টাইম

Forex Factory এর সাথে হয়তো আপনার কম্পিউটারের সময় মিলছে না। তাই আপনার নিউজ বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে এবং কখন নিউজটি পাবলিশ হবে বুঝতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে Forex Factory এর অপরে বামপাশে কর্নার থেকে বর্তমানে সে সময় দেখাচ্ছে তাতে ক্লিক করুন।

 

 

পরবর্তী পেইজে Time Zone: GMT +6 সেট করে “Save Changes” ক্লিক করে বের হয়ে আসুন।

 

 

দেখবেন এরপর থেকে বাংলাদেশী সময়ে নিউজ এর সময় দেখাবে।

তবে নিজউ ট্রেডিং এর জন্য ইনভেস্টিং.কম এর ইকোনোমিক ক্যালেন্ডারটা ভাল। কারন এটা যেমন নিউজ বেশি থাকে তেমনি এটাও তথ্যগুলোও সঠিক ও নির্ভুল। Time change করার কোন ঝামেলা নাই। সরাসরি বাংলাদেশ টাইম show করবে।

Investing Economic Calender

 

কিভাবে নিউজ বুঝবেন?

ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস করবো। কিন্তু কিছুই তো বুঝিনা। নিউজ দেখে এর প্রাইসের মুভমেন্ট থেকে মেন্টাল হয়ে যাচ্ছি।
ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস – করলেও প্যারালাইসিস, না করলেও প্যারালাইসিস।



আমরা আপনাকে কিছু বেসিক জিনিস বোঝার জন্য সাহায্য করতে পারি।

এই স্ক্রীনশটটি দেখুনঃ

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

প্রথমে আমরা Formula টি দেখবো।

Halifax HPI m/m এই নিউজের ক্ষেত্রে Formula হলঃ
Actual > Forecast = Good for currency

এখন আমরা জানবো Actual, Forecast এবং Previous কি?

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

এই স্ক্রীনশটে দেখুন Previous 0.2%. তারমানে হল এর আগে যখন নিউজটি পাবলিশ হয়েছিল, তখন রেসাল্ট (actual) এসেছিল 0.2%.
Forecast দিয়ে বোঝায় এবার ধারনা করা হচ্ছে যে নিউজটির রেসাল্ট 0.5% আসতে পারে। আর Actual হল এবার যে ফলাফল আসবে।
Actual এ এবার যে ফলাফল আসবে, তা পরবর্তী নিউজে Previous হিসেবে গণ্য হবে।

এখন আমরা আবার আমাদের ফরমুলায় ফিরে আসি। এখানে বলা হয়েছে, Actual > Forecast = Good for currency.
এটা GBP বিষয়ক নিউজ। তারমানে এবারের Actual এর ফলাফল Forecast (0.5%) থেকে বেশী হলে তা GBP এর জন্য ভাল।
আর যদি Actual এর ফলাফল Forecast থেকে খারাপ আসে, তবে তা GBP এর জন্য খারাপ।

এখানে এবার Actual এসেছে -1.2%. তারমানে Actual < Forecast. তারমানে Bad for currency (GBP).
সুতরাং, এখানে এই ফরমুলা কাজ করবে,

Actual > Forecast = Good for currency
Actual < Forecast = Bad for currency

এখানে, GBP এর Bad for currency আসায় GBP এর জন্য খারাপ নিউজ। তাই GBP এর পেয়ারগুলোতে এর ইফেক্ট পড়বে। যেমন, GBPUSD কমতে পারে, EURGBP বাড়তে পারে ইত্যাদি। কিন্তু সবসময় যে নিউজ এর ইফেক্ট হয় তা কিন্তু নয়, অনেক সময় বিপরীত ইফেক্টও হয়ে থাকে।

সেন্টিমেন্টাল অ্যানালাইসিস

প্রত্তেক ট্রেডারের কাছে নিজস্ব মতামত বা ব্যাখ্যা থাকে যে কেন মার্কেট এভাবে মুভ করছে। আমি, আপনি কিংবা পিপস শিকারি মার্কেট সম্পর্কে যা অনুভব করি এবং সে অনুসারে পজিশন নেই, তাই পরবর্তীতে নতুন মার্কেট সেন্টিমেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করে। সব ট্রেডারদের ট্রেড মার্কেটে প্রতিফলিত হয়।

তাই আপনি একা যদি কোন ট্রেড সম্পর্কে কিছুই অনুভব করে থাকেন না কেন যে মার্কেট সেইদিকে যাবে, আপনি কখনোই মার্কেটকে আপনার পক্ষে মুভ করাতে পারবেন না। এমনকি আপনার যদি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে ডলারের দাম বাড়বে, কিন্তু সবাই যদি বিয়ারিশ (সেল) মুডে থাকে, সেখানে আপনি কিছুই করতে পারবেন না।

এটা আপনার ওপর নির্ভর করে আপনি কিভাবে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝবেন, এটা বুল্লিশ না বিয়ারিশ। পরবর্তীতে এ সম্পর্কে আরও আলোচনা করা হবে। এটা আপনার ওপরই নির্ভর করে যে আপনি আপনার ট্রেডিং স্ট্রাটেজিতে মার্কেট সেন্টিমেন্টকে যুক্ত করবেন কিনা।

আপনি যদি মার্কেট সেন্টিমেন্টকে উপেক্ষা করতে চান, করতে পারেন। কিন্তু তা আপনার জন্য শুধু লসই বয়ে আনবে।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে ট্রেডাররা প্রাইসের মুভমেন্টের ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করে।

মুল বিষয় হল একজন ট্রেডার পূর্বের প্রাইস মুভমেন্ট দেখতে পারে, বর্তমানের প্রাইস মুভমেন্ট বুঝতে পারে এবং ভবিষ্যতের প্রাইস কেমন হবে সে সম্পর্কে ধারনা অর্জন করতে পারে।

আপনার চার্টে পূর্বের সকল প্রাইসের মুভমেন্ট চার্ট আকারে দেয়া থাকবে। তাই আপনি চাইলেই পূর্বে কি হয়েছিল তা দেখতে পারবেন। আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন, “ইতিহাস বারবার প্রতিফলিত হয়“?

