কমোডিটি ট্রেডিং – ব্রোকার যেভাবে আমাদের কমোডিটি কেনাবেচা করতে সহায়তা করে

আপনি অনলাইনে কমোডিটি কিনতে চাইলে আপনাকে কোন একটি ব্রোকারের সহায়তা নিতে হবে যেটি কোন একটি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সদস্য। এরকম অসংখ্য ব্রোকার রয়েছে। আজকাল ফরেক্স ব্রোকাররাও কমোডিটি ট্রেড করার সুবিধা দেয়, কেননা ট্রেডাররা স্মার্ট হচ্ছে। তারা এখন আর “All eggs in one basket” নীতিতে বিশ্বাসী না। যেহেতু, হাতের নাগালেই ট্রেড করার মত বিভিন্ন অপশন রয়েছে, তাই কোন ট্রেড ওপেন করার আগে তারা দেখতে চান, এই মুহূর্তে কোনটি ট্রেড করলে লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। কোন কারেন্সি, নাকি কোন কমোডিটি? প্রশ্ন হচ্ছে, ফরেক্স ব্রোকাররা কিভাবে কমোডিটি কেনাবেচা করতে সহায়তা করে?     যেসব ফরেক্স ব্রোকাররা কমোডিটি ট্রেড করার সুবিধা  দেয়, তারা সাধারণত কোন না কোন কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সদস্য। এক্ষেত্রে, ব্রোকারের কাজ হল কমোডিটি বায়ার ও সেলারের মধ্যে মাধ্যম হিসেবে কাজ করা।

ব্রোকার চাইলে নিজেও কমোডিটি বাই সেল করতে পারে।   এখন, আপনি যখন কোন কমোডিটি বাই করেন, যেমন ধরুন, স্বর্ণ কিনলেন, তখন আপনি তা ব্রোকার থেকে কিনলেন। এক্ষেত্রে, আপনি হচ্ছেন বায়ার আর ব্রোকার হচ্ছে সেলার। এখন, আপনার আর ব্রোকারের মধ্যে কমোডিটি বেচাকেনা কি শর্তে হচ্ছে, তা ব্রোকারের “Terms and Conditions” পড়লে বুঝতে পারবেন। বিভিন্ন ব্রোকারের নিয়ম বিভিন্ন রকম।   যেমন ধরুন, সাধারণ নিয়ম হচ্ছে, আপনি কোন কমোডিটি কেনার সময়েই ব্রোকারের সাথে আপনার চুক্তি হয়ে গেল যে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের চুক্তিতে একটি নির্দিষ্ট প্রাইসে আপনি কমোডিটি কিনছেন। ধরুন, এই সময়টি তিন মাস।   তাহলে, তিন মাস পরে কি হবে? তিন মাস পরে আপনি ব্রোকারকে পুরো টাকা দিবেন আর ব্রোকার আপনাকে আপনার কমোডিটি দিয়ে দিবে। প্রশ্ন হচ্ছে, ব্রোকার এই কমোডিটি কোথা থেকে দিবে?   সহজ উত্তর হচ্ছে, ব্রোকার আরেকজনের থেকে কিনে আপনাকে দিবে।

ব্রোকারের কাজই হচ্ছে বাই আর সেল করা। আপনার থেকে যা কিনবে, তা আরেকজনের কাছে বিক্রি করবে, আর আরেকজনের কাছ থেকে যা কিনবে, তা আপনার কাছে বিক্রি করবে। যেহেতু, প্রত্যেকটি ব্রোকারেরই অসংখ্য ক্লায়েন্ট থাকে, তাই ব্রোকার সহজেই আপনার কাছে কমোডিটি বিক্রি করার চুক্তি করলে আরেকজনের কাছ থেকে কমোডিটি কেনার চুক্তি করবে।   এখন, তিন মাস পরে আপনি যে ব্রোকারকে পুরো টাকা দিবেন, তার নিশ্চয়তা কি? আর ব্রোকার যার থেকে কমোডিটি কিনবে, সেও যে সময়মত কমোডিটি ডেলিভারী করবে, তারও বা নিশ্চয়তা কি? তাই, ব্রোকার উভয়ের থেকেই একটি সিকিউরিটি ডিপোজিট রাখে। এটা সাধারণত যত টাকার কমোডিটি কিনবেন, তার উপর নির্ভর করে। যেমন, শতকরা ৫%। এটাকেই মার্জিন বলে।   কিন্তু, এই সিকিউরিটি ডিপোজিট বা মার্জিন নেবার পরেও কিন্তু ব্রোকার ঝুঁকিতে আছে।

জানতে চান, কিভাবে?   ধরুন, প্রতি আউন্স গোল্ড ১০০০ ডলার, এই রেটে আপনি ১ আউন্স গোল্ড কিনলেন ব্রোকার থেকে। শর্ত হচ্ছে, ব্রোকার এই গোল্ড ডেলিভারি দিবে ৩ মাস পরে। এখন, ৩ মাস পরে গোল্ডের দাম যাই থাকুক না কেন, ব্রোকার আপনাকে এই ১ আউন্স গোল্ড ডেলিভারি দিতে বাধ্য, আর আপনি বাধ্য ব্রোকারকে ১০০০ ডলার দিতে। ধরুন, ১ মাস পরে গোল্ডের দাম কমে দাঁড়ালো আউন্স প্রতি ৮০০ ডলারে। অর্থাৎ, আউন্সপ্রতি দাম ২০০ ডলার কমে গিয়েছে।   এখন, ১০০০ ডলারের ৫% হিসেবে আপনি মার্জিন বা সিকিউরিটি ডিপোজিট দিয়েছেন মাত্র ৫০ ডলার। চুক্তি করেছেন, বাকিটা গোল্ড ডেলিভারির সময় নিবেন। উন্নত বিশ্বে, এই চুক্তির দাম আছে।

একবার চুক্তি করার পরে আপনি গোল্ড এই দামে নিতে বাধ্য। যদি, তিন মাস পরে গোল্ডের দাম কমে আউন্সপ্রতি ৫০০ ডলারও হয়ে যায়, তারপরেও আপনাকে ৫০০ ডলার বেশি দিয়ে হলেও ১০০০ ডলারেই নিতে হবে। ৫০ ডলার গেলে যাক, ব্রোকার থেকে গোল্ড নিবই না। এমনটা ভেবে যে এড়িয়ে যাবেন, তারও কোন উপায় নেই। ব্রোকার টাকা না পেলে মামলা করে দিবে আপনার নামে। আদালতে গেলে আপনি টাকা দিতেই হবে, তা নাহলে জেলে যেতে হবে।   কিন্তু, যদি অনলাইনে এই গোল্ড কেনার চুক্তি করে থাকেন, অনেক দূরের কোন দেশের ব্রোকারের সাথে, তাহলে? ব্রোকার আপনাকে পাবে কোথায়? আপনি তো চাইলেই উধাও হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ব্রোকারকে তো ঠিকই এই ১ আউন্স গোল্ডের জন্য কাউকে না কাউকে ১০০০ ডলার দিতে হবে। তখন?  

ব্রোকারদের বোকা ভাবার কোন কারন নেই। বরং, আমার আপনার থেকে অনেকগুন চালাক লোক আছে ব্রোকারে। তারাও এমন সিস্টেম বের করে রেখেছে যে, ব্রোকার এরকম কোন ঝুঁকিতে পড়বে না। সেটা কিভাবে?   সহজ। আপনি যখনই ব্রোকারের সাথে গোল্ড কেনার অর্ডার দিচ্ছেন, তখনই তার মালিক আপনি। সিকিউরিটি ফি বা মার্জিন হিসেবে গোল্ডের পুরো দামের একটি অংশ ব্রোকারকে দিয়েছেন, বাকিটা দিবেন ডেলিভারির পরে। এখন,  যদি গোল্ডের দাম  আউন্সপ্রতি ১০০ ডলার বাড়ে, তাহলে আপনি যে এক আউন্স গোল্ডের মালিক, তার দাম এখন আর ১০০০ ডলার না, ১১০০ ডলার। ব্রোকারের কাছে চাইলেই আপনি যেকোন সময় এই কেনা গোল্ড আবার বিক্রি করে দিতে পারবেন ডেলিভারির আগেই।

সেক্ষেত্রে, ব্রোকার তার ফি কেটে রেখে আপনাকে আপনার লাভ বুঝিয়ে দিবে। অর্থাৎ, আপনার অ্যাকাউন্ট এ ৯৮ ডলার যোগ হয়ে যাবে, সাথে মার্জিন হিসেবে যে টাকা কেটে রাখা হয়েছিল, তাও ফেরত দেয়া হবে। (ধরলাম, ব্রোকারের ফি হচ্ছে আউন্সপ্রতি ২ ডলার, ১০০ ডলার-২ ডলার=৯৮ ডলার)। কিন্তু, ব্রোকারে যে আরেকজনের থেকে আপনার জন্য গোল্ড কেনার কথা? চিন্তার কারন নেই, ব্রোকার আরেকজনের সাথে গোল্ড বেচার চুক্তি করে নিবে বর্তমান প্রাইস অনুসারে। সেক্ষেত্রে, এখন যে ব্রোকার থেকে গোল্ড কিনবে, সে কিনবে প্রতি আউন্স ১১০০ ডলার দরে, আর ব্রোকার তো আগেই ১০০০ ডলার দরে গোল্ড কিনার চুক্তি করে রেখেছে।

Commodity trading

আর যদি দাম কমে? ধরুন, প্রতি আউন্স গোল্ডের মূল্য ৫০ ডলার কমে গেলো। আপনি মার্জিন দিয়েছেনও ৫০ ডলার। এখন যদি আরো কমে যায়, তাহলে তো আপনি পরে ওই গোল্ড আর না নিলে ব্রোকার বিপদে পড়বে। তাই, চুক্তিতে শর্ত দেওয়া থাকে যে এরকম ক্ষেত্রে ব্রোকার সাথে সাথেই বা তারও আগে আপনাকে ইনফর্ম করবে আরো ডিপোজিট দেওয়ার জন্য। এজন্যেই অ্যাকাউন্টে মার্জিন এর বাইরেও অতিরিক্ত অর্থ রাখতে হয়।

ব্রোকার সাথে কমোডিটি কেনার সময়েই আপনি চুক্তি করেছেন যে, কোন কারনে যদি দাম কমে যায় তাহলে আপনি আরো ডিপোজিট মানি দিবেন যাতে কোন অবস্থাতেই আপনার টোটাল ডিপোজিট মানি থেকে টোটাল লস বেশি না হয়। এমনটা হলেই, ব্রোকার সঙ্গে সঙ্গে আপনার জন্য বেশি দামে কেনা গোল্ড আবার বাজারে বাজারমূল্যে (কম দামে) বিক্রি করে দিবে, মানে আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে। ব্রোকার তখন হিসাব করবে তার লস কত হল আর আপনি ডিপোজিট মানি মোট কত দিয়েছেন। আপনার দেয়া মোট ডিপোজিট মানি থেকে ব্রোকার তার লস আর ফি কেটে রেখে বাকি টাকা আপনাকে ফেরত দিবে।

এখন, ব্রোকারের লস আর ফি মিলিয়ে যদি সর্বমোট ১০০ ডলার হয় আর আপনার দেয়া ডিপোজিট মানিও ১০০ ডলারই হয়, তাহলে আপনি লস+ফি কেটে নেয়ার পরে কিছুই ফেরত পাবেন না। আর যেহেতু ব্রোকার সবসময়েই তার লস আপনার ডিপোজিট মানি থেকে বেশি হবার আগেই ট্রেড ক্লোজ করে দিবে, তাই ব্রোকারেরও লস হবার সম্ভাবনা নেই। (কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ব্রোকারও লসের সম্মুক্ষীন হতে পারে, সেটা আরেকদিন আলোচনা করব)   কিছু কিছু ব্রোকার কমোডিটির ফিউচার কন্ট্রাকের ডেলিভারির তারিখের দিনে পন্য ডেলিভারি করে দেয় অথবা আপনাকে সুযোগ দেয় পন্য ডেলিভারি না নিয়ে লাভ বা লস যেটা হয়েছে, সেই টাকাটা নিয়ে নিতে। আর অনেক ব্রোকার তাদের ক্লায়েন্টদেরকে পন্য ডেলিভারীর বদলে ওই দিন ওই কমোডিটির যে মূল্য সেই অনুসারে লাভ বা লস বুঝিয়ে দেয়। ক্লায়েন্ট তখন ওই টাকা দিয়ে চাইলেই ওই পরিমান কমোডিটি বাজার থেকে কিনে নিতে পারে।

অনলাইন ব্রোকারগুলোর পক্ষে যেহেতু বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদেরকে পন্য ডেলিভারী দেওয়া সম্ভন হয় না, তাই তারা দ্বিতীয় পন্থাতেই কাজ করে। তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ফিউচার কন্ট্রাক্টের মেয়াদ অনেক দীর্ঘ থাকে। ট্রেডাররা তাদের সুবিধামত তার আগেই ট্রেড ক্লোজ করে লাভ বা লস বুঝে নেয়।   তাহলে বুঝতে পারলন, ব্রোকারদের মাধ্যমে কিভাবে আমরা কমোডিটি বেচাকেনা করে থাকি। অনেকে জানেন না, আসলে কিভাবে আমরা ফরেক্স ব্রোকারদের সাথে কারেন্সি বেচাকেনা করে থাকি।

আশা করি, এখন আপনি দুটোই বুঝতে পারেছেন। কমোডিটি ট্রেড করতে হলে আপনাকে আলাদা করে টেকনিক্যাল বা ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস শিখতে হবে না, এটা ফরেক্স ট্রেডিং এর মতই। তবে, বেশ কিছু বেসিক জিনিস জানা বেশ জরুরী। তা না হলে, আপনি সঠিকভাবে মানি ম্যানেজমেন্ট করতে সম্যসায় পড়বেন এবং ভুল ট্রেড ওপেন করবেন। এই নিয়েই লিখব পরবর্তীতে। সাথে আরো থাকবে কমোডিটি ট্রেডিং এর বিভিন্ন টিপস।

কখন ট্রেড করবেন – ফরেক্স মার্কেট সেশন – Forex Market

একদিন আমার এক ফ্রেন্ড রাতুল আমাকে প্রশ্ন করলো মাঝে মাঝে দেখি মার্কেটে প্রাইস অনেক বাড়ে-কমে। আবার অনেক সময় দেখি কোনো মুভমেন্টই হয়না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কম্পিউটারের সামনে এত সময় বসে থাকতে বোরিং লাগে। যদি জানতাম কখন কখন বড় মুভমেন্ট হবে, তাহলে শুধু তখনই ট্রেড করতাম, আর বাকি সময় অন্য কাজ করা যেত কিংবা মুভি দেখা যেত।

আমি বললাম ফরেক্স মার্কেট সপ্তাহে ৫ দিন ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। মার্কেট সবসময় ওপেন থাকে তার মানে এই নয় যে আমাদের সবসময় ট্রেড করা উচিত। কারন মার্কেট সবসময় সক্রিয় থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় মার্কেটে কোন নড়াচড়া নেই অর্থাৎ ভোলাটিলিটি নেই। আমরা ফরেক্সে প্রফিট করতে পারি যখন প্রাইস বাড়ে কিংবা কমে। কিন্তু যদি মার্কেটে তেমন একটা মুভমেন্টই না হয়, তাহলে প্রফিট হবে কিভাবে?