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এমনই। পূর্বে যা ঘটেছিল, আমরা আশা করেতে পারি হয়তো ভবিষ্যতেও তাই ঘটতে পারে। যদি কোন প্রাইস লেভেল পূর্বে সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স হিসেবে কাজ করে থাকে, তবে ট্রেডারদের চোখ থাকবে সেই দিকে এবং তারা তার ওপর ভিত্তি করে তাদের ট্রেড করবে।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে আমরা একই প্যাটার্ন মেলানোর চেষ্টা করি যা পূর্বে ঘটেছিল। এবং যেহেতু তা পূর্বে ঘটেছিল, তাই আমরা আশা করবো এবারও হয়ত আগের মত একই জিনিস ঘটতে পারে।

 

কেউ যখন টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস কথাটি বলে, তখন আমাদের মনে সর্বপ্রথম যে কথাটি আসে তা হল চার্ট। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে চার্ট ব্যবহার করা হয় কারন চার্টের মাধ্যমেই হিস্টোরিকাল ডাটা সবচেয়ে সহজে উপস্থাপন করা যায়।

আপনি ট্রেন্ড এবং প্যাটার্ন বোঝার জন্য চার্টে পূর্বের ডাটাগুলো দেখতে পারেন যা কিনা আপনাকে কিছু ভাল ট্রেডের সুযোগ এনে দিতে পারে। প্রাইস প্যাটার্ন, ইন্ডিকেটরের সিগন্যাল আপনাকে মার্কেট সম্পর্কে ভাল আইডিয়া পেতে সাহায্য করতে পারে।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস বিষয়টা নির্ভর করে আপনি কিভাবে অ্যানালাইসিস করবেন।

জনি এবং রনি হয়তো একই চার্ট এবং ইন্ডিকেটর দেখে অ্যানালাইসিস করবে, কিন্তু তারা হয়তো একই রকম ট্রেডের আইডিয়া পাবে না, ভিন্ন ভিন্ন ট্রেডের আইডিয়া পেতে পারে।

আসল কথা হল আপনাকে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের মূল কনসেপ্ট ভালভাবে জানতে হবে। আমাদের ফিবোনেসি, বোলিঙ্গার ব্যান্ড, পিভট পয়েন্ট, মুভিং এভারেজ ইত্যাদির কাজ সম্পর্কে জানতে হবে।

এখন হয়তো আপনি ভাবছেন যে ফরেক্স ট্রেডাররা অনেক স্মার্ট। তারা ফিবোনেসি, বোলিঙ্গার ব্যান্ডের মত স্মার্ট নাম জানে। যেহুতু আপনি ফরেক্স ট্রেড শুরু করেছেন, তাই হয়তো আপনি ইতিমধ্যে ফেসবুকে আপনার নাম পরিবর্তন করে এখন ফিবোনেসি তানভীর কিংবা বোলিঙ্গার রাহাত রাখার কথা চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছেন।

পরবর্তীতে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের বিভিন্ন ইন্ডিকেটর, সাপোর্ট-রেসিসটেন্স, পিভট পয়েন্ট ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস

অর্থনৈতিক, সামাজিক অথবা রাজনৈতিক ইত্তাদির ওপর ভিত্তি করে যে অ্যানালাইসিস করা হয় তাই ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস।

ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিসে আপনাকে লক্ষ্য করতে হবে যে কোন দেশের অর্থনীতি ভাল করছে এবং কোন দেশের অর্থনীতি খারাপ দিকে যাচ্ছে। বেকারত্বের পরিমান বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ইভেন্ট কিভাবে কেন এবং কিভাবে দেশের অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখে এই সকল বিষয় গুলো ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিসে আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

কোন দেশের বর্তমান অথবা ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অবস্থা যদি ভাল হয়, তবে ঐ দেশের কারেন্সি শক্তিশালী হবে। একটি দেশের অর্থনীতি যত ভাল হবে, বিদেশি বিনিয়োগকারিরা তত ঐ দেশি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে। সুতরাং তাদের ঐ দেশের কারেন্সি কিনতে হবে এবং ঐ দেশের কারেন্সির ভ্যালু আরো বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের অরথনিইতিক অবস্থা যদি আরও ভাল হত তবে আরও বিদেশি বিনিয়গকারি এই দেশে বিনিয়োগ করতে ও ব্যবসা সম্প্রসারন করতে আগ্রহী হত। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের টাকার ভ্যালু অনেক বেরে জেত। অন্যান্য কারেন্সির ক্ষেত্রেও একই রকম।

এক কথা ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস হলঃ

 

  • দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল = কারেন্সির ভ্যালু বেশী
  • দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ = কারেন্সির ভ্যালু কম

ধরা যাক ইউ. এস. ডলার শক্তিশালী হচ্ছে কারন আমেরিকার অর্থনীতি আগের থেকে ভাল করছে। তাহলে তাদের মুদ্রাস্ফীতি (inflation) নিয়ন্ত্রন করার জন্য ইন্টারেস্ট রেট বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।

অধিক ইন্টারেস্ট রেট ডলার নির্ভর অর্থনৈতিক সম্পদগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। তাই কেউ যদি ঐসব সম্পদ কিনতে চায় বা বিনিয়োগ করতে চায়, তবে প্রথমে তাদের ডলার কিনতে হবে। আর তার ফলেই ডলারের ভ্যালু বৃদ্ধি পাবে।

পরবর্তীতে ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিসের অন্য আর্টিকেলগুলোতে আপনি জানতে পারবেন বিভিন্ন নিউজ, তাদের ইফেক্ট এবং কিভাবে সেগুলো বুঝে ট্রেড করতে হয় এই সম্পর্কে।

অ্যানালাইসিস কি?

প্রাইস বাড়বে কি কমবে তা জানার জন্য আপনাকে অ্যানালাইসিস করতে হবে। অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে আপনি ট্রেড করার সঠিক আইডিয়া পেতে পারেন। অ্যানালাইসিস মূলত ৩ প্রকারঃ

  • ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস (Fundamental Analysis)
  • টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস (Technical Analysis)
  • সেন্টিমেন্টাল অ্যানালাইসিস (Sentimental Analysis)
আপনি প্রশ্ন করতে পারনে কোন ধরনের অ্যানালাইসিস ভাল? কিন্তু ৩ ধরনের অ্যানালাইসিসই গুরুত্বপূর্ণ।

 

এটা অনেকটা ৩ পা-ওয়ালা একটি টুলের মত। যদি এর কোন একটি পা ভেঙ্গে যায়, তাহলে টুলটি ভেঙ্গে যাবে এবং আপনিও মাটিতে পড়ে যাবেন। ফরেক্সের ক্ষেত্রেও আপনার কোন একটি অ্যানালাইসিস যদি দুর্বল হয়, তবে তা আপনার ব্যাপক লসের কারন হতে পারে। তাই সব ধরনের অ্যানালাইসিসই জরুরি।

ট্রেডার হওয়ার ৫ টি ধাপ

ট্রেডার হওয়ার ৫ টি ধাপ

 

ধাপ -১ (অচেতনে অযোগ্যতা)

এটা হল প্রথম ধাপ যখন আপনি সবেমাত্র ফরেক্স সম্পর্কে জানতে শুরু করেছেন। আপনি জানেন যে ফরেক্স অর্থোপার্জনের একটা সহজ রাস্তা, কারন আপনি ফরেক্স সম্পর্কে অনেক কথা শুনেছেন যে ফরেক্স ট্রেড পারলে টাকা আয় করা কোন ব্যাপার নয়। তাই দুর্ভাগ্যবশত আপনি মনে করবেন এটা অনেক সহজ, ঠিক আপনার প্রথম গাড়ি চালানো শিখার ইচ্ছার মত যেটা আপনি মনে করেছেন সহজ হবে, সবচেয়ে বড় কথা আর কত কঠিনইবা হবে?

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আপনি অনেক বেশী ট্রেড করবেন এবং প্রচুর রিস্ক নিবেন, ঠিক যেমন আপনি গাড়ির স্টিয়ারিং হুইলের সামনে প্রথম হাত রেখেছিলেন কিন্তু জানতেন না যে আপনি কি করছেন। যখন আপনি একটা ট্রেড করবেন এবং সেটা আপনার বিপক্ষে যাবে, তখন আপনি সেটা ক্লোজ করে বিপরীত ট্রেড নিবেন এবং সেটাও বিপক্ষে যাবে এবং এরকম হতেই থাকবে।

 

আপনার শুরুর দিকে কিছু প্রাথমিক সাফল্য থাকতে পারে, কিন্তু সেটা আপনার জন্য আরো খারাপ হবে, কারণ সেটা আপনার ব্রেইনকে বলবে যে ফরেক্স তো আসলেই সহজ এবং তার ফলে আপনি আরো বেশি রিস্ক নিতে শুরু করবেন।

 

আপনি আপনার প্রতিটা লস পূরণের জন্য ট্রেড সাইজ আগের তুলনায় দ্বিগুণ করে দিবেন । তাতে মাঝেমাঝে কাজ হবে কিন্তু বেশিরভাগ সময় আপনার একাউন্টের ক্ষতি হবে। আপনি আপনার অযোগ্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অন্যমনস্ক থাকবেন।

 

এই প্রথম ধাপ সাধারণত এক-দু সপ্তাহ স্থায়ী হবে।

 

 

 

 

 

ধাপ ২ – সচেতনে অযোগ্যতা

 

দ্বিতীয় ধাপে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি যেমনটি ভেবেছেন ফরেক্স আসলে ঠিক তেমনটি নয় , এখানে আপনাকে আরো বেশি কাজ করতে হবে। আপনি সচেতনভাবে বুঝতে পারবেন যে আপনার রেগুলার প্রফিট করার মত যোগ্যতা বা জ্ঞান নেই।

 

এরপর আপনি ইউএসএ থেকে ইউক্রেন দুনিয়ার বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঘোরাঘুরি শুরু করবেন , বিভিন্ন সিস্টেম এবং ইবুক দেখবেন , এবং সর্বোপরি হোলী গ্রেইল খোজা শুরু করবেন। এই সময় আপনি হয়ে যাবেন একজন “সিস্টেম যাযাবর”। আপনি একটা ট্রেডিং মেথড ঠিকমত কাজ করে কিনা ভাল করে পরীক্ষা না করে দিনের পর দিন এবং সপ্তাহের পর সপ্তাহ একটি ট্রেডিং মেথড থেকে আরেকটি দেখতে থাকবেন। যখনি আপনি নতুন একটা ইন্ডিকেটর দেখবেন আপনি ভাববেন এটাই আপনার পুরো ট্রেডিং পাল্টে দিবে এবং আপনাকে রেগুলার প্রফিট এনে দিবে।

 

আপনি মেটাট্রেডারে এক্সপার্ট এডভাইসর টেস্ট করতে থাকবেন। আপনি মুভিং এভারেজ, ফিবোনেসি লাইন, সাপোর্ট-রেসিসট্যান্স, পিভট, ফ্র্যাক্টাল, Divergence, DMI, ADX এরকম শতশত ইন্ডিকেটর নিয়ে খেলা করতে থাকবেন শুধু এই আশায় যে আপনার ম্যাজিক সিস্টেম আজই শুরু হয়ে যাবে। আপনি ইন্ডিকেটর দিয়ে সঠিক রিভার্সাল পয়েন্ট খোজার আশায় টপ & বটম ধরার চেষ্টা করবেন। শেষমেষ দেখবেন আপনি পরাজিত ট্রেডের পিছনে ছুটতেই থাকছেন এমনকি নতুন করে ট্রেড যোগ করছেন কারণ আপনি জানেন আপনি সঠিক।

 

আপনি বিভিন্ন লাইভ চ্যাট রুমে যাবেন এবং দেখবেন অন্যান্য ট্রেডাররা অনেক পিপস লাভ করছে । আপনি ভাববেন আপনি কেন পারছেন না। আপনি মিলিয়ন মিলিয়ন প্রশ্ন করতে থাকবেন যার মধ্য কতগুলো এমন প্রশ্ন যে যেগুলো দেখে চ্যাটরুমের অন্যান্য মানুষজন আপনাকে মূর্খ মনে করবে। অবশেষে আপনার মনে হবে যে ঐসব ট্রেডাররা যারা পিপসের পর পিপস লাভ করছে তারা মিথ্যা কথা বলছে এবং নিশ্চয়ই ডেমো অ্যাকাউন্টের স্ক্রীনশট দিচ্ছে। কারণ আপনি ফরেক্স সম্পর্কে গবেষণা করেছেন, আপনি ঐসব সফল ট্রেডাররা যা জানে তার সবই জানেন, কিন্তু আপনি লাভ করছেন না , তার মানে ঐসব ট্রেডাররা মিথ্যা বলছে। কিন্তু তারা দিনের পর দিন ফরেক্স ট্রেড করছে এবং তাদের একাউন্ট ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে যেখানে আপনার একাউন্ট শুধুই হ্রাস পাচ্ছে।

 

আপনি টিনএজারদের মত হবেন। টিনএজারদের সবাই ফ্রি উপদেশ দেয় কিন্তু কেউ শোনেনা। আপনাকেও সবাই উপদেশ দিবে ফরেক্স সম্পর্কে, কিন্তু আপনি আপনার মত একগুঁয়ে থাকবেন এবং ভাববেন আপনি তো সবই জানেন। আপনি আপনার মত বেশি বেশি ট্রেড করতে থাকবেন। আপনি অন্যান্য সফল ট্রেডারদের সিগন্যাল ফলো করবেন। কিন্তু যখন সেটা কাজ করবে না তখন আপনি অন্যান্য সিগন্যাল প্রোভাইডার থেকে কিনে সিগন্যাল ব্যবহার করতে চাইবেন। সেটাও আপনার জন্য কাজ করবে না।

 

আপনি কিছু “গুরু”র কাছে যাবেন যারা আপনাকে প্রফেশনাল ট্রেডার বানিয়ে দিতে রাজী হবে, অবশ্যই কিছু ফি এর বিনিময়ে। সেই গুরু ভাল হোক বা না হোক আপনি কিছুই শিখতে পারবেন না কারণ সময়ের কোন বিকল্প নেই, এবং আপনি এখনো মনে করে আছেন আপনি সবই জানেন।

 

এই ধাপ বছরের পর বছর স্থায়ী হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য ট্রেডারদের সাথে কথা বলা নিশ্চিত করে এই ধাপ সহজেই ১ বছর থেকে ৩ বছরের কাছাকাছি স্থায়ী হতে পারে। এই ধাপে আপনি নিছক হতাশার কারণেও ফরেক্স ট্রেডিংকে বিদায় জানাতে পারেন।

 

৬০% এর মত নতুন ট্রেডার প্রথম ৩ মাসেই ফরেক্সকে বিদায় জানাবে, এবং এটি ভাল। একবার ভাবুন, ট্রেডিং যদি এতই সোজা হত তবে আমরা সবাই সহজেই মিলিয়নিয়ার হয়ে যেতাম । অন্য ২০% এক বছরের মত যাবে এরপর হতাশার কারণে অতিরিক্ত রিস্ক নিয়ে তাদের একাউন্ট উড়িয়ে দিবে ।

 