সে বলল, তাহলে আমরা ট্রেড করবো টা কখন? এরকম হবার কারন টা কি?
আমি তাকে বললাম যে, ফরেক্স মার্কেটে ২৪ ঘণ্টাকে আমরা প্রধানত ৪টা ভাগে ভাগ করতে পারি। এগুলো হল সিডনী সেশন, টকিয়ো সেশন, লন্ডন সেশন এবং নিউইয়র্ক সেশন। আমার কাছে নিউইয়র্ক সেশনটাই সবচেয়ে প্রিয়।
রাতুল এর উত্তরে আমাকে বলল, এগুলো তো শহরের নাম। আগে অনেককে এসবের নাম বলতে শুনেছি। অনেকেই বলে একটু পরেই নিউইয়র্ক সেশন শুরু হয়ে যাবে। আমি তো এসবের কিছুই বুঝি না।
আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম এই চারটা সেশন যখন শুরু হয়, তখন মার্কেটে অনেক ভোলাটিলিটি শুরু হয়। এর কারন হল একটি সেশন ওপেন হলেই সেই অঞ্চলে অনেক ব্যবসা-বানিজ্য, লেন-দেন ইত্যাদি শুরু হয়। অর্থনীতি সম্পর্কে বড় বড় নিউজ-সিদ্ধান্ত ঐ সময়েই নেয়া হয় অধিকাংশ সময়ে। তাই নতুন সেশন শুরু হলেই মার্কেটে বড়-সড় মুভমেন্ট/নড়াচড়া শুরু হয়ে যায়। নিচের চার্টটি ওকে দেখিয়ে বললাম যে কোন সেশন কখন শুরু এবং শেষ হয়।
forex-market-trade-session.png
রাতুল এবার বলল, গ্রীষ্মকাল (summer) আর শীতকালে (winter) ভিন্ন সময়ে সেশন ওপেন হয় কেন? আমি তাকে বললাম DST (Day-Light Saving Time) এর কথা মনে আছে যেটা বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে চালু হয়েছিল? ত্রিভুজ বলল, হ্যা। তখন তো আমাদের সময় আমরা ১ ঘণ্টা এগিয়ে দিয়েছিলাম। এবার আমি বললাম, পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোও তাদের কাজের সময় বৃদ্ধির জন্য গ্রীষ্মকাল এবং শীতকালে ১ ঘণ্টা সময় পরিবর্তন করে। আর সে কারনেই আমাদের এখানেও বাংলাদেশ সময় অনুসারে সেশনগুলো ওপেন-ক্লোজের সময় পরিবর্তন হয়। এখানে BST দিয়ে Bangladesh Standard Time বোঝানো হয়েছে।
এবার সে আমাকে বলল, যেকোনো সেশন ওপেন হলে যেহুতু মার্কেটে ভোলাটিলিটি বেড়ে যায়, ২টা সেশন একসাথে ওপেন থাকলে নিশ্চয়ই ভোলাটিলিটি আরও বেশি থাকে, মানে মুভমেন্ট আরও বেশি হয়?
এবার আমি বুঝলাম যে  বন্ধু  আমার ব্যাপারটা আস্তে আস্তে  বুঝতে পারছে। আমি তাকে বললাম হ্যা, ব্যাপারটা ঠিক এইরকম। গ্রীষ্মকালে দুপুর ১:০০ থেকে দুপুর ৩:০০ পর্যন্ত টকিয়ো ও লন্ডন সেশন ওভারল্যাপ করে এবং সন্ধ্যা ৬:০০ থেকে রাত ১০:০০ পর্যন্ত লন্ডন ও নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ করে। তাই এই সময়ে মুভমেন্টও থাকে বেশি। ট্রেড করার জন্য মোটামুটি আদর্শ সময়।
forex-market-avarage-pips.png
এবার আমি রাতুলকে এই চার্টটি দেখিয়ে বললাম যে কোন সেশনে কোন পেয়ারের এভারেজ মুভমেন্ট কত পিপস। দেখা যায় লন্ডন সেশনেই সবচেয়ে বেশি মুভমেন্ট দেখা যায়। আর যেহুতু নিউইয়র্ক সেশন লন্ডন সেশনের সাথে ৪ ঘণ্টা ওভারল্যাপ করে, সেহুতু লন্ডন এবং নিউইয়র্ক এই ২টি সেশন ট্রেড করার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
এবার রাতুল আমাকে বলল ফরেক্স সেশনগুলো সম্পর্কে তাকে একটু বিস্তারিত ধারনা দিতে। ভাবলাম টকিয়ো সেশন দিয়েই তাহলে শুরু করা যাক।
টকিয়ো সেশন
বাংলাদেশ সময় ভোর ৬:০০ টায় টকিয়ো সেশন শুরু হয় এবং দুপুর ৩:০০ টায় টকিয়ো সেশন শেষ হয়। টকিয়ো সেশন এশিয়ান সেশন নামেও পরিচিত, কারন টকিয়ো হল এশিয়ার অর্থনৈতিক রাজধানী। আর জাপান হল পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম ফরেক্স ট্রেডিং সেন্টার। জাপানিজ ইয়েন হল পৃথিবীর ৩য় সর্বাধিক ট্রেডকৃত কারেন্সি। সব ফরেক্স লেনদেনের ১৬.৫০% লেনদেন হয় ইয়েনের। এবং সকল ফরেক্স লেনদেনের ২১% হয় এই টকিয়ো সেশনে।
টকিয়ো সেশনের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আমি ওকে বলেছিলাম। সেগুলো হলঃ
  • এই সেশনের যে শুধু জাপানের অবদান থাকে তাই নয়, হংকং, সিঙ্গাপুর, সিডনী ইত্যাদি অঞ্ছলেও অনেক অর্থনৈতিক লেনদেন হয় যা এই সেশনে প্রভাব ফেলে।
  • জাপান মূলত রপ্তানি নির্ভর দেশ। চায়নারও এখানে ভালো অবদান রয়েছে। কেন্দ্রিয় ব্যাংক এবং এক্সপোর্টাররা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
  • মাঝে মাঝে মার্কেটে ভোলাটিলিটি এতও কমে যায় যে ট্রেডারদেরকে ট্রেড করার জন্য মাছ ধরার বরশি নিয়ে অপেক্ষা করার মত বসে থাকতে হয়।
  • মূলত এশিয়ান পেয়ারগুলোতে অন্য পেয়ারগুলোর তুলনায় বেশি মুভমেন্ট দেখা যায়। যেমন eur/usd, gbp/usd এর তুলনায় aud/usd, nzd/usd তে মুভমেন্ট বেশি হয়।
  • এই কম ভোলাটিলিটির সময় বেশিরভাগ পেয়ার একটি রেঞ্জের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, যা কিনা দিনের পরবর্তী সময়ে ব্রেকআউট ট্রেডের সুযোগ সৃষ্টি করে।
  • এই সেশনের শুরুতেই সাধারনত মুভমেন্ট বেশি হয়, কারন তখনই অর্থনৈতিক নিউজগুলো বেশি পাবলিশ হয়।
  • টকিয়ো সেশনের মুভমেন্ট দেখেই ট্রেডাররা সাধারনত পরবর্তী সেশনে ট্রেড করার স্ট্রাটেজি ঠিক করে।
টকিয়ো সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
এবার রাতুল বলল, অনেক কিছু জানা গেল। কিন্তু টকিয়ো সেশনে কোন কোন পেয়ার গুলো ট্রেড করার জন্য ভালো হবে? এই সেশনে তো অন্যান্য পেয়ারগুলো থেকে এশিয়ান পেয়ারগুলোতে মুভমেন্ট বেশি হয়। তাহলে আমাদের সেইসব পেয়ার ট্রেড করা উচিত?
টকিয়ো সেশনে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, জাপানের গুরুত্বপূর্ণ নিউজ পাবলিশ হয়। এরফলে নিউজ ট্রেড করার একটু ভালো সুযোগ পাওয়া যায়। JPY পেয়ারগুলোতে ভালো মুভমেন্ট দেখা যায়। চায়না কিন্তু আরেকটি অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার। তাই যখনই চায়না থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিউজ প্রকাশিত হয়, তা ফরেক্স মার্কেটে ভালো ভোলাটিলিটি সৃষ্টি করে। টকিয়ো সেশনে JPY এবং AUD পেয়ারে ভালো মুভমেন্ট দেখা যায়। তাই এই পেয়ারগুলো ট্রেড করার জন্য উত্তম।
লন্ডন সেশন
যখন এশিয়ান মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়, তার কিছুক্ষন পরই লন্ডন সেশন শুরু হয়। লন্ডন সেশন ইউরোপিয়ান সেশন নামেও পরিচিত। ইউরোপে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মার্কেট রয়েছে, যদিও ট্রেডারদের চোখ বেশিরভাগ সময় থাকে লন্ডনের দিকে। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১:০০ (শীতকালে দুপুর ২:০০) – টায় লন্ডন সেশন শুরু হয় এবং গ্রীষ্মকালে রাত ১০:০০ (শীতকালে রাত ১১:০০) – টায় লন্ডন সেশন শেষ হয়।
ঐতিহাসিকভাবেই লন্ডন ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতি মিনিটেই হাজার হাজার ব্যবসায়ী এখানে লেনদেন করে। সর্বমোট লেনদেনের ৩০% হয়য় শুধুমাত্র এই লন্ডন সেশনেই।
টকিয়ো সেশনের মত লন্ডন সেশনেরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো হলঃ
  • লন্ডন সেশন ২টি গুরুত্বপূর্ণ সেশনের সাথে (টকিয়ো এবং নিউইয়র্ক) ওভারল্যাপ করে। অসংখ্য ফরেক্স লেনদেন এই সেশনে ঘটে। তাই দেখা যায় এই সময়ে মার্কেটে লিকুইডিটিও থাকে বেশি এবং পেয়ারগুলোতে স্প্রেডও থাকে তুলনামুলক ভাবে কম।
  • অসংখ্য লেনদেন এবং ট্রেড হবার কারনে লন্ডন সেশন হল সবচেয়ে বেশি ভোলাটাইল সেশন
  • দেখা যায় অধিকাংশ ট্রেন্ড লন্ডন সেশনে শুরু হয়য় এবং নিউইয়র্ক সেশনের শুরু পর্যন্ত চলতে থাকে।
  • এই সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ভোলাটিলিটি কিছুটা কমে যায়, কারন ট্রেডাররা নিউইয়র্ক সেশন শুরুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
  • অনেকসময় দেখা যায় লন্ডন সেশনের শেষের দিকে ট্রেন্ড রিভার্স হয়ে যায়। কারন ইউরোপিয়ান ট্রেডাররা দিনশেষের আগে তাদের ট্রেড প্রফিতে ক্লোজ করে দিতে চায়।
লন্ডন সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
এবার রাতুল আমাকে প্রশ্ন করলো, নিশ্চয়ই লন্ডন সেশনে ইউরো আর পাউন্ডের পেয়ার গুলো ট্রেড করার জন্য ভাল? আমি তাকে উত্তর দিলাম যেহুতু লন্ডন সেশনে অনেক বেশি ট্রেড হয়য়, তাই দেখা যায় এই সেশনে অনেক বেশি লিকুইডিটি থাকার কারনে প্রায় সব পেয়ারেই ট্রেড করা যায়। অবশ্যই মেজর পেয়ারগুলো ট্রেড করা জন্য ভালো যেমন – EUR/USD, GBP/USD, USD/JPY, USD/CHF, কারনে সেগুলোতে স্প্রেড কম থাকে। এবং এই পেয়ারগুলো দেখা ইউরোপিয়ান সেশনে যে নিউজগুলো আসে সেগুলো দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়। এছাড়া ইয়েন ক্রস পেয়ারগুলোও ট্রেড করা যায় বিশেষ করে EUR/JPY এবং GBP/JPY, কারন এই পেয়ারগুলো তখন কিছুটা ভোলাটাইল থাকে।
নিউইয়র্ক সেশন
লন্ডন সেশন চলতে চলতে যখন মার্কেটের ভোলাটিলিটি কিছুটা স্থির হয়ে আসে, তখন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬:০০ (শীতকালে সন্ধ্যা ৭:০০) – টায় নিউইয়র্ক সেশন শুরু হয় এবং গ্রীষ্মকালে রাত ৩:০০ (শীতকালে রাত ৪:০০) – টায় নিউইয়র্ক সেশন শেষ হয়। এশিয়া এবং ইউরোপের মত, আমেরিকাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরেক্স মার্কেট। সব ট্রেডারদের দৃষ্টি থাকে নিউইয়র্ক সেশনের দিকে। নিউইয়র্ক সেশন আমেরিকান সেশন নামেও পরিচিত।
নিউইয়র্ক সেশনের বৈশিষ্ট্যগুলো হলঃ
  • যেহুতু এই সেশনটি লন্ডন সেশনের সাথে ওভারল্যাপ করে, তাই এই সেশনের শুরুতে মার্কেটে লিকুইডিটি বেশি থাকে।
  • অধিকাংশ অর্থনৈতিক রিপোর্ট এবং নিউজ এই সময়ে প্রকাশ হয়। প্রায় ৮৫% ট্রেডগুলোই ডলার এর সাথে কোনো না কোন ভাবে সম্পর্কিত। তাই যখন কোন আমেরিকান ইকনোমিক ডাটা রিলিজ হয়, তা মার্কেটকে মুভ করাতে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।
  • লন্ডন সেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর, নিউইয়র্ক সেশনের শেষের দিকে মার্কেটে ভলাটিলিটি এবং লিকুইডিটি অনেক কমে যায়। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত মুভমেন্ট প্রায় থাকেনা বললেই চলে।
  • শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাতের দিকে মার্কেট প্রায় শান্ত হয়ে যায়। কারন পরেরদিন মার্কেট অফ থাকার কারনে জন্য মার্কেটে ভোলাটিলিটি অনেক কম থাকে।
  • শুক্রবারে নিউইয়র্ক সেশনের মাঝামাঝি সময়ে অনেক সময় প্রাইস রিভারস করতে দেখা যায়। কারন অনেক ট্রেডাররা মার্কেট হলিডের সময় কোন নিউজের প্রভাব উপেক্ষা করার জন্য সপ্তাহ শেষ হবার আগেই ট্রেড ক্লোজ করে দেয়।
নিউইয়র্ক সেশনে যেসব পেয়ার ট্রেড করা উচিতঃ
রাতুল আমাকে বলল, যেহুতু এই সেশনে মার্কেটে ভোলাটিলিটি অনেক বেশি থাকে, তাই নিশ্চয়ই প্রায় সব পেয়ারই ট্রেড করা যায়? আমি বুঝতে পারলাম ত্রিভুজ ফরেক্স মার্কেটের ট্রেডিং সেশনগুলো সম্পর্কে ভালো ধারনা অর্জন করে ফেলেছে। আমি তাকে বললাম ঠিক তাই। এই সেশনে প্রায় সব পেয়ারই ট্রেড করা যায়, কারন ভালো মুভমেন্ট থাকে। আর এই সেশনে ডলারের বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ডাটা রিলিজ হওয়ার কারনে দেখা যায় সবাই নিউজগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকে, কারন সবাই ডলার ভালবাসে। আর এই নিউজগুলো খারাপ আসুক কিংবা প্রত্যাশিত আসুক, ডলারের লাফালাফির কারনে তা মার্কেটকে নাটকীয়ভাবে প্রচণ্ড নাড়া দিতে পারে।
সেশনের ওপর সেশন – সেশন ওভারল্যাপঃ
রাতুল আমাকে প্রশ্ন করলো দিনের মধ্যে ট্রেড করার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় কোনটি? এবার আমি রাতুলকে জিজ্ঞেস করলাম, বলতো টেলিভিশনে সবচেয়ে ভালো প্রোগ্রামগুলো কখন দেখায়? রাতুল উত্তর দিল- “ফ্যামিলি টাইম”. আমি বললাম ঠিক তাই। কিন্তু কারণটা কি? ও আমাকে উত্তর দিল কারন সেই সময়ে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে টেলিভিশন দেখে, তাই ভালো প্রোগ্রামগুলো প্রচার করা হয়। আমি তাকে বললাম ঠিক তাই। ফরেক্স মার্কেটের ক্ষেত্রেও একই রকম। মার্কেটে যখন ২টি সেশন ওভারল্যাপ করে, তখন মার্কেটে মুভমেন্টও বেশি হয়, তাই ট্রেড করার সুযোগও থাকে বেশি।
ফরেক্স মার্কেটে ২টি প্রধান সেশন ওভার ল্যাপ হলঃ
  • টকিয়ো-লন্ডন সেশন ওভারল্যাপ
  • লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ
টকিয়ো-লন্ডন সেশন ওভারল্যাপঃ
টকিয়ো সেশনে মুভমেন্ট অন্য সেশনগুলোর তুলনায় খুব একটা বেশি হয়না। আর টকিয়ো-লন্ডন সেশন যখন ওভারল্যাপ করে, তখন টকিয়ো সময় অনেকটা বিকেল তাই মুভমেন্ট কমই থাকে। ট্রেড করার জন্য এই সময়টা কিছুটা বোরিং লাগতে পারে। অনেক নতুন ট্রেন্ড তৈরি হয় এই সময়ে, কিন্তু অনেক ট্রেডাররাই ট্রেন্ড কনফারমেশনের জন্য লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশনের জন্য অপেক্ষা করে।
লন্ডন-নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপঃ
এই সেশন ওভারল্যাপ হল ট্রেড করার সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময় ট্রেডাররা সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে মার্কেটের দিকে মনোনিবেশ করে। এই সেশন ওভারল্যাপ হল দিনের সবচেয়ে ব্যাস্ত সময়, কারন ২টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ট্রেডিং সেন্টার লন্ডন এবং নিউইয়র্ক এই সময় ওপেন থাকে।
এই সময় মার্কেটে অনেক বড় বড় মুভমেন্ট দেখা যায় বিশেষ করে যখন আমেরিকা এবং কানাডা থেকে নিউজ-রিপোর্টগুলো প্রকাশিত হয়। ইউরোপ থেকে দেরিতে প্রকাশ হওয়া নিউজগুলোও ভালো প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। যদি লন্ডন সেশনে কোন ট্রেন্ড তৈরি হয়, তবে বেশিরভাগ সময় নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপের সময় তা কন্টিনিউ করতে দেখি। কারন আমেরিকান ট্রেডাররা সেদিন আগে কি হয়েছিল তা জেনে ট্রেড করতে ঝাপিয়ে পড়ে এবং অধিকাংশ সময় পূর্বের ট্রেন্ড অনুসরন করে। এই সেশন ওভারল্যাপ শেষ হবার পর পরই দেখা যায় মার্কেটে মুভমেন্ট অনেক কমে যায়, কারন অনেক ইউরোপিয়ান ট্রেডাররা দিনশেষে তাদের ট্রেড ক্লোজ করে দেয়।
ট্রেড করার জন্য সপ্তাহের সেরা দিনগুলোঃ
রাতুল আমাকে বলল, সবশেষে যা বোঝা গেল, তা হল লন্ডন সেশনই হল ফরেক্স মার্কেটের সবচেয়ে ব্যাস্ততম সেশন। আর তারসাথে যদি নিউইয়র্ক সেশন ওভারল্যাপ করে, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু ট্রেড করার জন্য কি বিশেষ কোন ভালো দিন রয়েছে? আমি তাকে বললাম হ্যাঁ। কিছু বিশেষ দিন রয়েছে যে দিনগুলোতে মার্কেট অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশীই মুভ করে।
সপ্তাহের কোন দিনগুলোতে গড়ে কোন পিপস মুভমেন্ট হয় সেটা আমি ত্রিভুজকে এই চার্টের মাধ্যমে দেখাইঃ
forex-market-secret.png
ওপরের চার্ট থেকে দেখা যায় যে, সপ্তাহের মাঝের দিনগুলোতেই মুভমেন্ট বেশী হয়। সপ্তাহের এই দিনগুলোতেই সবচেয়ে বেশী পিপস মুভমেন্ট দেখা যায়। অনেক সময় দেখা যায় সোমবার অনেক জায়গায় ব্যাংক হলিডে থাকে, নিউজ কম রিলিজ হয় কিংবা ট্রেডাররা নতুন সপ্তাহে কোনদিকে ট্রেন্ড মোড় নিবে তা ঠিক করতে না পেরে ট্রেড কম করে। ওপরদিকে শুক্রবার অনেকেই বিকেলের পর ট্রেড করে না পরেরদিন মার্কেট হলিডে থাকায়। সেই অর্থে শুক্রবার মার্কেট বলা যায় অর্ধেক সময় অ্যাকটিভ থাকে।
সময়কে সঠিকভাবে ম্যানেজ করাঃ
আমি এবার রাতুলকে বললাম নিশ্চয়ই এবার ফরেক্স সেশনগুলো সম্পর্কে ধারনা পরিস্কার হয়েছে? রাতুল উত্তর দিল, হ্যাঁ। এখন থেকে আমি সব ফরেক্স সেশন এবং সেশন ওভারল্যাপের দিকে নজর রাখব। আমি তাকে বললাম আমরা তো ভ্যাম্পায়ার নই যে সব সেশনগুলোতেই ট্রেড করতে পারবো। আর যদি পারি, কেনই বা করবো? ফরেক্স মার্কেট ২৪ ঘন্টা ওপেন থাকে তার মানে এই নয় যে ২৪ ঘণ্টাই ভালো মুভমেন্ট থাকে। আর যদি থাকেই, কেনই বা আমরা সবসময় ট্রেড করবো? আমাদের শুধু ভালো ট্রেডের সুযোগ পেলেই ট্রেড করা উচিত।
আমাদের সুস্থভাবে জীবন-যাপনের জন্য বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন। সবসময় ট্রেড করার জন্য কম্পিউটারের সামনে না বসে মাঝে মাঝে সবাই মিলে বাইরে ঘুরতে এবং খেতে যাওয়া উচিত।এতে সবদিক দিয়েই ভাল ।