যেটা আপনাকে আশ্চর্য করতে পারে সেটা হল বাকী ২০% ৩ বছরের মত টিকে থাকবে, এবং তারা ভাববে তারা নিরাপদ আছে। কিন্তু ৩ বছর পরেও শুধুমাত্র ৫-১০% চালিয়ে যাবে এবং ধারাবাহিকভাবে লাভ করতে থাকবে।

 

(বাই দ্য ওয়ে, এইসব ফিগার কিন্তু রিয়েল। এমন নয় যে আমার মাথায় এসেছে আর আমি লিখে গিয়েছি। তাই যখন ৩ বছর হবে তখন ভাববেন না যে এখান থেকে সোজা আপনি সফল হয়ে যাবেন। আমার বহুলোকের সাথে এই ফিগারগুলো নিয়ে তর্ক হয়েছে। মজার ব্যাপার হল তারা কেউ ৩ বছরের বেশি সময় ধরে ট্রেড করছে না। যদি আপনি মনে করেন আপনি ভাল জানেন তাহলে কোন ফোরামে এমন কাউকে প্রশ্ন করুন যে ৫ বছর ধরে ট্রেড করছে। জিজ্ঞেস করুন ১০০% দক্ষ হতে কত সময় লেগেছে। সামান্য ব্যতিক্রম থাকতে পারে কিন্তু আমি এখনো এমন কাউকে দেখিনি। )

 

অবশেষে আপনি এই ধাপ থেকে উঠে আসতে শুরু করবেন। আপনি সম্ভবত আপনার প্রত্যাশার চাইতেও বেশি সময় এবং অর্থ শেষ করেছেন, আপনার ২-৩ টা লাইভ একাউন্ট জিরো হয়ে গেছে, কিন্তু ফরেক্স এখন আপনার রক্তে বহমান……ফরেক্স ইন দ্যা ব্লাড।

 

একদিন আপনি ৩য় ধাপে পৌছাবেন।

 

ধাপ ৩ – ইউরেকা !!

 

ধাপ ২ শেষের পথে আপনি বুঝবেন সিস্টেমে আসলে কোন সমস্যা নেই, যেটা আপনি মনে করেছিলেন। আপনি বুঝতে শুরু করবেন সিম্পল মুভিং এভারেজ দিয়েও টাকা কামানো সম্ভব যদি আপনি সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট প্রয়োগ করতে পারেন। আপনি সাইকোলজি নিয়ে বিভিন্ন ইবুক পড়তে শুরু করবেন এবং ঐসব বইয়ে বর্ণীত বিভিন্ন চরিত্র মেলাতে থাকবেন। অবশেষে ইউরেকা মোমেন্টে এসে পৌছাবেন।

 

এই ইউরেকা মোমেন্ট আপনার ব্রেইনে নতুন এক সংযোগ তৈরি করবে। আপনি হঠাৎ বুঝতে পারবেন আপনি কেন, পৃথিবীর কেউ মার্কেটের পরবর্তী ১০ সেকেন্ডে কি হবে সেটা অনুমান করতে পারবেনা, ২০ মিনিট তো পরের কথা।

 

এই বোধের কারণে আপনি অন্যরা কে কি বলে, এই নিউজ মার্কেটে কি প্রভাব ফেলবে বা ঐ ইভেন্ট কিরকম হবে সেগুলো চিন্তা করা বন্ধ করবেন। আপনি ট্রেড করবেন আপনার নিজস্ব মেথডে।

 

আপনি শুধু ১টা সিস্টেম নিয়ে কাজ করা শুরু করবেন যেটা আপনার সাথে যায়, আপনি খুশি হতে শুরু করবেন, এবং আপনার লস ডিফাইন করে দেয়া শুরু করবেন।

 

আপনি আপনার সিস্টেমে ভাল দেখায় এমন প্রতিটি ট্রেড নেয়া শুরু করবেন। যখন খারাপ ট্রেড হয় তখন আপনি আর রাগ করবেন না, কারণ আপনি বুঝবেন এটা আপনার দোষ নয়। আপনি তাড়াতাড়ি ট্রেড ক্লোজ করে দিবেন যখন বুঝবেন এটা খারাপ ট্রেড। আপনি বুঝবেন এরপরের ট্রেড অথবা তার পরের ট্রেড হয়তো ভাল হবে কারণ আপনি জানেন আপনার সিস্টেম কাজ করে।

 

আপনি ট্রেড টু ট্রেড রেজাল্ট দেখা বন্ধ করবেন এবং সাপ্তাহিক রেজাল্ট দেখা শুরু করবেন । কারণ আপনি জানেন ১ টা খারাপ ট্রেড ১টা সিস্টেম কে খারাপ বানায় না।

 

আপনি হঠাৎ বুঝবেন ট্রেডিং গেম হচ্ছে শুধু ১টা ব্যাপার নিয়ে, সেটা হল আপনার সিস্টেমের প্রতিটা ট্রেড নেয়ার শৃঙ্খলা এবং দৃঢ়তা, কারণ আপনি জানেন সম্ভাব্যতা আপনার পক্ষেই থাকবে।

 

আপনি ভাল মানি ম্যানেজমেন্ট , লেভারেজ ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পর্কে শিখবেন এবং ১ বছর আগে আপনাকে যারা এই বিষয়ে শিখতে উপদেশ দিয়েছিল তাদের মনে করে মুচকি হাসবেন। আপনি তখন তৈরি ছিলেন না, কিন্তু এখন আপনি তৈরি। ইউরেকা মোমেন্ট তখনই আসবে যখন আপনি বুঝবেন যে আপনি মার্কেট সম্পর্কে অনুমান করতে পারবেন না।

 

 

 

 

ধাপ ৪ – সচেতনে যোগ্যতা

 

আপনি তখনই ট্রেড করছেন যখন আপনার সিস্টেম ট্রেড করতে বলছে। আপনি যত সহজভাবে লাভ করেন তেমন সহজভাবেই লস মেনে নেন। আপনি এখন আপনার উইনিং ট্রেডকে তাড়াতাড়ি ক্লোজ না করে শেষ পর্যন্ত রাখেন । আপনি জানেন আপনার সিস্টেম যতগুলো লস ট্রেড করে তারচেয়ে বেশি লাভজনক ট্রেড করে এবং যখন আপনার ট্রেড লসে যায় তখন আপনি ক্লোজ করে দেন (আগের মত আরো পজিশন অ্যাড না করে)।

 

আপনি এখন এমন এক পর্যায়ে যেখানে বেশিরভাগ সময় আপনার একাউন্ট Break Even হয় (লাভ লস সমান সমান)।. হয়ত এই সপ্তাহে ১০০ পিপস লাভ করলেন তো পরের সপ্তাহে ১০০ পিপস লস করলেন। এই পর্যায়ে আপনি টাকা হারাচ্ছেন না, আপনি Break Even করছেন। আপনি এখন জানেন আপনি ভাল ট্রেড গুলোই করছেন এবং চ্যাটরুমে আপনি অন্যান্য ট্রেডারদের সম্মান পাচ্ছেন এবং অনেককে সিগন্যালও দিচ্ছেন। আপনাকে এখনো অনেক পথ যেতে হবে এবং যতই আপনি সামনে এগুবেন ততই আপনি লস করার চাইতে লাভ বেশি করবেন।