ডে ট্রেডিং কি?

ডে ট্রেডিং একটি শর্ট-টার্ম ট্রেডিং স্টাইল। ডে ট্রেডার সাধারনত দিনে একটি ট্রেড দেয় এবং দিন শেষ হওয়ার আগে তা আবার ক্লোজ করে দেয়।

ডে ট্রেডার সাধারনত পজিশন সারারাত ওপেন রাখতে পছন্দ করে না। তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দিনের মধ্যে লাভ নিয়ে নেয়া। 

একজন ডে ট্রেডারের অ্যানালাইটিক্যাল স্কিল খুব ভালো হতে হয়। তারা  বিভিন্ন ইনডিকেটর এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল ট্যুল ব্যাবহার করে থাকে। এছাড়াও, অর্থনীতি সম্পর্কে তার ভালো ধারনা থাকতে হয় যাতে সে ফান্ডামেন্টাল ট্রেডিং সিগন্যাল চিহ্নিত করতে পারে। এছাড়াও, তারকাছে শক্তিশালী এক্সিট স্ট্রাটেজি থাকতে হবে যাতে সে দিনের শেষে তার ওপেনকৃত পজিশনগুলো সবচেয়ে বেশী লাভে ক্লোজ করতে পারে।

যেহেতু ডে ট্রেডাররা প্রায়ই তাদের পজিশন ক্লজ করে বা ওপেন করে, তাই তারা সাধারনত লিকুইড কারেন্সিগুলোতে ট্রেড করে যাতে তাদের স্প্রেডের খরচ কম হয়।

Martin S. Schwartz হচ্ছে ডে ট্রেডারের একটি ভালো নিদর্শন, এই লোকের সাহস এবং বুদ্ধিমত্তা তারজন্য প্রচুর অর্থ নিয়ে এসেছে এবং উপযুক্ত নাম পিট বুল উপাধি পেয়েছে। সে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে যখন সে ১৯৮৪ সালে ইউএস ইনভেস্টিং চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। তার ডে ট্রেডিং স্টাইল সেসময়ে অপরাজেয় ছিলো। সে কখনো নিজের পজিশন খুব বেশি সময় ধরে রাখতো না। ট্রেডে এন্ট্রি নিতে সে টেকনিক্যাল ইনডিকেটর ব্যাবহার করতো এবং অর্থনৈতিক রিপোর্ট এবং অন্যান্য ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিসের সিগন্যাল দেখতো।

যখন নিউজ এবং ফান্ডামেন্টাল ডাটার সময় আসে, তখন বেশিরভাগ ট্রেডার প্রকাশিত সংখ্যার দিকে নজর দেয় আর চিন্তা করে যে মার্কেট নিউজ রিলিজের অনুযায়ী মুভ করছে না কেন। Marty Schwartz এর এই বিশ্বাস ছিলো যে ট্রেড ইকনোমিক রিলিজের প্রকাশিত সংখ্যার ভিত্তিতে হবে না, বড়ং মার্কেটে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিক্রিয়ার ওপর যা ডাটা প্রকাশনার পরে দেখা যায়। Marty ট্রেডারদের তাদের নিজেদের ধারনা, চিন্তাভাবনার কথা ভুলে যেতে বলেছে, এবং মার্কেট কি বলছে তা শুনতে বলেছে, কারন ট্রেডের উদ্দেশ্য আপনার ধরনা নিশ্চিত করা নয়, বড়ং অর্থ উপার্জন করা।

আমাদের ডে ট্রেডার প্রাইসের দিক নির্ধারণ করতে প্রায়ই টেকনিক্যাল ইনডিকেটর ব্যাবহার করতো। তার সর্বকালের পছন্দের ট্যুল ছিলো ১০-পিরিয়োডের এক্সপনেন্সিয়াল মুভিং এভারেজ (ইএমএ) এই টেকনিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টটি Marty কে শর্ট-টার্ম ট্রেডে বুলিশ এবং বিয়ারিশ দৃশ্যকল্পের পার্থক্য করতে সহায়তা করতো।

স্টপ লস এবং টেক প্রফিট কি?

ফরেক্স ট্রেডিং এ স্টপ লস এবং টেক প্রফিট অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়। সফল ট্রেডারদের অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে তারা স্টপ লস এবং টেক প্রফিট ব্যবহার করে।

স্টপ লস (stop loss): স্টপ লসের মাধ্যমে আপনি আপনার লসে থাকা ট্রেডটি কোন প্রাইস এ বন্ধ করে দিতে চান তা ঠিক করে দিতে পারবেন।

টেক প্রফিট (take profit): টেক প্রফিটের মাধ্যমে আপনি আপনার লাভে থাকা ট্রেডটি কোন প্রাইসে বন্ধ করে দিতে চান তা ঠিক করে দিতে পারবেন।

ধরুন, আপনি 1.2100 তে একটি বাই ট্রেড ওপেন করলেন। আপনি চাচ্ছেন 50 পিপস লাভ করবেন এবং 50 পিপসের বেশি লস করবেন না। তাহলে আপনি 50 পিপস স্টপ লস এবং 50 পিপস টেক প্রফিট সেট করে রাখতে পারেন। আপনার কম্পিউটার বন্ধ থাকলে বা কোন স্পাইকের ফলে হঠাৎ প্রাইস বেড়ে বা কমে গেলে, স্টপ লস বা টেক প্রফিটের প্রাইসে অটোমেটিক ভাবে আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে।

সেক্ষেত্রে , আপনার স্টপ লসটি হবে 1.2050 এ এবং টেক প্রফিট টি হবে 1.2150 এ।

এ বিষয়ে সামনে আরো বিস্তারিত লেখা হবে। ভাল লাগলে শেয়ার করবেন। কোন প্রশ্ন থাকল কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

আরো পড়ুন

স্ক্যাল্পিং কি?

ট্রেইলিং স্টপ কি?

Tradable Bonus কি?

Tradable হচ্ছে সেই বোনাস যা দিয়ে ট্রেড করা যায়।

বুঝিয়ে বলি, মনে করুন আপনি কোন ব্রোকারে ১০০০ ডলার ডিপোজিট করলেন। ব্রোকার আপনাকে ৫০০ ডলার বোনাস দিল। এখন আপনি ১০০০ ডলার লস করে ফেলেছেন। আপনার একাউন্টে ৫০০ ডলার আছে। মানে শুধু বোনাস টা আছে। এখন এই বোনাস দিয়ে যদি ট্রেড করা যায় তাহলে এটাকে বলে ট্রেডাবল বোনাস। বেশিরভাগ ব্রোকার কর্তৃক দেয়া বোনাস ই ট্রেডাবল বোনাস না। ডিপোজিট এমান্ট লস হয়ে গেলে সাথে সাথে বোনাসটা ক্যানসেল করে দেয়।

যেমন ধরুন, কোন ব্রোকারে আপনি ১০০০ ডলার ডিপোজিট করলেন আর ব্রোকার আপনাকে আরো ১০০০ ডলার বোনাস দিল। আপনার টোটাল ব্যালেন্স হল ২০০০ ডলার।  আপনি যদি কোন কারনে ১০০০ লস করে ফেলেন সাথে সাথে বাকি ১০০০ বোনাস ক্যানসেল হয়ে যায়। আপনার একাউন্ট জিরো। এ ধরনের বোনাসকে বলা হয় Credit Bonus.

Federal Reserve System কি? এবং কেন?

আমেরিকান কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নাম হচ্ছে Federal Reserve System. তবে সংক্ষেপে ফেড নামে ডাকতেই সবাই একে বেশি পছন্দ করেন। ফরেক্স ট্রেড করছেন দীর্ঘদিন ধরে অথচ ফেডের নাম শুনেন নি, এরকম মানুষ কমই পাওয়া যাবে।

মূলত তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ফেড প্রতিষ্ঠা করে :
সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান
মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও
দীর্ঘমেয়াদী সুদের হারকে সহনীয় পর্যায়ে রাখা।
বিশ্বের আর সব দেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংক এর সাথে ফেডের একটা মজার পার্থক্য হল, অন্য কেন্দ্রিয় ব্যাংকগুলো সরকারী মালিকানাধীন হলেও ফেডে সরকারি ও বেসরকারি, উভয় খাতেরই অংশীদারিত্ত আছে। আর তাই, শুধু সাধারণ জনগণ নয়, প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর স্বার্থও ফেড দেখে থাকে। সেই যে বলা হয়ে থাকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতা এখন আর জনগনের হাতে নেই, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে চলে গেছে, তা বোধকরি মিথ্যা নয়। কারন, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ও অংশীদারিত্ব আছে, এমন কেন্দ্রিয় ব্যাংক বিশ্বে একটাই আছে, তা হচ্ছে ফেড।

তবে ফেড প্রতিষ্ঠার পেছনের ইতিহাস কিন্তু তেমন সুখকর নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু গভীর সংকটজনক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপেক্ষিতেই ফেডের উৎপত্তি। এ নিয়ে না হয় আরেকদিন লিখব। তার আগে দেখে নেয়া যাক কারা আছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই কেন্দ্রিয় ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদেঃ

কারা পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রের এই কেন্দ্রিয় ব্যাংকে?

ফেড গঠন প্রণালীতে রয়েছে বিভিন্ন কমিটি (বোর্ড অফ গভর্নর’স, এফওএমসি), যুক্তরাষ্ট্রের ১২ টি আঞ্চলিক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, অসংখ্য বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন উপদেষ্টা কাউন্সিল।

বোর্ড অফ গভর্নর’স

ফেডের মূল পরিচালনা পর্ষদ হচ্ছে ফেডারের রিজার্ভ বোর্ড অফ গভর্নর’স। সাত সদস্য বিশিষ্ট এই বোর্ডের সবাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কতৃক নিয়োগপ্রাপ্ত। ফেডের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কে হবেন তাও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঠিক করে দেন, যদিও এর জন্য সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। প্রতিবার ২ বছর করে একজন সদস্য সর্বোচ্চ ১৪ বছর বোর্ড অফ গভর্নর’স এ থাকতে পারেন।

তবে প্রেসিডেন্ট কত্রিক নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও ফেডের প্রেসিডেন্ট তার নেয়া সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন।

বোর্ড অফ গভর্নর’স এর কাজ কি?

আগেই বলা হয়েছে যে, বোর্ড অফ গভর্নর’স হচ্ছে ফেডের মূল পরিচালনা পর্ষদ। তাই বিশাল দায়িত্ব তাদের উপর। সাধারণভাবে ফেডের সকল কার্যক্রম ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং সিস্টেম তদারকি ও নিয়ন্ত্রন করা এই বোর্ডের দায়িত্ব। এছারাও এই বোর্ডের সকল সদস্য এফওএমসি কমিটিতে রয়েছেন এবং দেশের আর্থিক নীতি কি হবে, তা তারাই নির্ধারণ করে থাকেন।

বোর্ড অফ গভর্নর’স সম্পর্কে তো জানলেন। এর বাইরেও ফেডের একটি শক্তিশালী কমিটি হচ্ছে এফওএমসি (FOMC)।

এফওএমসি (FOMC)

এফওএমসি (FOMC) বা ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি হচ্ছে ফেডের আরেকটি শক্তিশালী কমিটি। মোট বার জন সদস্য নিয়ে এই কমিটি গথিত। ফেডের বোর্ড অফ গভর্নর’স এর সাতজন সদস্যই রয়েছেন এই কমিটিতে। বাকি পাঁচজন সদস্য নির্বাচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ টি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে থেকে। নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট সবসময়ই থাকেন এই কমিটিতে, বাকি ১১ টি ব্যাংকের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে থেকে ৪ জন পর্যায়ক্রমে প্রতি বছর কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন।

কমিটির কাজ

এফওএমসি কমিটি প্রতি বছর সাধারণত ৮ বার বৈঠকে বসে প্রতি ৫ থেকে ৮ সপ্তাহ অন্তর অন্তর। নানা বিধ কারনেই ফরেক্স ট্রেডারদের কাছে এফওএমসি মিটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অতি উত্তেজনা ও অধৈর্য সফল ট্রেডার হওয়ার অন্তরায়

সেদিন হায়দার ভাই (ছদ্মনাম) দৌড়ায়ে আসলো…
-ভাই, আমার একাউন্টে কিছু ডিপোজিট করে দেন.
-কত?
-5000 টাকায় যা হয়…
-বলেন কি, আপনাকে না বললাম আগে এই 500 সেন্ট এর একাউন্ট টা 1000 করেন।
-ভাই আপনি জানেন না। 500 কে 800 করে ফেলছিলাম। আবার লস হয়ে 450 হয়ে গেছে। অল্প ব্যালেন্সে এ হবেনা। তাই এই 5000 টাকা লন করে নিয়ে আসছি।
-বলেন কি?

আমি আকাশ থেকে পড়লাম। উনাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম, কথা শুনতে চায় না। অবশেষে রাগ ই হলাম। বললাম- আগে ট্রেডার হন। লোন করা টাকা দিয়ে কখনো ফরেক্স মার্কেটে সফল হওয়া যায়না। ফরেক্স মার্কেটে সফল হতে আগে ভাল ট্রেডার হতে হবে। যদি ভাল ট্রেডার হতে পারেন তাহলে 500 কে 1000, 1000 কে 2000 বানাতে পারবেন। নতুন ডিপোজিট করতে হবেনা। নানান কথা বলে হায়দার ভাইকে বুঝিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম।

আমার এই ঘটনা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, হায়দার ভাইয়ের এই উত্তেজনা, লোন করে টাকা আনা এই ঘটনাগুলো কোথায় দেখতাম আমরা? 6 মাসে দ্বিগুন কোম্পানীগুলোতে। আর এই কোম্পানী গুলো কত লোক কে যে পথে বসিয়েছে তার কোন হিসেব নেই। আপনি যত ভালো ট্রেডারই হন, কমপক্ষে 6 মাস ডেমো বা সেন্ট একাউন্টে (ক্ষুদ্র ডিপোজিটের রিয়েল একাউন্ট) ট্রেড না করে বড় এমাউন্ট ডিপোজিট করা আর টাকা টা পানিতে ফেলে দেয়া সমান কথা। এমন ভুল করা থেকে নিজে বিরত থাকুন এবং অন্যকে নিরুতসাহিত করুন।

Hawkish ও Dovish কি? এবং এটা জানা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

Hawkish শব্দটি এসেছে ইংরেজি Hawk থেকে যার অর্থ বাজপাখি। শিকারের উপর বাজপাখি যেভাবে আক্রমণাত্মক বা আগ্রাসীভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে, ঠিক সেভাবেই মাঝে মাঝে আগ্রাসী অবস্থানে যেতে হয় কেন্দ্রিয় ব্যাংকেও।

আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগ্রাসী মনোভাব (সুদের হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে) বা কণ্ঠস্বরকেই বলা হয় Hawkish বা Hawkish Tone, ফরেক্স মার্কেটে ফান্ডামেন্টাল আনালাইসিস করার জন্য যা এখন আপনার জানার একান্তই প্রয়োজন।

সাথে জেনে রাখুন Dovish কি তাও। Hawkish এর বিপরীত শব্দটিই হচ্ছে Dovish যা এসেছে ইংরেজি শব্দ Dove বা শান্তির প্রতীক পায়রা থেকে
bdforexschool-howkish-dovish

 

বিভিন্ন অবস্থার পরিপেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। আর এমনটা প্রায়শই হয় যে নতুন যে পদক্ষেপটা তারা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন তা পূর্বেরটার উল্টো।

ধরুন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো। নতুন নতুন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে, দেশে কর্মসংস্থান বাড়ছে। আর তার সাথে যেটা বাড়ছে, তা হল বাজারে অর্থের প্রবাহ।

আর সমস্যার সূত্রপাতটা এখানেই। কারন যখনই বাজারে অর্থের প্রবাহ বেশী হয়ে যায়, তা দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয় বা মূল্যস্ফীতি তৈরি করে। এই মূল্যস্ফীতি একটি সহনীয় পর্যায়ে থাকলে তা তেমন সমস্যা তৈরি করে না, কারন মানুষের আয়ও বাড়ছে। কিন্তু, যখনই তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখনই তা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আর এর সমাধান হচ্ছে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমানো। তা কিভাবে সম্ভব?

এটা সম্ভব যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার হার কমবে এবং ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার হার আরও বাড়বে। অর্থাৎ, যে অর্থ ব্যাংক থেকে বাজারে স্থানান্তরিত হচ্ছিল, তা আবার বাজার থেকে ব্যাংকে ফেরত যাচ্ছে। আর বাজারে অর্থের সরবরাহ কমার কারনে জিনিসপত্রের মূল্যও কমবে।

hd

চিন্তা করে দেখুন, সুদের হার বাড়িয়ে দেওয়ায় না হয় মূল্যস্ফীতি কমল। কিন্তু, এর ফলে কি শিল্পকারখানা স্থাপন বা সম্প্রসারণ করা কঠিন হয়ে গেলো না? এর একটা প্রভাবও তো দেশের অর্থনীতিতে পড়বে। অর্থনীতির চাকা কিছুটা শ্লথ হয়ে যাবে ও প্রবিদ্ধি কমতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি এটা জানে না?

অবশ্যই জানে। কিন্তু, কিছু করার নেই।

একটা কথা আছে, অবস্থার ভিত্তিতে ব্যাবস্থা। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের বৈঠকে নীতিনির্ধারকরা একত্রে বসে আলোচনা করেন, কোনটি বেশি জরুরি। মূল্যস্ফীতি কমানো নাকি অর্থনীতির চাকা আরো সচল করা?

যদি এমন হয় যে, অর্থনীতি খুব ভালো অবস্থানে আছে এবং মূল্যস্ফীতিও সহনীয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। আর যদি এমন হয় যে, অর্থনীতি ভালো অবস্থানে আছে কিন্তু মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে মূল্যস্ফীতি কমানোটাই বেশি অগ্রাধিকার পায়। সেক্ষেত্রে, বৈঠকের বিবৃতিগুলোতে মূল্যস্ফীতি কমানোটাই প্রধান বিষয় হয়ে দাড়ায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এরকম অবস্থানকে বলা হয় Hawkish, এ ধরনের বিবৃতিকে বলা হয় Hawkish Statement এবং অনেকে বক্তব্যের সুরকে Hawkish টোন ও বলে থাকেন। এককথায়, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ার যখন জোরালো আশঙ্কা থাকে, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোন বিবৃতিকে Hawkish বলতে বোঝায় মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, বাড়তে পারে সুদের হার।

ঠিক উল্টোভাবেই যখন অর্থনীতির অবস্থা খারাপ থাকে, তখন কেন্দ্রিয় ব্যাংকের কাছে অগ্রাধিকার পায় সুদের হার কমিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করা। মূল্যস্ফীতি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এরকম অবস্থানকে বলা হয় Dovish, এ ধরনের বিবৃতিকে বলা হয় Dovish Statement এবং অনেকে বক্তব্যের সুরকে Dovish টোন ও বলে থাকেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন দেশের অর্থনীতিক সমস্যা নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা করে এবং এ থেকে উদ্ধারের জন্য যখন সুদের হার বাড়ানোর কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায় না, এমনকি সুদের হার আরো কমার আশংকা থাকে তখন তাকে Dovish বলা হয়।

কেন জানা গুরুত্বপূর্ণ?

কারন Hawkish বা Dovish, একটি শব্দ দ্বারাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি করতে যাচ্ছে ভবিষ্যতে, তা সম্পর্কে ধারনা করা যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যেকোনো Hawkish বা Dovish বিবৃতি মার্কেটের উপর সরাসরি বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
যেমন ধরুন, FED কি মূল্যস্ফীতি নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত? খুব বেশি আলোচনা হয়েছে এ নিয়ে বৈঠকে? ফেডের বৈঠকের বিবৃতি থেকে যদি এমন কোন ধারনা পাওয়া যায় যে, সুদের হার বাড়িয়ে ফেড মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে ফেডের এ Hawkish টোন ট্রেডারদের মাঝে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে ও ডলার শক্তিশালী হবে। কারন, সুদের হার বাড়া মানেই কারেন্সি শক্তিশালী হওয়া।

প্রফেশনাল ট্রেডারদের কাছে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বৈঠকের ভাষা (Hawkish/Dovish) সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।

ফরেক্স এ পাগলেও প্রফিট করতে পারে, ছাগলে পারেনা

আমার লেখাটা পড়ে কেউ হয়তো মনে কষ্ট পেতে পারেন, তার জন্য আমি অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ফরেক্স এর প্রতি দিন দিন মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন অতি উতসাহ আর উদ্দিপনা নিয়ে ফরেক্স যুদ্ধে নামছেন নতুন নতুন ট্রেডার। কিন্তু পরিনাম একি… আগের মতোই ৯৫% ট্রেডার প্রফিট তো দুরের কথা নিজের ব্যালেন্সটাকেই টিকিয়ে রাখতে পারেনা।boz-5haditabasi-(goat5).jpg

তাহলে ফরেক্স কি এতোই দু:সাধ্য? আমার মতে  এর উত্তর, ‘না’. আমি মনে করি,  ফরেক্স এ পাগলেও প্রফিট করতে পারে, ছাগলে পারেনা।

এখানে আমি পাগল বলতে বুঝাতে চাচ্ছি, এমন লোকদের যারা ফরেক্স বোঝেনা, উল্ট পাল্টা ট্রেড করে। যেমন ধরুন মার্কেট  Strong sell কিন্তু কোন এক পাগলে সেই মার্কেটে Buy ট্রেড বসালো। তারপর টানা ২ সপ্তাহ নামতে থাকলো। ২ সপ্তাহ নামার পর মার্কেট আবার উঠতে শুরু করলো। অবশেষে ১ মাস পর পাগলের ট্রেডটি TP হিট করলো। পাগল উল্টা ট্রেড দেয়ার পরও কিন্তু পাগল এখন প্রফিটে।

আমি ছাগল বলতে বুঝাচ্ছি, যে শুধু খাই খাই করে। কথায় আছে, ”পাগলে কি না বলে আর ছাগলে কি না খায়।” এই রকম খাই খাই স্বভাবের ছাগলরা যখন ফরেক্স মার্কেটে আসে তখন তারা তাদের ব্যালেন্স নিয়ে এক সপ্তাহও টিকে থাকে না। এই ধরনের ট্রেডারদের হয়তো ফরেক্স মার্কেট সম্পর্কে ভাল জ্ঞানও আছে কিন্তু তাদের এই খাই খাই স্বভাবের কারনে তাদের পতন অনিবার্য। ধরুন, মার্কেট স্ট্রং সেল এবং সেই ছাগল ট্রেডার সেটা বুঝতে পেরেছে। সে তখন সে চিন্তা করলো মার্কেট তো নিশ্চিত নামবে, তাই সে ২০০ পিপস হাতে রেখে বড় ভলিউমের একটা ট্রেড বসালো, মার্কেট উপরের উঠতে শুরু করলো , কিছুক্ষন উপরে উঠে আবার নামা নামা ভাব। এবার ছাগল ট্রেডার ওভার শিউর এখন মার্কেট শিউর নামবে। এবার সে সেম ভলিউমের আরেকটা ট্রেড দিল, ভাবলো কিছু প্রফিট হলে ছেড়ে দেবে। এই সুযোগটা ছাড়া ঠিক হবেনা। কিন্তু মার্কেট নামলো না, আবার উঠতে শুরু করলো। এবার ছাগল ট্রেডারের মেজাজ গরম। সে মার্কেটে বসলেই মার্কেট তার সাথে শত্রুতা শুরু করে। ইতিমধ্যে অনেক লস হয়ে গেছে। তাই সে অনেক চিন্তা ভাবনা করে same volume এর দুটো Buy বসালো।আর তখন থেকে মার্কেট আবার নামতে শুরু করলো। এবার তো বাই এর ট্রেড ধরা। ছাগল ট্রেডারের মেজাজ আরো গরম। প্রচন্ড রাগ উঠে গেছে।মেজাজ গরম করে আরো বড় ভলিউমের একটা সেল মারলো। সাথে সাথে প্রফিট। ক্লজ করবে কি করবেনা এমন চিন্তা করতে করতেই মার্কেট আবার উঠে গেল। এবার বাইয়ের ট্রেড প্রফিটে। ক্লজ করে দিল। মার্কেট আরো উঠে গেল। ছাগল ট্রেডারের একাউন্ট জিরো।