 

আপনি দিন শুরু করবেন ২০ পিপস লাভ করে, কিন্তু পরক্ষনেই ৩৫ পিপস লস করবেন কিন্তু আপনার মানসিক অবস্থার কোন পরিবর্তন হবে না কারণ আপনি জানেন যে সে পিপস গুলো আবার ফিরে আসবে। আপনি এখন প্রতি সপ্তাহে ধারাবাহিক লাভ করতে থাকবেন , এই সপ্তাহে ২৫ পিপ্স তো পরের সপ্তাহে ৫০ পিপস এভাবেই যেতে থাকবে।

 

এই ধাপ ৬ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

 

 

ধাপ ৫ – অচেতনে যোগ্যতা

 

এখন আপনি ড্রাইভিং করছেন। প্রতিদিন আপনি আপনার চেয়ারে বসেন এবং ট্রেড করেন। আপনি এখন সব করেন অচেতনভাবে। আপনি এখন অটো পাইলট চালাচ্ছেন। আপনি এখন বড় ট্রেড করছেন । দিনে ২০০ পিপস লাভ করা কিংবা ১ পিপ লাভ করা সমান, কোনটাই আপনার কাছে কোন আনন্দ/উচ্ছাস তৈরি করতে পারে না।

 

আপনি এখন ফোরামে দেখেন নতুনরা চিৎকার করছে “Go Dollar GO” যেন তারা ঘোড়ার রেসে বাজী ধরেছে , এদের মাঝে আপনি অনেক বছর আগের নিজেকে ফিরে পান।

 

এটা হল ট্রেডিং এর কল্পনারাজ্য। আপনি আপনার অনুভুতি আয়ত্ত করেছেন, এবং আপনি এখন এমন একজন ট্রেডার যার একাউন্ট প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

 

আপনি এখন ট্রেডিং চ্যাট রুমের স্টার এবং অন্যান্য ট্রেডাররা আপনি কি বলছেন সেটা শোনে। আপনি তাদের প্রশ্নের মাঝে অনেক বছর আগের নিজের করা প্রশ্নগুলোই ফিরে পান। আপনি আপনার মত উপদেশ দিতে থাকেন, কিন্তু জানেন কেউ আপনার উপদেশ শুনবে না, কারণ তারা বেশিরভাগই সেই একগুঁয়ে – টিনএজার। তাদের কেউ কেউ আপনার অবস্থানে আসবে, কেউ দ্রুত, কেউ দেরীতে। সাধারণত এদের ডজনের পর ডজনই ধাপ ২ অতিক্রম করতে পারবে না, শুধু কয়েকজন বাদে।

 

ট্রেডিং এখন আপনার কাছে কোন উচ্ছাস/আনন্দের কিছু নয়, বরং কিছুটা বিরক্তিকর, যেমন আপনি আপনার বর্তমান চাকুরী/পড়ালেখা আপনার বিরক্তিকর লাগে তেমনই ট্রেডিংও বিরক্তিকর হয়ে উঠে। আপনি আপনার জব করছেন।

 

আপনি এখন আপনার সিস্টেম শান দিচ্ছেন কিভাবে কম রিস্কে বেশি প্রফিট আনা যায়। আপনার সিস্টেম পরিবর্তন হচ্ছে না, শুধু দিনের পর দিন ভাল হচ্ছে।

 

আপনি এখন মাথা তুলে বলতে পারেন “আমি একজন কারেন্সি ট্রেডার”, কিন্তু সত্যি বলতে আপনার করতে ইচ্ছা করবে না , কারণ এটা আপনার কাছে অন্য যেকোন জবের মতই লাগবে।

 

আমার মনে হয় আপনার এই “একজন ট্রেডারের মনের ভিতরের ভ্রমণ” আনন্দদায়ক হয়েছে এবং হয়তো আপনার নিজের কোন পয়েন্ট এখানে খুজে পেয়েছেন।

 

মনে রাখবেন , শুধুমাত্র ৫% ট্রেডারই টিকে থাকতে পারবে। এটার কারণ যোগ্যতা নয়, টিকে থাকার শক্তি। টিকিয়া থাকাটাই বড় সার্থকতা। অতিকায় হস্তি লোপ পেয়েছে, কিন্তু ক্ষুদ্র তেলাপোকা এখন টিকিয়া আছে।

 

তারাই লুজার হয় যারা খুব দ্রুত বড়লোক (get rich quick) হতে চেয়েছে।

 

আমি খুশিমনে বলতে পারি যে ‘get rich quick’ এই আশায় আমিও ট্রেডিং শুরু করেছিলাম , কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি ট্রেডিং হচ্ছে ‘get rich slow’।

 

আপনি যদি ফরেক্স ছেড়ে দিতে চান তবে আপনাকে একটা উপদেশ দিতে পারি –

 

আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস করুন – “আপনি কত বছর স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেন যদি জানতেন শেষে আপনার জন্য বছরে মিলিয়ন ডলার বেতনের একটা চাকরী অপেক্ষা করছে?”

 

ফরেক্স ট্রেডে লস হওয়ার কারন সমূহ

ফরেক্স ট্রেডে লস হওয়ার কারন:

 

আমরা একথা অনেক শুনেছি যে, ফরেক্স যারা শুরু করেন তাদের শতকরা ৯৫ জনই তাদের প্রথম একাউন্ট হারান অর্থাত শুন্য হয়ে যান। কিন্তু কেন? কারন তারা ফরেক্সের বেসিক রুলস গুলো মেনে চলে না। দেখা যাক কি কি কারন ট্রেডাররা ফরেক্সে লস করে।

 

• অভিজ্ঞতার অভাবঃ প্রথম দৃষ্টিতে ফরেক্স কিন্তু সহজ মনে হয়। কারন যেহুতু লাভ অথবা লস, আন্দাজে ট্রেড করে অনেকেই প্রচুর লাভ করে ফেলে। তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে রিয়েল ট্রেডিং করবে। কিন্তু আপনি লস না করলে কখন বুঝতে পারবেন না যে কিভাবে আপনি ঐ সকল অবস্থাগুলো পরে মোকাবেলা করবেন। সেজন্য আপনাকে অনেকদিন সিরিয়াসলি ডেমোতে ট্রেড করতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ ডেমোতে এত সময় ট্রেড করতে চায় না। সে ক্ষেত্রে সেন্ট অ্যাকাউন্টে ট্রেড করতে পারেন। ধরে রাখুন ফরেক্সে আপনার প্রথম ২টি ডিপোজিট আপনি হারাবেন। বুঝে ট্রেড করার চেষ্টা করুন। দেখবেন তখন ট্রেডিং অনেকটা সহজ লাগবে।