ছাগল ট্রেডার ২ সপ্তাহ পরে তার এক ট্রেডার বন্ধুর সাথে, আরে ভাই মার্কেট কি তোর থেকে কম বুঝি? আমি তো বেটা এনালাইসিস করে বুঝছিলামই মার্কেট ২ সপ্তাহ টানা নামবো। sell  এ তো ট্রেড ও বসাইছিলাম। কিন্তু পরের ট্রেড গুলো যদি না দিতাম, তাইলে তো বেডা আমার ইকুইটি ৩ গুন হয়ে যায়। বেশি খাইতে যাইয়াই এই লস টা খাইলাম। ইশ, মাথা নষ্ট হয়ে যায়।

আপনি যদি ছাগল ট্রেডার হতে না চান তাহলে আগে মানি ম্যানেজমেন্ট শিখুন। প্রফিট তো পরের কথা আগে নিজের ব্যালেন্স বাচানো শিখতে হবে।

কাউকে খোচা দেওয়া বা কষ্ট দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে মানি ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব বোঝানো।

NETELLER

Neteller এর কিছু সুবিধা থাকলেও কিছু বড় অসুবিধা আছে। আনভেরিফাইড একাউন্টে লেনদেন করলে আপনার একাউন্ট ব্লক মেরে সব ডলার হজম করে দেবে। সুতরাং আনভেরিফা্ইড একাউন্ট এড়িয়ে চললে আশা করি খুব অসুবিধা হবেনা।

নেটেলার মুলত একটি UK based পেমেন্ট প্রসেসর। নেটেলার একটি FSA রেগুলেটেড(লিঙ্ক) পেমেন্ট প্রসেসর। নেটেলার পেমেন্ট প্রসেসরটি Optimal Payments Limited দ্বারা পরিচালিত। Optimal Payments Limited প্রতিষ্ঠানটি Financial Conduct Authority দ্বারা অনুমোদিত এবং নেটেলার অনলাইনে ই-কারেন্সি ভিত্তিক কার্যক্রমের জন্য অনুমোদিত।

সুবিধাঃ

– প্রিপেইড মাস্টারকার্ড প্রদান করে
– ভার্চুয়াল মাস্টারকার্ড প্রদান করে
– ব্যাংকে উইথড্র করা যায়
– চেক উইথড্রয়াল
– কোন ফি ছাড়াই অন্য কারো নেটেলার অ্যাকাউন্টে মানি ট্রান্সফার করতে পারবেন
– সমর্থিত অ্যাকাউন্ট কারেন্সিঃ USD, EUR, GBP, JPY, INR, HUF AUD, BGN, CAD, DKK, EEK, LTL, LVL, MXN, NOK, PLN, RON, RUB, SEK, SGD
– রিওয়ার্ড পয়েন্ট সুবিধা
– VIP অ্যাকাউন্ট

 

Open a Neteller Account

 

ভেরিফিকেশনঃ

নেটেলারে আপনাকে অবশ্যই অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করতে হবে তাদের সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য। ভেরিফাই না করে $১০০ পর্যন্ত লেনদেন করা যায় কিন্তু তা নিরাপদ নয়। আপনাকে অবশ্যই ভেরিফাই করতে হবে। ভেরিফাই ছাড়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা সম্ভব নয়। নেটেলার অ্যাকাউন্টের নাম এবং আপনার ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের নাম এক হতে হবে। তা নাহলে ব্রোকারে সমস্যা হতে পারে। তাই নিজের আসল নাম ব্যবহার করতে হবে।

ভেরিফাই করতে যা লাগবেঃ ন্যাশনাল আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরিষ্কার স্ক্যান কপি

ভেরিফাই করতে সময় লাগেঃ ৩-৭ দিন
ভেরিফাই নিয়ে সমস্যাঃ

অনেকেই ভেরিফাইয়ের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন। অনেকে ডকুমেন্টস আপলোড করছে ঠিকই কিন্তু সাবমিট করছেন না। ডকুমেন্টস আপলোড করার পরের পেইজে সাবমিটের আলাদা বাটন রয়েছে। সেখান থেকে সাবমিট না করলে ভেরিফাইয়ের জন্য রিকোয়েস্ট ওদের কাছে যায় না, তাই ভেরিফাইও হয় না। তাই ভেরিফাই করার সময় সবাই এই ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন। কোনভাবেই যদি ভেরিফাই করতে না পারেন তাহলে membersecurity@neteller.com  এই ইমেইলে আপনার ন্যাশনাল আইডির স্কান কপি এবং একাউন্ট নং পাঠিয়ে দিন ভেরিফাই হয়ে যাবে।

Trailing Stop

ট্রেইলিং স্টপ হল এক কথায় পরিবর্তনশীল (Mobile) স্টপ লস । আপনি যখন সাধারণ স্টপ লস ব্যবহার করবেন তখন সেটা একটা নির্দিষ্ট প্রাইসে ফিক্সড হয়ে যাবে এবং ট্রেডিং প্রাইস যতক্ষণ ঐ প্রাইসে না পৌঁছাবে ততক্ষণ আপনার ট্রেড লসে ক্লোজ হবে না । ধরেন আপনি ১.৫০০০ তে বাই দিলেন আর স্টপ লস দিলেন ১০০ পিপ নীচে ১.৪৯০০ আর টেক প্রফিট দিলেন ২০০ পিপ উপরে ১.৫২০০ তে । এখন আপনার ট্রেডিং প্রাইস যদি ১.৫১৫০ তে গিয়ে আবার ১.৪৯০০ এ চলে আসে তাহলে কিন্তু আপনার ট্রেড লসে ক্লোজ হয়ে যাবে, যেহেতু আপনার ট্রেড টেক প্রফিট ১.৫২০০ তে পৌঁছাবার আগেই ট্রেড স্টপ লস ১.৪৯০০ কে ছুঁয়ে ফেলেছে ।

কিন্তু আপনি যদি ট্রেইলিং স্টপ ১০০ পিপ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ট্রেডিং প্রাইস যখন ১.৫০০০ থেকে ১.৫১৫০ তে চলে যাবে তখন স্টপ লস জায়গা বদল করে ১.৪৯০০ থেকে উঠে গিয়ে ১.৫১৫০ এর ১০০ পিপ নীচে অর্থাৎ, ১.৫০৫০ তে চলে আসবে । এখন যদি আপনার ট্রেডিং প্রাইস টেক প্রফিট ১.৫২০০ তে না গিয়ে ১.৫১৫০ থেকে নামা শুরু করে তাহলে কিন্তু স্টপ লস ঐ ১.৫০৫০ তেই রয়ে যাবে । স্টপ লস কিন্তু আগের মত ১.৪৯০০ তে নেমে আসবে না, ফলে আপনার ট্রেড তখন লসে ক্লোজ হলেও ১.৫০৫০ তে ক্লোজ হওয়ার কারনে ৫০ পিপ প্রফিট হবে । ট্রেইলিং স্টপ ব্যবহারের এটাই সবচেয়ে বড় সুবিধা ।

মনে রাখবেন, আপনার ট্রেড যদি একবার প্রফিটে যায় আর Trialing stop টা যদি ধরে ফেলে, তাহলে আপনার লাভ হতে পারে বহু পিপস, কিন্তু লস হবার কোন সম্ভাবনা নেই।

আপনি কত পিপ ব্যবহার করে স্টপ লস আর টেক প্রফিট সেট করবেন সেটা নির্ভল করে আপনার ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজির উপর ।

ট্রেইলিং স্টপ ব্যবহার করার জন্য প্রথমে Terminal টি ওপেন করতে হবে, এরপরে যেই ট্রেডে ট্রেইলিং স্টপ আপনি সেট করতে চান সেই ট্রেডের উপর মাউস রেখে রাইট ক্লিক করে Default অথবা, Custom ট্রেইলিং স্টপ আপনি সেট করে দিতে পারেন, নীচের মত করে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আর যদি সেট করা ট্রেইলিং স্টপ বাতিল করে দিতে চান, তাহলে একই ভাবে Terminal এর ট্রেডের উপর মাউস রেখে ট্রেইলিং স্টপের সাইড উইনডোটি ওপেন করে None ক্লিক করতে হবে ।

 

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement এর অবদান

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement এর অবদান :

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement পয়েন্টের সাহায্যে Buy Entry এবং Sell Entry এর জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া যায় । আমরা সাধারণ ভাবে কোন Uptrend মার্কেটে Buy Entry প্রদান করে থাকি, কিন্তু Uptrend মার্কেটে Price যদি অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যায় তখনBuy Entry প্রদান করাটা বেশ খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়, তাই আমরা Uptrend মার্কেটের Retracement পয়েন্ট নির্ধারণ করে ঐ পয়েন্টে Buy Entry এর জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করি ।

আমরা যদি নীচের Chart এ একটি Uptrend মার্কেট দেখি তাহলে দেখা যাবে যে, Price একটা নির্দিষ্ট চূড়া (B পয়েন্ট) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে আবার হ্রাস পেতে শুরু করেছে, কাজেই এখন Buy Entry প্রদান করার একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে, আমরা Retracement Tool এর সাহায্যেRetracement Line অংকন করে ধারণা নিতে পারি যে, অন্ততঃপক্ষে 38.2% Retracement লেভেলে Buy Entry প্রদান করা যেতে পারে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

এবার যদি উপরোক্ত Chart এর কয়েকদিন পরের পরবর্তী অংশটুকু দেখি যে, আসলেই কি ঘটেছিল, তাহলে দেখা যাবে যে –

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart থেকে সহজেই অনুমান করতে পারছি যে, 38.2% Fibonacci লেভেলে Buy Entry প্রদান করার সিদ্ধান্তটা যথার্থই ছিল । অনুরূপভাবে, আমরা সাধারণ ভাবে কোন Downtrend মার্কেটে Sell Entry প্রদান করে থাকি, কিন্তু Downtrend মার্কেটে Price যদি অনেক হ্রাস পেয়ে যায় তখন Sell Entry প্রদান করাটা বেশ খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়, তাই আমরা Downtrend মার্কেটের Retracement পয়েন্ট নির্ধারণ করে ঐ পয়েন্টে Sell Entry প্রদান করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করি ।

আমরা যদি নীচের Chart এ একটি Downtrend মার্কেট দেখি তাহলে দেখা যাবে যে, Price একটা নির্দিষ্ট তলানি (B পয়েন্ট) পর্যন্ত হ্রাস পেয়ে আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে, কাজেই এখন Sell Entry প্রদান করার একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে, আমরা Retracement Tool এর সাহায্যেRetracement Line অংকন করে ধারণা নিতে পারি যে, অন্ততঃপক্ষে 38.2% Retracement লেভেলে Sell Entry প্রদান করা যেতে পারে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

এবার যদি উপরোক্ত Chart এর কয়েকদিন পরের পরবর্তী অংশটুকু দেখি যে, আসলেই কি ঘটেছিল, তাহলে দেখা যাবে যে –

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart থেকে সহজেই অনুমান করতে পারছি যে, 38.2% Fibonacci লেভেলে Sell Entry প্রদান করার সিদ্ধান্তটা যথার্থই ছিল, শুধু তাই নয় আমরা যদি 50.0% Fibonacci লেভেলেও Sell Entry প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিতাম তাহলেও সিদ্ধান্তটা ভুল হতো না, সুতরাং ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement এর বিরাট অবদান রয়েছে ।

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Projection এর অবদান :

সাধারণত ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement পয়েন্ট নির্ণয় করে Uptrend মার্কেটে Buy Entry এবং Downtrend মার্কেটে Sell Entry এর অর্ডার প্রদান করা হয় । অতঃপর Fibonacci Projection পয়েন্ট নির্ণয় করে ঐ পয়েন্ট দুইটিকে ট্রেডের প্রফিট নেওয়ার জন্যTake Profit (T/P) পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয় ।

উদাহরন হিসেবে, আমরা নীচে একটি Uptrend মার্কেটের Chart দেখি, Chart এ Retracement Tool এর সাহায্যে Fibonacci Retracement লাইন টানা (অংকন করা) হয়েছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে 50.0% Retracement লেভেলে (C পয়েন্টে) Buy Entry প্রদান করা হয়েছে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

অতঃপর ট্রেডে কাংখিত লাভের যৌক্তিক পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য আমরা Fibonacci Projection টুল ব্যবহার করে Projection পয়েন্টের লাইনগুলোকে টানি এবং উপরোক্ত Chart এর কয়েকদিন পরের অংশটুকুকে দেখি –

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Chart থেকে সহজেই বোঝা যায় যে, Fibonacci Projection পয়েন্ট D1 (61.8%), D2 (100.0%) এবং D3 (161.8%) এ আমরা আমাদের কাংখিত লাভ (Profit) অর্জনের জন্য নির্ধারণ করতে পারি ।

অনুরূপভাবে, উদাহরন হিসেবে, আমরা নীচে একটি Downtrend মার্কেটের Chart দেখি, Chart এ Retracement Tool এর সাহায্যে Fibonacci Retracement লাইন টানা (অংকন করা) হয়েছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে 61.8% Retracement লেভেলে (Cপয়েন্টে) Sell Entry প্রদান করা হয়েছে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

অতঃপর ট্রেডে কাংখিত লাভের যৌক্তিক পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য আমরা Fibonacci Projection টুল ব্যবহার করে Projection পয়েন্টের লাইনগুলোকে টানি এবং উপরোক্ত Chart এর কয়েকদিন পরের অংশটুকুকে দেখি –

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Chart থেকে সহজেই বোঝা যায় যে, Fibonacci Projection পয়েন্ট D1 (38.2%), D2 (50.0%) এবং D3 (61.8%) এ আমরা আমাদের কাংখিত লাভ (Profit) অর্জনের জন্য নির্ধারণ করতে পারি ।

সুতরাং আমরা উপরের উদাহরণ দুইটি থেকে একটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারি যে, Fibonacci Projection টুল, ফরেক্স ট্রেডিং এর জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি মূল্যবান হাতিয়ার যা আমাদেরকে ট্রেডের কাংখিত লাভের (Profit) পরিমাণ সম্পর্কে যৌক্তিক পূর্বাভাস দিতে পারে । যেহেতু আমরাProjection পয়েন্টের সাহায্যে আমরা আমাদের Target সম্পর্কে অবহিত হতে পারছি, সেহেতু আমরা আমাদের ট্রেডের ঝুঁকির মাত্রাকেও (Risk Level) হিসাবের আওতায় এনে সেই অনুযায়ী ঝুঁকির পরিমাণ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারি ।

Fibonacci Extension এবং Fibonacci Projection এর মধ্যকার বিতর্কের অবসান :

আমরা জানি যে, Fibonacci Retracement এর পরিমাণ মূল ট্রেন্ডের 100% এর বেশী হলেই তাকে Fibonacci Extension বলা হয়ে থাকে । এছাড়া Fibonacci Retracement এবং Fibonacci Extension উভয়েই অস্থায়ী শক্তিশালী Support এবং Resistanceহিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে । কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে Fibonacci Extension এবং Fibonacci Projection টুল দুইটি একটি বিতর্কের সৃষ্টি করে থাকে এই অর্থে যে, উভয়কেই Take Profit এর জন্য ব্যবহার করা যায় । আমরা এই বিতর্কের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করি, নীচেরChart টিকে আমরা উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারি —

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart এ একটা Uptrend মার্কেটকে দেখতে পাচ্ছি, মার্কেটে চারটি পয়েন্ট A, B, C এবং D কে দেখতে পাচ্ছি, এই চারটি পয়েন্টকে আমরা ট্রেন্ড লাইন দ্বারা চিহ্নিত করি নীচের মত করে —

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart দেখে বলতে পারি যে, BC হচ্ছে AB এর সাপেক্ষে Retracement আর এইখানে CD এর দুইটা পরিচয় আছে এবং সেটা হল — CD হচ্ছে C বিন্দু থেকে (১) AB এর Projection আর (২) BC এর Extension অর্থাৎ, 100% এর বেশী Retracement,আমরা CD এর এই উভয় পরিচয় Extension এবং Projection এর মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ের চেষ্টা করব । প্রথমে A, B, পয়েন্ট দুইটার সাপেক্ষে Retracement পয়েন্ট C এর মান নির্ণয় করি —

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

যদিও Retracement পয়েন্ট C এর মান নির্ণয় করাটা অত্যাবশ্যক ছিল না, তবুও আমরা Retracement পয়েন্টের লাইনসমূহ থেকে জানতে পারলাম যে, C পয়েন্টটি হচ্ছে AB এর 38.2% Retracement পয়েন্ট । এবার আমরা A, B, C পয়েন্ট তিনটার সাপেক্ষে C বিন্দু থেকে ABএর Projection পয়েন্ট নির্ণয় করি —

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart এ দেখতে পাচ্ছি যে, D পয়েন্টটি C বিন্দু থেকে AB এর 150.0% Projection লেভেলের নিকটেই অবস্থান করছে । আমরা 150.0% Projection লেভেল বরাবর একটা লাল আনুভূমিক লাইন অংকন করি এবং লক্ষ্য করি এই লাল আনুভূমিক লাইনটির মান হচ্ছে1.04501

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

এবার আমরা এই লাল রঙের আনুভূমিক লাইনটিকে রেখে দিয়ে Fibonacci Projection এর লাইনগুলোকে মুছে ফেলি এবং BC এর সাপেক্ষে Fibonacci Retracement লাইনগুলো অংকন করে D পয়েন্টের অবস্থান জানার চেষ্টা করি —

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart এ দেখতে পাচ্ছি যে, D পয়েন্টটি BC এর 361.8% Retracement (Extension) লেভেলের নিকটেই অবস্থান করছে, আমরা এই 361.8% Retracement (Extension) লেভেলটিকে আরও একটি লাল আনুভূমিক লাইন দ্বারা চিহ্নিত করি এবং লক্ষ্য করি যে, 361.8% Retracement (Extension) লেভেলের মান হচ্ছে 1.04402, এবার আমরা লাল রঙের আনুভূমিক লাইন দুইটিকে রেখে দিয়ে Fibonacci Retracement এর লাইনগুলোকে মুছে ফেলি এবং লক্ষ্য করি যে, D পয়েন্টের প্রকৃত মান মূলতঃ কোন কোন মানের মধ্যে উঠানামা করছে —

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের Chart এ দেখতে পাচ্ছি যে, D পয়েন্টের মান 1.04402 থেকে 1.04501 এর মধ্যে অবস্থান করছে অর্থাৎ, উভয় মানের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে মাত্র 9.9 Pips অর্থাৎ, 10 Pips এরও কম । যেহেতু Swing Low (A) পয়েন্ট এবং Swing High (D) পয়েন্ট দুইটির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রায় 225 Pips এর কাছাকাছি কিংবা, আরও বেশী, সেহেতু Extension আর Projection টুল দ্বারা প্রাপ্ত D পয়েন্টের মান দুইটির পার্থক্য 10 Pips কে সামান্যই বলা চলে ।

আমরা ইতিপূর্বে জেনেছিলাম যে, Fibonacci Extension পয়েন্ট দিয়ে Retracement পয়েন্টের মত অস্থায়ী Support এবং অস্থায়ী Resistance লেভেলকে নির্ণয় করা হয় । আর এখন উপরের উদাহরণ থেকে বুঝতে পারলাম যে, Fibonacci Extension পয়েন্টের মান দিয়েFibonacci Projection পয়েন্টের মান নির্ণয়ের কাজটিও অনেকখানি সম্পন্ন করা যায় ।

অনেক Charting Software এবং Website এ শুধুমাত্র Fibonacci Retracement এর লাইনসমূহ অংকনের টুলটি দেওয়া থাকে অর্থাৎ, Fibonacci Projection এর টুলটি দেওয়া থাকে না, সেই ক্ষেত্রে আমরা Fibonacci Retracement লাইনসমূহ অংকন করে Extensionপয়েন্ট দ্বারা Projection পয়েন্টের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা নিতে পারি ।

আমরা উপরের উদাহরণটি শুধুমাত্র Uptrend এর ক্ষেত্রে দেখলাম, Downtrend মার্কেটের ক্ষেত্রেও একই ভাবে দেখানো যায় যে, Fibonacci Extension পয়েন্টের মান দিয়ে Fibonacci Projection পয়েন্টের মান নির্ণয়ের কাজটিও অনেকখানি সম্পন্ন করা যায় ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য কয়েকটি ওয়েব-সাইট যেমন, babypips/school এবং কিছু কিছু বই যেমন, The Truth about Fibonacci Trading ইত্যাদিতে Fibonacci Projection পয়েন্টকেই Fibonacci Extension পয়েন্ট নামে অভিহিত করে Fibonacci বিষয়-ভিত্তিক আলোচনা করা হয়েছে । কাজেই কোন পাঠক যদি ঐ নিয়মে Fibonacci বিষয়ে স্টাডি করে ট্রেডিং করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, তবে সেটাও গ্রহনযোগ্য । কিন্তু এই প্রবন্ধের (রচনার) নিয়মে লিখিত Fibonacci এর বিভিন্ন টার্মগুলো অধিকাংশ ওয়েব-সাইটে ব্যবহৃত হয়েছে ।

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci ফর্মূলা ব্যর্থ হওয়ার কারণ :

ফরেক্স ট্রেডিং এ আমরা Fibonacci Retracement টুল দ্বারা অস্থায়ী Support এবং Resistance পয়েন্ট/লেভেল নির্ণয় করে ঐ পয়েন্ট/লেভেলে Buy Entry এবং Sell Entry প্রদান করে থাকি, কিন্তু ঐ অস্থায়ী Support আর Resistance এর যদি Breakout ঘটে তাহলেFibonacci Retracement পয়েন্ট/লেভেল নির্ণয়ের কোন সার্থকতা অবশিষ্ট থাকে না, নীচে দুইটা উদাহরনের মাধ্যমে তা ব্যাখ্যা করা হল ।

Support Breakout :

ধরা যাক, কোন Uptrend মার্কেটে A পয়েন্ট থেকে Price বৃদ্ধি পেয়ে B পয়েন্টে পৌঁছেছে এবং B পয়েন্ট থেকে Price আবার হ্রাস পেতে শুরু করেছে, কাজেই এখন একটা Retracement পয়েন্ট/লেভেল আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে আর সেই কারণে আমরা Fibonacci Tool দিয়ে Retracement এর লাইনগুলো এঁকে নিলাম, লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, 38.2% Retracement পয়েন্ট/লেভেলটি একটা নির্ভরযোগ্য Support লাইনে/লেভেলে পরিণত হয়েছে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

কাজেই, আমরা Retracement পয়েন্ট/লেভেল C তে Buy Entry প্রদান করলাম এবং মার্কেট উর্ধবমুখী হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকলাম ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো যে, মার্কেট উর্ধবমুখী না হয়ে বরং নিম্নমুখী হয়েছে এবং আগের Swing Low (A) পয়েন্টকে ছাড়িয়ে অনেক নীচে চলে গিয়েছে । আমরা মূলতঃ C পয়েন্ট/লেভেলকে অস্থায়ী Support হিসেবে গণ্য করেছিলাম বলেই, C পয়েন্ট/লেভেলে Buy Entry প্রদান করেছিলাম, কিন্তু এই অস্থায়ী Support এর Breakout ঘটার কারণেই Fibonacci Retracement পয়েন্ট/লেভেল নির্ণয়ের সার্থকতা আর অবশিষ্ট থাকেনি (অর্থাৎ, মূল্যহীন হয়ে গিয়েছে) ।

Resistance Breakout :

ধরা যাক, কোন Downtrend মার্কেটে A পয়েন্ট থেকে Price হ্রাস পেয়ে B পয়েন্টে পৌঁছেছে এবং B পয়েন্ট থেকে Price আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে, কাজেই এখন একটা Retracement পয়েন্ট/লেভেল আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে আর সেই কারণে আমরাFibonacci Tool দিয়ে Retracement এর লাইনগুলো এঁকে নিলাম, লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, 50.0% Retracement পয়েন্ট/লেভেলটি একটা নির্ভরযোগ্য Resistance লাইনে/লেভেলে পরিণত হয়েছে

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

কাজেই, আমরা Retracement পয়েন্ট/লেভেল C তে Sell Entry প্রদান করলাম এবং মার্কেট নিম্নমুখী হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকলাম ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো যে, মার্কেট নিম্নমুখী না হয়ে বরং উর্ধবমুখী হয়েছে এবং আগের Swing High (A) পয়েন্টকে ছাড়িয়ে অনেক উপরে চলে গিয়েছে । আমরা মূলতঃ C পয়েন্ট/লেভেলকে অস্থায়ী Resistance হিসেবে গণ্য করেছিলাম বলেই C পয়েন্টে Sell Entry প্রদান করেছিলাম, কিন্তু এই অস্থায়ী Resistance এর Breakout ঘটার কারণেই Fibonacci Retracement পয়েন্ট/লেভেল নির্ণয়ের সার্থকতা আর অবশিষ্ট থাকেনি (অর্থাৎ, মূল্যহীন হয়ে গিয়েছে) ।

লেখক: নাসিম

সুত্র: বিডিপিপস

Fibonacci এর ইতিহাস ও শিক্ষা

Fibonacci এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি :

আমরা যারা উচ্চতর গণিতিক বিষয়ে কম-বেশী পড়াশোনা করেছি কিংবা, ফরেক্স ট্রেডিং ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের প্রায় সবাই “Fibonacci” শব্দটির সাথে পরিচিত । প্রকৃতপক্ষে, “Fibonacci” হচ্ছে একজন বিখ্যাত গণিতবিদের নাম, তার জন্ম-স্থান হচ্ছে ইউরোপের ইটালীতে, পুরো নাম “Leonardo Pisano (Fibonacci)” এবং জীবনকাল ১১৭০ সন হতে ১২৫০ সন ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

এই বিখ্যাত গণিতবিদের একটা যুগান্তকারী গাণিতিক ধারা / সিরিজ বিগত ৮০০ বছর ধরে বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, কৃষিবিদসহ বিভিন্ন পেশার গবেষকদের নিকট গবেষণার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, যা “Fibonacci Series” নামে পরিচিত । ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci ধারা/সিরিজ কেন এবং কিভাবে ব্যবহৃত হয়, তা জানার আগে সংক্ষেপে Fibonacci ধারা/সিরিজ সম্পর্কে কিছু জেনে নেই ।

Fibonacci ধারা/সিরিজের প্রচলন :

Fibonacci এর জন্ম ইউরোপের ইটালীতে হলেও তার বাবা একজন উচ্চপদস্থ রাষ্ট্রীয় দূত হওয়ার কারণে বাবার সাথে Fibonacci পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন এবং সেই সমস্ত দেশে গণিতের ব্যাপক লাভজনক ব্যবহার তিনি প্রত্যক্ষ করেন । প্রায় ১২০০ সালের দিকে Fibonacci তার সমস্ত ভ্রমণ শেষ করে দেশে ফিরে যান এবং গণিতের সেই সকল লাভজনক ব্যবহারের উপর বেশ কয়েকটি মূল্যবান বই রচনা করেন, তন্মধ্যে একটি বইয়ের নাম ছিল “Liber Abbaci”, এই বইয়ের তৃতীয় খন্ডে তিনি পাঠকদের উদ্দেশ্যে একটা গাণিতিক প্রশ্ন উপস্থাপন করেন, প্রশ্নটি ছিল এই রকম –

“ধরা যাক, একজন ব্যক্তি একটা দেয়াল-ঘেরা স্থানে এক জোড়া শিশু খরগোশ লালন-পালনের উদ্দেশ্যে রেখে দিল, তাহলে প্রতি বছর কত জোড়া করে খরগোশ ঐ প্রারম্ভিক এক জোড়া থেকে উৎপাদিত হবে, ধরে নেওয়া যায় যে, প্রতি মাসে প্রতি জোড়া খরগোশ এক জোড়া করে নতুন খরগোশ উৎপাদন করবে এবং প্রত্যেক নতুন জোড়া খরগোশ পরবর্তী মাস থেকে এক জোড়া করে নতুন খরগোশ উৎপাদনে করবে ?”