• সিগন্যালের ওপর নির্ভরশীলতাঃ অধিকাংশ ট্রেডার সিগন্যালের ওপর নির্ভরশীল। বন্ধুদের কথায় বা অপরিচিত লোকের কথায় ট্রেড করে। নিজে কোন অ্যানালাইসিস না করে কেউ বাই করতে বললেই বাই করে, সেল করতে বললে সেল করে। পরিনামে লস। আবার কেউ কেউ তো $১০০-$২০০ দিয়ে সিগন্যালও কিনে থাকেন। কিন্তু একটা কথা ভাবুন, যদি সিগন্যাল গুলো আসলেই সবসময় পারফেক্ট হত, তাহলে কেন সিগন্যাল প্রভাইডার তা বিক্রয় করছে? সে নিজে ট্রেড করেই তো বিল গেটস হয়ে যেতে পারে। সুতরাং, কারো কোন কথা শুনে বা চার্ট দেখে ঝোঁকের বসে ট্রেড করবেন না। নিজে যা বুঝেন, তা দিয়ে ট্রেড করার চেষ্টা করুন। আরও শেখার চেষ্টা করুন। অন্যদের জিজ্ঞেস করুন।

• উদ্দেশবিহীন ট্রেডিং করাঃ অধিকাংশ ট্রেডার জানে না যে বাই করতে হবে না সেল করতে হবে। প্রাইস একটু বেড়ে গেলেই তারা মনে করে যে এটা আবার কমবে, তখন সেল ট্রেড দিয়ে বসে। এভাবে ট্রেড করলে আজীবনই লস খাবেন। মার্কেট অ্যানালাইসিস করতে চেষ্টা করুন। বিডিপিপস ফরেক্স স্কুলের ইন্ডিকেটর সেকশনে দেখুন কিছু বেসিক ইন্ডিকেটর সম্পর্কে দেয়া আছে। এগুলো এবং সাথে অন্য ইন্ডিকেটর নিয়ে গবেষনা করুন। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের কিছু কিছু জিনিস শেখার চেষ্টা করুন। আস্তে আস্তে সব কিছুই আপনার কাছে সহজ হয়ে যাবে।

• বড় রিস্ক নিয়ে ট্রেড করাঃ অধিকাংশ মানুষ ফরেক্সকে মানি মেকিং মেশিন মনে করে। মনে করে ফরেক্সে ১ দিনেই ব্যালেন্স দ্বিগুণ করা যায়। অধিকাংশ ট্রেডার তার ক্যাপিটালের অনুপাতে অনেক বড় রিস্ক নিয়ে ট্রেড করে। দেখা যায় অ্যাকাউন্টে $১০০ আছে, কিন্তু $১ পিপস ভ্যালুর ট্রেড ওপেন করে বসে আছে। ১০০ পিপস আপনার বিপরিতে মুভ করলেই আপনি ফকির হয়ে যাবেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত নিন, মানি ম্যানেজমেন্ট করতে শুরু করুন।

• ট্রেডিং স্ট্রাটেজি না থাকাঃ আপনার অবশ্যই একটি ট্রেডিং স্ট্রাটেজি থাকা উচিত। আপনি কিভাবে ট্রেড করবেন, কত পিপস স্টপ লস বা টেক প্রফিট ব্যবহার করবেন, কত ভলিউমে ট্রেড করবেন সবকিছু আগে থেকেই সেট করে রাখা উচিত। এবং আপনার সব ট্রেডেই তা ফলো করা উচিত। তা নাহলে দেখা যাবে একটি ট্রেডে আপনার প্রফিট ৫০ পিপসে $৫, আরেকটি বড় রিস্ক নিয়ে করা ট্রেডে লস ৫০ পিপসে $৫০. তাই সবার প্রথমে আপনার ট্রেডিং স্ট্রাটেজি তৈরি করুন। অন্যদের ট্রেডিং স্ট্রাটেজি দেখুন, তারপর যেটা ভাল লাগে, পরিবর্তন করে নিজের পছন্দমত নিজের ট্রেডিং সিস্টেম তৈরি করুন।

• নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস থাকাঃ অনেক ট্রেডার অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে থাকে। তারা মনে করে প্রাইস এখন বাড়বে বা কমবে এবং সেই অনুসারে ট্রেড করে কোন প্রকার অ্যানালাইসিস ছাড়া। কিন্তু মানুষই মানুষের শত্রু। নিজেকে বিশ্বাস করবেন না। মার্কেট কি বলে তা দেখুন।

লস ঠেকাতে এই কথাগুলো মনে রাখবেনঃ

• লোভ করবেন না

• ইমোশনাল হবেন না

• নিজের মনগড়া সিদ্ধান্তে ট্রেড করবেন না

• মানি ম্যানেজমেন্ট ফলো করে ট্রেড করবেন

• ট্রেডিং স্ট্রাটেজি মেনে চলবেন

• অ্যানালাইসিস ছাড়া কোন ট্রেড করবেন না

মানি ম্যানেজমেন্ট কি?

চলুন এবার আমরা মানি ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলাচনা করি। মানি ম্যানেজমেন্ট হল এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে ফরেক্স ট্রেডাররা তাদের অ্যাকাউন্ট ম্যানেজ করে থাকে। ফরেক্স ট্রেডারদের জন্য মানি ম্যানেজমেন্ট খুবই জরুরী। একটি ভাল মানি ম্যানেজমেন্ট আপনার অ্যাকাউন্টকে সর্বদা লস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। একটি ভাল মানি ম্যানেজমেন্ট ফলো করলে আপনার ক্যাপিটাল হারানোর সম্ভাবনা খুব কম।

 

 

 

ভাল মানি ম্যানেজমেন্টের কিছু নিয়ম রয়েছেঃ

 

১. অ্যাকাউন্টের ছোট পার্সেনটেজ নিয়ে রিস্ক নিনঃ

 

অ্যাকাউন্টের ছোট পার্সেনটেজ রিস্ক নেয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ? এর কারন হচ্ছে আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্ট টিকিয়ে রাখতে হবে। প্রথমে আপনার অ্যাকাউন্ট টিকিয়ে রাখতে হবে, তারপর প্রফিটের কথা ভাবতে হবে।

ভালো ট্রেডার তারাই যারা তাদের অ্যাকাউন্ট টিকিয়ে রাখতে পারে এবং এ ব্যাপারে সচেতন।

যদি আপনি কম রিস্ক নিয়ে ট্রেড করেন তবে কোন ট্রেডে আপনার লস অনেক বেশী হলেও চাইলে আপনি আপনার ট্রেডটিকে হোল্ড করতে পারবেন।

 

ট্রেডে আপনার অ্যাকাউন্টের মোট পার্সেনটেজের কম এবং বেশী রিস্ক নিয়ে ট্রেডের একটি উদাহরন নিচে দেখা যাক। দেখুন টানা ১০টি ট্রেডে লস আপনার অ্যাকাউন্টের কতটুকু ক্ষতি করতে পারে।

 

 

স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে ২% রিস্ক এবং ১০% রিস্কের মধ্যে পার্থক্য। কেউ সহজে টানা ১০টি ট্রেড হারেনা। যদিও আপনি সবচেয়ে খারাপ ট্রেড করেন, তবুও ২% রিস্ক নিলে আপনি ১০টি ট্রেডে হারলে আপনি আপনার ক্যাপিটালের ১৭% হারাবেন, যেখানে প্রতি ট্রেডে ১০% রিস্ক নিলে আপনি ১০টি ট্রেড হারলে আপনি আপনার ক্যাপিটালের ৬০% এর বেশী হারাবেন। সুতরাং, বুঝতে পারছেন মানি ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব। আপনি যদি ঠিকভাবে মানি ম্যানেজমেন্ট করতে না পারেন তবে আপনি ব্যাপক লসের সম্মুখিন হতে পারেন।

 

 

. হারান ক্যাপিটাল পুনরুদ্ধার করা কঠিনঃ

 

কেউ যদি তার অ্যাকাউন্টের কিছু অংশ হারায়, তাহলে তা পুনরুদ্ধার করা কতটা কঠিন?

 

 

আপনি যদি আপনার অ্যাকাউন্টের ৫০% হারান, তাহলে আপনাকে লস রিকভার করতে আপনার নতুন ব্যালেন্সের ১০০% লাভ করতে হবে। আর যদি ৭৫% হারান, তবে নতুন ব্যালেন্সের ৩০০% প্রফিট করতে হবে শুধুমাত্র পূর্বের লস রিকভার করার জন্য। তাই আপনি যদি একবার বিরাট লস করে তারপর সেই লস রিকভার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তবে প্রফিট করবে কে?

 

এখানেই চ্যালেঞ্জ। চেষ্টা করে দেখুন ডেমো অ্যাকাউন্টে ৩০০% অথবা আপনার রিয়েল অ্যাকাউন্টে অন্তত ১০০% প্রফিট করতে পারেন কিনা। এটা অতটা সহজ হবেনা। মানি ম্যানেজমেন্ট এই জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

৩. ট্রেড করার আগে রিস্কঃরিওয়ার্ড রেশিও হিসাব করুনঃ

 

যখন একটি ট্রেডে লস করার সম্ভবনা প্রফিট করার থেকে বেশী, তখন ট্রেড করা থেকে বিরত থাকুন। সবসময় ট্রেড করতে হবে এমন কোন কথা নেই।

 

উদাহরনসরূপঃ

১. ৪০ পিপস লস vs ৩০ পিপস প্রফিট

২. ২০ পিপস লস vs ২০ পিপস প্রফিট

 

২টি উদাহরনই বাজে রিস্ক ম্যানেজমেন্টের উদাহরন।

 

একটি ট্রেড ওপেন করার আগে এটা নিশ্চিত করুন যে রিস্ক:রিওয়ার্ড রেশিও অন্তত ১:২ (১:৩ রেশিও বা এর থেকে বেশী ভাল)।

এর মানে হচ্ছে আপনার এমন একটি ট্রেডই ওপেন করা উচিত যেটাতে আপনার লস করার সম্ভবনা থেকে লাভের সম্ভবনা ততগুন হবে। যেমনঃ আপনি ৩০ পিপস লস করার পরিপেক্ষিতে ১০০ পিপস লাভ করতে পারবেন এমন ট্রেডে এন্ট্রি করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

 

আপনি যদি মানি ম্যানেজমেন্টের এই রুলসটি সঠিকভাবে মেনে চলেন, তবে তা পরবর্তীতে আপনাকে সাফল্য পেতে এবং স্ট্যাবল প্রফিট পেতে সাহায্য করবে।

 

 

রিস্ক:রিওয়ার্ড রেশিওর নিচের চার্টটি দেখুন। এখানে ১:৩ রিস্ক:রিওয়ার্ড রেশিও নিয়ে ১০টি ট্রেড করা হয়েছে।

একজন যখন কোন ট্রেডে লস করে, তখন সে $১০০ ডলার হারিয়েছে। কিন্তু তার প্রতিটি প্রফিটেবল ট্রেডে সে $৩০০ ডলার প্রফিট করেছে।

 

সুতরাং, দেখা যাচ্ছে কোন ট্রেডার যদি ১:৩ রিস্ক:রিওয়ার্ড রেশিও নিয়ে যদি ৫০% ট্রেডেও সফল হয়, তবুও সে ভাল পরিমান লাভ করতে পারে।

 

স্ক্যাল্পিং কি ?

.

 

আপনি হয়তো অনেক জায়গায় স্ক্যাল্পিং শব্দটি শুনেছেন।ফরেক্স জগতে বেশিরভাগ ট্রেডারই স্কাল্পিং করে থাকেন।   মূলত ছোট ট্রেড গুলোই হল স্ক্যাল্পিং। কয়েক মিনিটের ছোট ট্রেড গুলোকে স্ক্যাল্পিং বলা হয়। এই ট্রেড গুলো হতে পারে ১-২০ পিপস। আভিধানিক ভাবে ২০ পিপসের ওপরে প্রফিট হলে তাকে স্ক্যাল্পিং বলা যাবে না। সেটা সাধারন ট্রেড হয়ে যায়।

মার্কেট সবসময়ই ওঠা-নামা করে। আপনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে কিছু পিপস লুফে নিতে পারেন। কিন্তু স্ক্যাল্পিং কিন্তু ঝুকিপূর্ণ। অনেকেই দেখা যায় কিছু না বুঝে রিস্ক নিয়ে স্ক্যাল্পিং করে। কিন্তু স্ক্যাল্পিংয়েও অ্যানালাইসিস করা উচিত। কোন ট্রেডেই অ্যানালাইসিস ছাড়া প্রবেশ করা উচিত নয়। স্ক্যাল্পিং করার সময় ট্রেন্ডের দিকে ট্রেড দেয়াই ভাল। সেক্ষেত্রে ট্রেডে লাভ করার সম্ভবনাটা তুলনামুলক ভাবে বেশি থাকে।

স্ক্যাল্পিং যেহুতু কম সময়ে করা হয়, তাই আমাদের ট্রেড করা উচিত কম সময়ের টাইমফ্রেমে। স্ক্যাল্পিং এর অনেক রুলস আছে। আপনি স্ক্যাল্পিং ট্রেড করার সময় M1, M5, M15 টাইমফ্রেম অনুসরন করতে পারেন।  সেক্ষেত্র বড় টাইমফ্রেম দেখে ট্রেন্ড নির্নয় করে ট্রেন্ড ফলো করে স্কাল্পিং করা উচিত।

একটা কথা মনে রাখতে হবে, ছোট টাইম ফ্রেমে যদি আপনি ইন্ডিকেটর ফলো করেন তাহলে বড় টাইম ফ্রেমের মতো ভাল ফলাফল নাও পেতে পারেন।  সেক্ষেত্র দুটো কাজ করতে পারেন। এক. কাছাকাছি স্টপ লস দেয়া , যেন লস হলে ছোট ছোট লস হয়। দুই. বড় টাইম ফ্রেমে ট্রেন্ড দেখে সেই টাইম ফ্রেমের ট্রেন্ড অনুযায়ী ট্রেন্ডে থেকে স্কাল্পিং করা।

কিছু কিছু ব্রোকার আছে যারা স্ক্যাল্পিং সাপোর্ট করে না। আবার অনেক ব্রোকারের স্ক্যাল্পিং এ ২ মিনিট রুলস আছে। ২ মিনিটের আগে ট্রেড ক্লোজ করলে তা বাতিল করে দেয়ার অধিকার ব্রোকার রাখে। তাই আপনি যে ব্রোকারের সাথে ট্রেড করছেন, সেই ব্রোকারের স্ক্যাল্পিং সম্পর্কে কোন রুলস আছে কিনা আগে জেনে নিন