এই প্রশ্নের উত্তর নির্ণয় করতে বলা হয়েছিল যে, এই গাণিতিক ধারাটি ( ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯, . . . . . ) ব্যবহার করতে যেখানে প্রতিটি সংখ্যা আগের দুইটি সংখ্যার যোগফল হিসেবে নির্ণয় করা হয়েছে । উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশে ফার্মের মুরগীর মত বিশ্বের অনেক দেশেই আমিষের চাহিদা মেটাতে ফার্ম-হাউসে ব্যাপক ভাবে খরগোশ লালন-পালন করা হয় ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরে যে গাণিতিক ধারাটি প্রত্যক্ষ করলাম অর্থাৎ, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯, ১৪৪, . . . . . এটিই হচ্ছে সেই বিখ্যাত Fibonacci ধারা/সিরিজ, এই সিরিজটি ভালভাবে লক্ষ্য করা দেখা যাবে প্রথম সংখ্যাটি বাদ দিলে প্রতিটি সংখ্যা আগের দুইটা সংখ্যার যোগফল, যেমন, (০+১=), (১+১=), (১+২=), (২+৩=), (৩+৫=), (৫+৮=১৩), (৮+১৩=২১), (১৩+২১=৩৪), (২১+৩৪=৫৫), (৩৪+৫৫=৮৯), (৫৫+৮৯=১৪৪), . . . . . প্রভৃতি ।

প্রকৃতিতে Fibonacci ধারা/সিরিজের উদাহরণ :

প্রকৃতপক্ষে, Fibonacci ধারা/সিরিজের ব্যবহার শুধুমাত্র খরগোশ কিংবা, গরু-ছাগলের সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রকৃতিতে এই ধারা /সিরিজের ব্যবহার ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে আছে, নীচের দুইটি উদাহরন থেকে আমরা তা বুঝতে পারি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের চিত্রটি থেকে আমরা দেখতে পাই যে, গাছের ডালপালা (Branches) ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে যে সংখ্যা/ধারা/সিরিজ অনুসরণ করে বৃদ্ধি পেতে থাকে তা মূলতঃ হুবহু Fibonacci ধারা/সিরিজের অনুলিপি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

অনুরূপভাবে, উপরের চিত্রটি থেকে আমরা দেখতে পাই যে, গাছের পাতা (Leaves) ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে যে সংখ্যা/ধারা/সিরিজ অনুসরণ করে বৃদ্ধি পেতে থাকে তাও মূলতঃ হুবহু Fibonacci ধারা/সিরিজের অনুলিপি ।

Fibonacci ধারা/সিরিজের বৈশিষ্ট্য (গুণ) :

আপাত দৃষ্টিতে Fibonacci ধারা/সিরিজকে খুবই সাধারণ একটি গাণিতিক ধারা মনে হলেও এটি প্রকৃতপক্ষে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি গাণিতিক ধারা/সিরিজ । এই Fibonacci ধারা বা সিরিজের মূল বৈশিষ্ট্য (গুণ) লুকিয়ে রয়েছে এই ধারার সংখ্যাগুলোর মধ্যে আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি এবং হ্রাসের মধ্যে, নীচে সংক্ষেপে এর উদাহরণ দেওয়া হল ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা উপরের ভাগফলগুলোর দিকে লক্ষ্য করে অনুধাবন করতে পারি যে, Fibonacci ধারার সংখ্যাগুলো ঐ ধারার আগের এবং পরের সংখ্যাগুলো থেকে একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং হ্রাস পেয়েছে । অনুরূপভাবে, আমরা Fibonacci ধারার সংখ্যাগুলোকে ঐ ধারার এক ধাপ আগের এবং এক ধাপ পরের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করে দেখতে পাই –

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

সুতরাং, আমরা একই ভাবে উপরের ভাগফলগুলো থেকে অনুধাবন করতে পারি যে, Fibonacci ধারার সংখ্যাগুলোর মধ্যে বিশেষ আনুপাতিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে । আমরা যদি Fibonacci অনুপাতগুলোকে নীচের Table এর মত করে ধারাবাহিক ভাবে লিখে যাই তাহলে দেখা যাবে যে,Fibonacci ধারার সংখ্যাগুলো বৃদ্ধির সাথে সাথে অনুপাতগুলো নির্দিষ্ট মানের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

আমরা এই ভাবে Fibonacci ধারার সংখ্যাগুলোর মধ্যে বিদ্যমান অনুপাতগুলো নির্ণয় করে যে সকল মান পাই সেগুলো হলো ০.২৩৬, ০.৩৮২, ০.৬১৮, ১.০০০, ১.৬১৮, ২.৬১৮, ৪.২৩৬, . . . . , প্রভৃতি । তবে Fibonacci অনুপাতগুলোর মধ্যে আরও কিছু অনুপাত যোগ করা হয়েছে, যেমন,উদাহরন হিসেবে ০.৫০০ এর কথা বলা যেতে পারে, এই ০.৫০০ অনুপাতটি নির্ণয় করা হয়েছে মূলতঃ দুইটি মূল অনুপাত ০.৩৮২ এবং ০.৬১৮ এর সরল গড় নির্ণয় করে । আর এই সমস্ত গড় নির্ণয়ের মূল কারণ হল এই যে, এই গড়গুলোও Fibonacci অনুপাত হিসেবে বাস্তবে ভাল কাজ করে ।

উপরে লিখিত Fibonacci ধারার সংখ্যাগুলোর মধ্যে বিদ্যমান অনুপাতগুলোকে কাজে লাগিয়ে ফরেক্স/স্টক ট্রেডিং এ মার্কেটের সম্ভাব্য পরবর্তী অবস্থান সম্পর্কে Forecast করা হয় (আনুমানিক ভবিষ্যত মূল্য নির্ধারণ করা হয়) এবং সেই অনুযায়ী Buy এবং Sell এর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় । এই উদ্দেশ্যে কয়েকটি অনুপাতকে Fibonacci Retracement এর জন্য এবং কয়েকটি অনুপাতকে Fibonacci Extension এর জন্য ব্যবহার করা হয় । উল্লেখ্য যে, Fibonacci Extensionএর অনুপাতগুলোকে Fibonacci Projectionএর মান নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয় 

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

Fibonacci Golden Mean / Ratio :

Fibonacci অনুপাতগুলোর মধ্যে 0.618 এবং 1.618 হচ্ছে একটি আরেকটির বিপরীত অর্থাৎ, উভয়ের গুনফল হচ্ছে 1, এই 0.618 এবং 1.618 অনুপাত দুইটাকে Fibonacci Golden Mean / Ratio বলা হয় । প্রাকৃতিকভাবে এই অনুপাত দুইটা সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ,এই দুইটি অনুপাতে কোন বস্তুর হ্রাস এবং বৃদ্ধি বেশী ঘটে থাকে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

তবে অন্যান্য Fibonacci অনুপাতগুলোকেও (যেমন, 0.382, 2.618, . . . প্রভৃতি) অনেক বিশেষজ্ঞ Golden Mean / Ratio বলে থাকেন যেহেতু Fibonacci ধারার পরবর্তী বা, পূর্ববর্তী সংখ্যাগুলোকে ঐ ধারার একধাপ/দুইধাপ পূর্ববর্তী বা, পরবর্তী সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে বারংবার একই অনুপাত পাওয়া যায় ।

Fibonacci অনুপাতগুলোর সাথে মানব জাতির সম্পর্ক :

শুধুমাত্র Fibonacci সংখ্যা নয়, বরং Fibonacci অনুপাতগুলোর সাথেও প্রকৃতির বহু ক্ষেত্র তথা মানুষের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে । আমরা যদি একজন গড় উচ্চতার মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের সাথে সম্পূর্ণ শরীরের তুলনা করি, তাহলে দেখতে পাবো যে, Fibonacci অনুপাতগুলো দ্বারা একজন গড় উচ্চতার মানুষের গাঠনিক কাঠামোর বর্ণনা দেওয়া সম্ভব ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

Fibonacci অনুপাতগুলোকে শুধুমাত্র মানুষের দৈহিক গঠনেই নয়, বরং মানুষের পারস্পরিক লেনদেন, ব্যাকিং কার্যক্রম, স্টক মার্কেট, ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়, আর এই কারণেই ফরেক্স ট্রেডিং মার্কেটে Fibonacci ফর্মূলার ব্যাপক প্রয়োগ দেখা যায় ।

Retracement দ্বারা কি বোঝানো হয় ?

ইংরেজীতে Retrace শব্দটির অর্থ হচ্ছে “ফিরে যাওয়া”, অর্থাৎ, যেখান থেকে কোন বস্তুর আগমন ঘটে, সেখানেই ফিরে যাওয়াকে Retrace বলা হয় । অতএব Retracement মানে হচ্ছে ফিরে যাওয়ার কাজ (প্রত্যাবর্তন) ।

কোন ট্রেডিং মার্কেট যখন নীচের দিক থেকে উঠে উপরের দিকে Uptrend এ চলতে থাকে তখন মার্কেট একেবারে খাঁড়া উপরের দিকে উঠে যায় না, বরং উত্থানের সময় মার্কেট বারংবার কিছুটা করে নীচের দিকে ফিরে আসে এবং তারপর আবার উপরে উঠা অব্যাহত রাখে, মার্কেটের উত্থানের সময় এভাবে বারংবার নীচে ফিরে আসাকে Retracement বলা হয়, আমরা নীচের Figure টি লক্ষ্য করি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Figure টি লক্ষ্য করলে আমরা বুঝতে পারবো যে, মার্কেট Uptrend এ চলার সময় B পয়েন্ট থেকে কিছু পরিমাণে হ্রাস পেয়ে C পয়েন্টে ফিরে আসার পর পুনরায় Uptrend এর পথে চলা অব্যাহত রেখেছে, Uptrend এ চলার পথে এই ভাবে Downtrend এর দিকে ফিরে আসাকেRetracement বলা হয় ।

অনুরূপভাবে, কোন ট্রেডিং মার্কেট যখন উপরের দিক থেকে নেমে নীচের দিকে Downtrend এ চলতে থাকে তখন মার্কেট একেবারে খাঁড়া নীচের দিকে নেমে যায় না, বরং পতনের সময় মার্কেট বারংবার কিছুটা করে উপরের দিকে ফিরে যায় এবং তারপর আবার নীচে নামা অব্যাহত রাখে, মার্কেটের পতনের সময় এভাবে বারংবার উপরে ফিরে যাওয়াকে Retracement বলা হয়, আমরা নীচের Figure টি লক্ষ্য করি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Figure টি লক্ষ্য করলে আমরা বুঝতে পারবো যে, মার্কেট Downtrend এ চলার সময় B পয়েন্ট থেকে কিছু পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে C পয়েন্টে ফিরে যাওয়ার পর পুনরায় Downtrend এর পথে চলা অব্যাহত রেখেছে, Downtrend এ চলার পথে এই ভাবে Uptrend এর দিকে ফিরে যাওয়াকে Retracement বলা হয় ।

Fibonacci Retracement এর ফর্মূলাতে Retracement এর অনুপাত প্রয়োগ করে Uptrend এবং Downtrend উভয় মার্কেটের ক্ষেত্রেই পয়েন্টের অবস্থান সম্পর্কে আনুমানিক ধারণা তৈরী করা যায় ।

Extension দ্বারা কি বোঝানো হয় 

ইংরেজীতে Extension শব্দটির অর্থ হচ্ছে “বর্ধিতকরণ”, অর্থাৎ, কোন বস্তু কিংবা, কোন কাজকে বৃদ্ধি করাকেই Extension বলা হয় ।

আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি যে, কোন ট্রেডিং মার্কেট যখন Uptrend এ চলতে থাকে তখন Retracement এর কারণে কিছুটা নেমে মার্কেট আবার উর্ধবমুখী হয় এবং এই Retracement এর পরিমাণ যদি 100.0% এর বেশী হয় তখন একে Extension বলা হয়, নীচের Figure টি লক্ষ্য করি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Figure টি লক্ষ্য করলে আমরা বুঝতে পারবো যে, মার্কেট Uptrend এ চলার সময় B পয়েন্ট থেকে AB এর পরিমাণের (100.0%) অপেক্ষা অধিক পরিমাণ হ্রাস পেয়ে C পয়েন্টে ফিরে এসেছে এবং অতঃপর পুনরায় Uptrend এর পথে চলা অব্যাহত রেখেছে, Uptrend এ চলার পথে এই ভাবে 100.0% এর চেয়ে বেশী Downtrend এর দিকে ফিরে আসাকে Extension বলা হয় ।

অনুরূপভাবে, কোন ট্রেডিং মার্কেট যখন Downtrend এ চলতে থাকে তখন Retracement এর কারণে কিছুটা উঠে মার্কেট আবার নিম্নমুখী হয় এবং এই Retracement এর পরিমাণ যদি 100.0% এর বেশী হয় তখন একে Extension বলা হয়, নীচের Figure টি লক্ষ্য করি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Figure টি লক্ষ্য করলে আমরা বুঝতে পারবো যে, মার্কেট Downtrend এ চলার সময় B পয়েন্ট থেকে AB এর পরিমাণের (100.0%) অপেক্ষা অধিক পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে C পয়েন্টে ফিরে গিয়েছে এবং অতঃপর পুনরায় Downtrend এর পথে চলা অব্যাহত রেখেছে, Downtrend এ চলার পথে এই ভাবে 100.0% এর চেয়ে বেশী Uptrend এর দিকে ফিরে যাওয়াকে Extension বলা হয় ।

Fibonacci Retracement এর ফর্মূলাতে Extension এর অনুপাত প্রয়োগ করে Uptrend এবং Downtrend উভয় মার্কেটের ক্ষেত্রেই পয়েন্টের অবস্থান সম্পর্কে আনুমানিক ধারণা তৈরী করা যায় ।

Projection দ্বারা কি বোঝানো হয় 

ইংরেজীতে Projection শব্দটির অর্থ হচ্ছে “নিরীক্ষাপূর্বক অনুমানকরণ”, অর্থাৎ, কোন বস্তুর ভবিষ্যত মান অথবা, মূল্যকে হিসাব নিরীক্ষণের মাধ্যমে অনুমান (নির্ণয়) করাকেই Projection বলা হয় ।

কোন ট্রেডিং মার্কেট যখন Uptrend এর দিকে চলতে থাকে তখন স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী Retracement এর কারণে কিছুটা হ্রাস পেয়ে মার্কেট আবার উর্ধবমুখী হয়, কিন্তু Retracement এর পরে মার্কেট কতটুকু Uptrend এ যেতে পারে তা হিসাব নিকাশ করে অনুমান করা হয় এবং এই বিজ্ঞান-ভিত্তিক অনুমান করার কাজটিকেই Projection বলা হয়, নীচের Figure টি লক্ষ্য করি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Figure টি লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে, মার্কেট Uptrend এ যাচ্ছে এবং Retracement এর কারণে C পয়েন্টে নেমে এসে মার্কেট আবার উর্ধবমুখী হয়েছে এবং D পয়েন্ট পর্যন্ত উপরে চলে গিয়েছে । এভাবে C পয়েন্ট থেকে D পয়েন্টে চলে যাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণের কাজটিকেই Projection বলা হয় ।

অনুরূপভাবে, কোন ট্রেডিং মার্কেট যখন Downtrend এর দিকে চলতে থাকে তখন স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী Retracement এর কারণে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে মার্কেট আবার নিম্নমুখী হয়, কিন্তু Retracement এর পরে মার্কেট কতটুকু Downtrend এ যেতে পারে তা হিসাব নিকাশ করে অনুমান করা হয় এবং এই বিজ্ঞান-ভিত্তিক অনুমান করার কাজটিকেই Projection বলা হয়, নীচের Figure টি লক্ষ্য করি ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

উপরের Figure টি লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে, মার্কেট Downtrend এ যাচ্ছে এবং Retracement এর কারণে C পয়েন্ট পর্যন্ত উঠে মার্কেট আবার নিম্নমুখী হয়েছে এবং D পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে চলে এসেছে । এভাবে C পয়েন্ট থেকে D পয়েন্টে চলে আসার পরিমাণ নির্ধারণের কাজটিকেই Projection বলা হয় ।

Fibonacci Projection এর ফর্মূলাতে Extension এর অনুপাত প্রয়োগ করে Uptrend এবং Downtrend উভয় মার্কেটের ক্ষেত্রেই পয়েন্টের অবস্থান সম্পর্কে আনুমানিক ধারণা তৈরী করা যায় ।

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement পয়েন্ট নির্ণয়ের যৌক্তিকতা :

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Retracement পয়েন্ট যে সকল কারণে নির্ণয় করা প্রয়োজন তা নীচে প্রকাশ করা হলো –

() ফরেক্স ট্রেডিং এ ট্রেডারদের মূল লক্ষ্য থাকে নির্ভরযোগ্য Support এবং Resistance লেভেল খুঁজে বের করা, যেহেতু ঐ দুই লেভেলেই নির্ভরযোগ্য ভাবে Buy Entry এবং Sell Entry প্রদান করা যায় । অভিজ্ঞ ট্রেডাররা সাধারণত Uptrend এবং Downtrend মার্কেটেRetracement পয়েন্টকে যথাক্রমে অস্থায়ী Support এবং অস্থায়ী Resistance হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন এবং ঐ দুই পয়েন্টে যথাক্রমে Buy Entry এবং Sell Entry প্রদান করে থাকেন ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

() সমগ্র বিশ্বে যখন একযোগে ট্রেড চলতে থাকে, তখন লক্ষ-লক্ষ ট্রেডার Fibonacci টুলস ব্যবহার করে Uptrend এবং Downtrend মার্কেটের Retracement পয়েন্ট নির্ণয় করে ঐ পয়েন্টে একযোগে Buy Entry এবং Sell Entry প্রদান করে থাকেন এবং অত্যধিক Buy Entry এবং Sell Entry এর চাপে স্বাভাবিক নিয়মেই Uptrend এবং Downtrend মার্কেটে Retracement পয়েন্টের পরে দাম বৃদ্ধি এবং হ্রাস পাওয়া শুরু হয়ে যায়, ফলে Uptrend এবং Downtrend মার্কেটের Retracement পয়েন্ট তখন নির্ভরযোগ্য Support এবংResistance হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।

() সাধারণ ভাবে ট্রেডাররা Uptrend মার্কেটে Retracement পয়েন্টের কিছু নীচে এবং Downtrend মার্কেটের Retracement পয়েন্টের কিছু উপরে Stop Loss সেট করে থাকেন । তবে, ট্রেডাররা Uptrend মার্কেটে Retracement পয়েন্টের চেয়ে কিছু উঁচুতে Buy Entry এবং Downtrend মার্কেটে Retracement পয়েন্টের চেয়ে কিছু নীচুতে Sell Entry প্রদান করলে, ট্রেডাররা Retracement পয়েন্টকে তখন Stop Loss সেট করার জন্য ব্যবহার করে থাকেন ।

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Extension পয়েন্ট নির্ণয়ের যৌক্তিকতা 

আমরা জানি যে, Fibonacci Retracemnent এরই এক বিশেষ রূপ হচ্ছে Fibonacci Extension, কারণ, Fibonacci Retracement এর পরিমাণ 100.0% এর বেশী হলেই Fibonacci Retracement কে Fibonacci Extension বলা হয় । এছাড়া Fibonacci Retracement এর ফর্মূলা অথবা, টুল দিয়েই Fibonacci Extension এর মান নির্ণয় করা যায় । Fibonacci Extension এর মান নির্ণয় করার জন্য Fibonacci Retracement এর ফর্মূলাতে Fibonacci Extension এর অনুপাত ব্যতীত অন্য কোন ফর্মূলা কিংবা, টুলের প্রয়োজন হয় না । কিন্তু তারপরেও কিছু বিশেষ কারণে Fibonacci Extension পয়েন্টের মান নির্ণয় করাটা জরুরী এবং তার কারণ নীচে উল্লেখ করা হল —

(১) সাধারণ ভাবে Fibonacci Extension পয়েন্টে Uptrend মার্কেটের ক্ষেত্রে শক্তিশালী Support লেভেল এবং Downtrend মার্কেটের ক্ষেত্রে শক্তিশালী Resistance লেভেলের আবির্ভাব ঘটে থাকে ।

(২) যেহেতু Retracement এর পরিমাণ অপেক্ষা Extension এর পরিমাণ বেশী হয়ে থাকে সেহেতু অনেক ট্রেডারই বাস্তব-ক্ষেত্রে Fibonacci Extension পয়েন্টকে Take Profit পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন । অনেক ক্ষেত্রে Fibonacci Extension পয়েন্টের মান দিয়েFibonacci Projection পয়েন্টের মানকে যাচাই করা হয়, অর্থাৎ, উভয় মানকে ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য Projection পয়েন্ট নির্ণয় করা হয় ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Projection পয়েন্ট নির্ণয়ের যৌক্তিকতা :

ফরেক্স ট্রেডিং এ Fibonacci Projection পয়েন্ট যে সকল কারণে নির্ণয় করা প্রয়োজন তা নীচে প্রকাশ করা হলো –

() সাধারণত ট্রেডাররা Uptrend এবং Downtrend মার্কেটের Retracement পয়েন্টে Buy Entry এবং Sell Entry প্রদান করার পর Fibonacci Projection Tool ব্যবহার করে Projection পয়েন্ট নির্ণয় করে ঐ পয়েন্টটিকে Take Profit এর জন্য ব্যবহার করে থাকেন ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

() যেহেতু সমগ্র বিশ্বে অসংখ্য ট্রেডার Fibonacci Projection পয়েন্টকে Take Profit এর জন্য একযোগে ব্যবহার করেন সেহেতু Fibonacci Projection পয়েন্টে সাধারণত Reversal Trend এর আবির্ভাব ঘটে ।

Swing Low এবংSwing Highবলতে কি বোঝায় ?

যখন কোন Candlestick এর Low এর মান, ঐ Candlestick এর আগের এবং পরের Candlestick এর Low এর মান অপেক্ষা কম থাকে তখন ঐ Candlestick এর Low এর মানটিকেই Swing Low বলা হয়, নীচের ছবিতে Swing Low কে চিহ্নিত করা হয়েছে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

অনুরূপভাবে, যখন কোন Candlestick এর High এর মান, ঐ Candlestick এর আগের এবং পরের Candlestick এর High এর মান অপেক্ষা বেশী থাকে তখন ঐ Candlestick এর High এর মানটিকেই Swing High বলা হয়, নীচের ছবিতে Swing High কে চিহ্নিত করা হয়েছে ।

ছবি পোস্ট করা হয়েছে

নির্ভূলভাবে Fibonacci Retracement পয়েন্ট, Fibonacci Extension পয়েন্ট এবং Fibonacci Projection পয়েন্ট নির্ণয়ের জন্য সঠিক Swing High পয়েন্ট এবং সঠিক Swing Low পয়েন্টকে চিহ্নিত করা একান্তই জরুরী ।

লেখক: নাসিম

সুত্র: বিডিপিপস

ফলস ব্রেক আউট

ফলস ব্রেক আউটঃ

রিয়েল টাইম চার্ট দেখার সময় অনেক সময় মনে হবে সাপোর্ট অথবা রেজিস্টেন্স ভেঙ্গে গেছে কারণ আপনি দেখতে পাচ্ছেন, প্রাইজ সাপোর্ট বা রেজিস্টেন্স ভেদ করে নীচে বা উপরে চলে যাচ্ছে বা গেছে। অথচ কিছু সময় পরে চার্টের দিকে তাকালে দেখি, প্রাইজ ক্লোজ হয়েছে, সাপোর্ট (বা রেজিস্টেন্স)-এর উপরে (বা নীচে).  অর্থাৎ আসলে সাপোর্ট বা রেজিস্টেন্স সত্যিকার অর্থে ভাঙ্গেনি। একে ফলস ব্রেক আউট বলে। অনেকেই এরকম ফলস ব্রেক আউটে ট্রেড নিয়ে বিপদে পড়েন। এই পরিস্থিতি বহুলাংশে (৮০% সময়) এড়ানো যাবে যদি ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের সাথে সাথে আপনিলাইন চার্টে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স লাইন গুলি হোল্ড করছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখেন। প্লিজ নোট করুন যে এটি খুব কাজে দেয়, এক সেকেন্ডের একটি ক্লিকে আপনি এটি দেখে নিতে পারেন। অথচ, ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট নিয়ে বেশীরভাগ ট্রেডারেরা এত ব্যস্ত থাকে যে এই সামান্য কাজটি করে ‘লাইন চার্টে’ সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স হোল্ড করছে কিনা সেটা দেখতে ভুলে যায়।

Picture5
তাহলে যখন ফলস ব্রেক আউট হয় তখন কি বুঝতে হবে? বুঝতে হবে যে, মার্কেট আসলে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স রিটেষ্ট করতে (ছুঁতে) আসছিল, ভাঙ্গতে (ব্রেক আউট) আসেনি। চিত্রে দেখুন।

 

কিভাবে বুঝবো সত্যিই সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স ভেঙ্গে গেছে কিনা?

যদি পরপর দু’টি টাইম ফ্রেমে অর্থাৎ প্রথমে ১-ঘন্টা ও পরে ৪-ঘন্টায় প্রাইজ সাপোর্টের নীচে বা রেজিস্টেন্সের উপরে ক্লোজ হয়, তাহলে মনে করা যাবে যে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স ভেঙ্গে ব্রেক আউট হয়েছে। যারা লম্বা টাইম ফ্রেমে ট্রেড করেন অর্থাৎ সাধারনত যাদের ট্রেড সময়কাল ৭ দিন বা তার বেশী তাদের ১-ঘন্টা ও ৪-ঘন্টা সহ ডেইলি বারের ক্লোজ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।

সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স ও ব্রেক আউট সম্পর্কে যেগুলি জানা থাকা ভালোঃ

যতবেশী বার প্রাইজ কোন সাপোর্ট বা রেজিস্টেন্স ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যাবে সেই সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স তত শক্তিশালী। অর্থাৎ ভাঙ্গা কঠিন। কিন্তু যদি ভাঙ্গে তাহলে তত তীব্র বেগে উপরে বা নীচে যাবে।

যখন প্রাইজ রেজিস্টেন্স ভাঙ্গে, তখন সেই রেজিস্টেন্স পরবর্তি লেভেলের জন্য সাপোর্ট হয়ে যায় (অনেকটা “দুই তালার ছাদের উপরই হচ্ছে তিন-তলার মেঝে”-এ রকম ব্যাপার).  তেমনি সাপোর্ট ভেঙ্গে নীচে নামলে সেটি পরের স্তরের রেজিস্টেন্স হয়ে যায়।
Picture1 (1)
 

চিত্রটিতে মেজর (শক্তিশালী) ও মাইনর (তেমন শক্তিশালী নয়) সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স গুলি লক্ষ্য করুন। যেকোন চার্ট খুলে নিয়ে আপনি যদি কিছুটা প্রাক্টিস করেন তাহলে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স অঞ্চল গুলি সহজেই চিহ্নিত করতে পারবেন।

ক্রস কারেন্সি পেয়ার কি?

ফরেক্সে মেজর কারেন্সি পেয়ারগুলো হচ্ছে ডলার বেইজড। যেমনঃ EUR/USD, GBP/USD, USD/JPY, AUD/USD ইত্যাদি। লক্ষ্য করুন, এগুলোর প্রত্যেকটিতেই কিন্তু দুটো কারেন্সির একটি হচ্ছে ডলার (USD)

যখন একটি কারেন্সি পেয়ারের দুটো কারেন্সির কোনটিই ডলার নয়, তখন তাকে বলা হয় ক্রস কারেন্সি পেয়ার বা কারেন্সি ক্রস পেয়ার। অনেকে, আদর করে শুধু ক্রস নামেও ডাকে।

একটা সময় ছিল যখন একটি কারেন্সির বিপরীতে ডলার ছাড়া সরাসরি আরেকটি কারেন্সি ট্রেড করা যেতো না। উদাহরনস্বরূপ, ইউরোকে পাউন্ডে কনভার্ট করতে হলে প্রথমে একে ডলারে কনভার্ট করতে হতে (EUR/USD এর রেট অনুসারে) এবং তারপর আবার ডলারকে পাউন্ডে (GBP) রুপান্তরিত করতে হত। (GBP/USD এর রেট অনুসারে)। .ক্রস কারেন্সি পেয়ার চলে আসায় এখন আর এই ঝামেলা রইল না। চাইলেই আপনি ইউরোকে পাউন্ড অথবা অন্য কোন মুদ্রায় রূপান্তরিত করতে পারবেন।

কয়েকটি জনপ্রিয় ক্রস কারেন্সি পেয়ারঃ EUR/JPY, GBP/JPY, EUR/GBP ইত্যাদি।

ক্রস কারেন্সি পেয়ারের সুবিধা কি?

ক্রস কারেন্সি পেয়ারগুলো চলে আসায় অনেক সুবিধা হয়েছে ফরেক্স ট্রেডারদের।

প্রথমত, আপনি এখন অনেক বেশি কারেন্সি পেয়ার ট্রেড করতে পারছেন। সাতটা ডলার বেইজড পেয়ারের ক্রস কারেন্সি পেয়ার হতে পারে ২১ টি, মানে মোট ২৮ টি। ডলার বেইজড পেয়ার যত বাড়বে, ক্রস কারেন্সি পেয়ারও তত বাড়বে।

ধরুন, আপনার ট্রেডিং সিস্টেম ডলার বেইজড পেয়ারগুলোর জন্য কোন সিগন্যাগ দিচ্ছে না কিন্তু কোন একটি ক্রস পেয়ারে শক্তিশালী সিগন্যাল দিচ্ছে। তাহলে, আপনি বেকার না বসে থেকে ওই কারেন্সি পেয়ারটি ট্রেড করতে পারেন।

দ্বিতীয়ত, কোন কারেন্সিটি বেশি শক্তিশালী তা বের করা

আসলাম শুভ্রকে এটাই দেখতে বলেছিল। চলুন দেখি কি সেটা।

ধরুন, EUR/USD এবং GBP/USD, দুটি পেয়ারই বাই সিগন্যাল দেখাচ্ছে। তার মানে, দুটোই বাড়বে। কিন্তু, কোন পেয়ারটি বেশি বাড়তে পারে? তার একটা ধারনা পাওয়া যায় যদি আপনি EUR/GBP পেয়ারটির দিকে তাকান।

যদি EUR/GBP আগের থেকে শক্তিশালী হয় বা বৃদ্ধি পায়, তার মানে, EUR, GBP বা পাউন্ড থেকে শক্তিশালী এই মুহূর্তে। তাই, EUR/USD , GBP/USD থেকে বেশি বাড়তে পারে।

আর যদি EUR/GBP আগের থেকে দুর্বল হয়, তার মানে GBP, EUR থেকে বেশি শক্তিশালী হচ্ছে যার মানে, GBP/USD বাই দেয়া শ্রেয়।

এভাবে ক্রস পেয়ার ব্যবহার করে দুটো মেজর কারেন্সির মধ্যে তুলনামূলক বেশি কোনটি শক্তিশালি তা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। বলার অপেক্ষা রাখে না, আপনি যদি কোন পেয়ার ট্রেড করবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে থাকেন, তাহলে ক্রস কারেন্সি পেয়ার সেক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

তৃতীয়ত,

ধরুন, আপনি মনে করছেন আজকে ইউরো দুর্বল হবে কেননা ইউরো জোন থেকে একের পর এক দুঃসংবাদ আসছে। অপরদিকে, যুক্তরাজ্য সুদের হার মাত্র বৃদ্ধি করল, মানে নিঃসন্দেহেই শক্তিশালী হবে পাউন্ড। সেক্ষেত্রে, EUR/USD অথবা GBP/USD ট্রেড করা থেকে কিন্তু সরাসরি EUR/GBP সেল দেয়াই ভালো। কারন, ডলার শক্তিশালী নাকি দুর্বল হবে, তা আপনি জানেন না। এক্ষেত্রে, EUR/GBP ট্রেড করলে, ডলারের মুল্য পরিবর্তন আপনার ট্রেডকে তেমন একটা প্রভাবিত করবে না।

অনেকেই, তাই নিউজ ইফেক্ট পরিহার করার জন্য, নিউজকালীন সময়ে ক্রস কারেন্সি পেয়ার ব্যবহার করেন।