মনে রাখবেন, স্ক্যাল্পিং যেমন সুবিধাজনক তেমনি বিপদজনক। তাই স্কাল্পিং করলেও ছোট সাইজ অবশ্যই ছোট রাখবেন এবং কাছাকাছি স্টপ লস দিয়ে ট্রেড করবেন।

বেশিরভাগ ট্রেডারই স্টপলস দিতে চায় না। তাই সারাদিন স্কাল্পিং করে যা প্রফিট করে দিনের শেষে একটা লস ট্রেড ঝুলিয়ে রেখে তার চেয়ে বেশি লস করে দেয়। আপনি যদি ঐ বেশিরভাগ ট্রেডারের ব্যতিক্রম হতে না পারেন তাহলে ফরেক্স ট্রেডে বেশিদিন টিকতে পারবেন না।

কোন প্রশ্ন থাকলে বা কোন সহযোগতার দরকার হলে কমেন্ট করতে পারেন বা আমাদের ফেসবুক পেজে ম্যাসেজ করতে পারেন।

আমার এই লেখা যদি আপনার সামান্যও ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করতে ভুলবেন না। এতে পরবর্তী পোস্ট লিখতে উতসাহ যোগাবে।



কিভাবে নিউজ বুঝবেন?

ফরেক্স রোবট কি?

ফরেক্স রিবেট: আয় বৃদ্ধির এক অনন্য কৌশল



 

ডিপোজিট এবং উইথড্র

আমরা বাংলাদেশীরা একটা ব্যাপার নিয়ে অনেক ভুক্তভোগী। আমাদের দেশে পেপাল নেই। তাই আমরা দেশে অনলাইন থেকে সহজে টাকা আনতে পারি না। বাংলাদেশ থেকে ব্যাংক ট্রান্সফার করে বাইরে টাকা পাঠানোর অনুমতি নেই। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী আপনি দেশ থেকে টাকা ডিপোজিট করতে পারবেন না। কিভাবে ফরেক্সে ডিপোজিট করবেন? আপনি ecurrency এর মাধ্যমে ফরেক্সে ডিপোজিট করতে পারেন। পেপাল এর মত অনেক অনলাইন পেমেন্ট প্রসেসর রয়েছে। যেমনঃ Liberty Reserve (LR), AlertPay (AP), MoneyBookers (MB) ইত্যাদি। আপনি এসবের মাধ্যমে অনলাইনে ফরেক্সে ডিপোজিট করে ট্রেড করতে পারেন। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারকার্ড/ভিসা কার্ড দিয়েও ডিপোজিট করতে পারবেন।

আপনি আপনার ফ্রি-ল্যান্সিং বা অনলাইন থেকে আয় করা ডলার ফরেক্সে ডিপোজিট/ইনভেস্ট করতে পারেন।

 

ডিপোজিট করার জন্য কোনটি ভাল?

InstaWallet:  এটা ইন্স্টা ফরেক্স এর নিজস্ব কারেন্সি সিস্টেম।   এটার মাধ্যমে তা্তক্ষনিক ডিপোজিট  বা উইথড্র করা যায়। কোন ভ্যাট কাটেনা। ইন্সটাওয়ালেট আপনি ইন্সটা ফরেক্সের কোন ট্রেডার বা বাংলাদেশে ইন্সটা ফরেক্সের যেসকল প্রতিনিধি আছে তাদের কাছ থেকে কিনতে বা বেচতে পারবেন। ইন্সটাওয়ালেট একাউন্ট টি মুল ট্রেডিং একাউন্ট থেকে আলাদা। আপনার যখন্ই কিছু প্রফিট হল তখনই সেটা উঠিয়ে রেখে দিতে পারবেন। মূল একাউন্টটি কোন কারনে জিরো হলেও ওয়ালেটটির কোন ক্ষতি হবেনা। ওয়ালেট থেকে আপনার উঠানো ডলার দিয়ে আপনি আবার নতুন করে ট্রেড শুরু করতে পারবেন।

Liberty Reserve: ফরেক্সে ডিপোজিট করার জন্য লিবার্টি রিসার্ভ সবচেয়ে ভাল। কারন প্রায় সব ব্রোকার লিবার্টি রিসার্ভ সাপোর্ট করে। আপনার পছন্দের অধিকাংশ ব্রোকারে আপনি লিবার্টি রিসার্ভ দিয়ে ডিপোজিট করতে পারবেন। লিবার্টি রিসার্ভ সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে উইথড্র করা যায় না। তাই আপনি যখন আপনার প্রফিট উইথড্র করতে চাবেন, অনলাইনে অনেক এক্সচেঞ্জার সাইট আছে যারা আপনাকে লিবার্টি রিসার্ভ এক্সচেঞ্জ করে আপনাকে ব্যাংক ট্রান্সফার করে দিবে।

MoneyBookers: ফরেক্সে ডিপোজিট করার জন্য মানিবুকারস ভাল একটি পেমেন্ট প্রসেসর। অনেক ব্রোকার মানিবুকারস সাপোর্ট করে। কিন্তু মানিবুকারসের আলাদা একটি সুবিধা রয়েছে। আপনি আপনার মানিবুকারস থেকে সরাসরি ব্যাংকে উইথড্র করতে পারবেন। আপনি আপনার ব্যাংকের Swift Code এবং অ্যাকাউন্ট নং দিয়ে উইথড্র চাইলে কয়েকদিনের মধ্যে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তারা টাকা পাঠিয়ে দেবে। এমনকি আপনি আপনার ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডেও মানিবুকারস থেকে উইথড্র করতে পারবেন।

Alertpay: অনেক ব্রোকার অ্যালার্ট-পে সাপোর্ট করে। তবে তা লিবার্টি রিসার্ভ এবং মানিবুকারসের মত এতো বেশী নয়। মানিবুকারসের মতোঅ্যালার্ট-পে থেকেও আপনি সরাসরি ব্যাংকে উইথড্র করতে পারবেন। এছাড়া অ্যালার্ট-পের আলাদা ডেবিট মাস্টারকার্ড রয়েছে। আপনি ২০$ এর বিনিময়ে তা সংগ্রহ করে সেই মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে ATM Booth থেকেই টাকা উইথড্র করতে পারবেন।

Mastercard: অনেক ব্রোকার তাদের ট্রেডারদের মাস্টারকার্ড প্রদান করে থাকে। সেই মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে আপনি ATM Booth থেকেই টাকা উইথড্র করে নিতে পারবেন।

ফরেক্স ব্রোকারগুলোর নিয়ম হল আপনি যে পেমেন্ট প্রসেসর দিয়ে ডিপোজিট করবেন, আপনাকে সেই পেমেন্ট প্রসেসর এবং সেই অ্যাকাউন্টেই উইথড্র করতে হবে। কিন্তু কিছু কিছু ব্রোকার যে মাধ্যম দিয়েই ডিপোজিট করা হোক না কেন, ব্যাংক বা তাদের মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে উইথড্র করতে দেয়। যেমন ইন্সটাফরেক্সে আপনি যে পেমেন্ট প্রসেসর দিয়েই ডিপোজিট করুন, তাদের মাস্টারকার্ড দিয়ে উইথড্র করতে পারবেন।