১. ক্রমবর্ধমান তরঙ্গ- এই তরঙ্গসমূহ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এরা ছোট ছোট উপ-তরঙ্গ দ্বারা গঠিত যা সহজেই দৃশ্যমান।
কারেক্টিভ তরঙ্গের গঠন জটিল প্রকৃতির হয়। এদের ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারেঃ
সমানঃ
এই কখগ ধাপ ৩-৩-৫ পর্যায় মেনে গঠিত হয় যেখানে তিনটি তরঙ্গই সমান দৈর্ঘ্যের।
অনিয়মিতঃ
এই কখগ ধাপ ৩-৩-৫ পর্যায় মেনে গঠিত হয় যেখানে খ তরঙ্গ ক তরঙ্গকে ছাড়িয়ে যায় এবং গ তরঙ্গ ক তরঙ্গের কাছে (বা নিচে) শেষ হয়।
অনুভূমিক ত্রিভুজঃ
৫-তরঙ্গের ত্রিভুজ আকৃতি ৩-৩-৩-৩-৩ এর ছোট তরঙ্গ মিলে গঠিত হয়। সাধারণত এই ত্রিভুজগুলো ৪র্থ ইম্পালসিভ তরঙ্গে গঠিত হয়।
দ্বিগুণ তিন তরঙ্গের উদাহরণঃ
উপরোক্ত ছবিতে বড় তরঙ্গকে কখগ দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে। প্রতিটি বড় তরঙ্গই ছোট ছোট তরঙ্গ দ্বারা গঠিত। এই ছোট বা মধ্যম তরঙ্গকে অআই দ্বারা চিহ্নিত করতে হয়।
তিনগুন তিনঃ (Triple Three)
এই কখগ-X-কখগ-X-কখগ ধাপ যেকোন তিনটি ধাপে (আঁকাবাঁকা, সমান, অনিয়মিত অথবা ত্রিভুজ) গঠিত হয় এবং দুইটি X তরঙ্গ দ্বারা সংযুক্ত থাকে।
তিনগুন তিন তরঙ্গের উদাহরণঃ
সবসময় ইলিয়ট তরঙ্গের ধাপসমূহের ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। কিন্তু যদি কখন আটকে যান বা ধাপসমূহ ঠিকভাবে না আঁকা যায় তবে অন্যান্য পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি যেমন ইন্ডিকেটর, ফিবোনাক্কি ইত্যাদি ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নিন।
বিশেষভাবে লক্ষণীয়ঃ সকল কখগ কারেকশনে (আঁকাবাঁকা, সমান, অনিয়মিত, দ্বিগুণ তিন, তিনগুন তিন) গ তরঙ্গ টি ৫ তরঙ্গের ধাপে গঠিত। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। গ তরঙ্গের পর নতুন ইম্পালসিভ তরঙ্গে ট্রেডের/বিনিয়োগের পরিকল্পনা করার পূর্বে এটা ভাল করে দেখে নিতে হবে।
প্রতিটি পূর্ণ ইলিয়ট ওয়েব ৫টি ইম্পালসিভ তরঙ্গ দ্বারা গঠিত যা মূল ট্রেন্ড অনুসরণকারী ৩টি কারেক্টিভ তরঙ্গের দিকনির্দেশ করে। যাদের বলা হয় “৫-৩ পথ” ।
এই ৫-৩ গতিপথ যে কোন সময় ছকের ( M1, M5, M15 থেকে W1, M1 পর্যন্ত সব) জন্য সত্য।
ইহা একটি উচ্চমুখী ট্রেন্ড যেখানেঃ
১-২-৩-৪-৫ হচ্ছে ইম্পালসিভ পথ, যেখানে তরঙ্গ ১-৩-৫ হচ্ছে ইম্পালসিভ তরঙ্গ এবং ২-৪ হচ্ছে কারেক্টিভ তরঙ্গ।
ক-খ-গ হচ্ছে কারেক্টিভ পথ, যেখানে ক-খ হচ্ছে ইম্পালসিভ তরঙ্গ এবং গ হচ্ছে কারেক্টিভ তরঙ্গ।
কিন্তু, এসব ইম্পালসিভ অথবা কারেক্টিভ বিষয়ের মানে কি ?
এগুলো বুঝতে হলে আমাদের যেতে হবে লেনদেনকারীদের আচরণ বিষয়ক বিবরণীতে এবং কিভাবে এগুলো ইলিয়ট অনুসারে কাজ করে।
তরঙ্গ ১ – ক্রেতাদের প্রথম দলের ইম্পালসিভ আশা প্রকাশ করে। তারা কেনার একটি ভাল কারণ খুজে পায় (ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল কারণ). আর তাই তারা মার্কেটকে উপরে উঠতে চাপ প্রয়োগ করে।
তরঙ্গ ২ – ইম্পালস তরঙ্গটি পরিবর্তিত হয়ে যায় কারণ আসল ক্রেতারা তাদের লেনদেন লাভ নিয়ে বন্ধ করে দেয়। যখন অন্য বিনিয়োগকারীরা, যারা এই সুযোগ নিতে পারেনি তারা নতুন সুযোগের আপেক্ষায় বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করে।
তরঙ্গ ৩ – সাধারণত সবচেয়ে লম্বা এবং শক্তিশালী তরঙ্গ। প্রত্যেক বিনিয়োগকারী যারা কিনতে চায় তারা ( যারা তরঙ্গ ১ এ সুযোগ হারিয়েছে এবং যারা সুযোগ পায়নি ) এখান থেকে কিনতে থাকে। আরও যোগ হয় তারা যারা তরঙ্গ ৩ এর মাঝে এসে সন্তুষ্ট হয় যে তরঙ্গটি উচ্চমুখী। সবকিছু মিলে একটি বড় বেগবৃদ্ধির মাধ্যমে এটি মূল ট্রেন্ডে পরিণত হয়।
তরঙ্গ ৪ – আগে হোক বা পরে হোক, এখন লাভ তুলে নেওয়ার সময়, এই ইম্পালসিভ পথ পুনরায় পরিবর্তিত হতে শুরু করে। যাইহোক, এই অগভীর পরিবর্তনের মাধ্যমে বোঝা যায় যে আরও ক্রেতা রয়েছে যারা এই ট্রেন্ডে যোগ দিতে চায়।
তরঙ্গ ৫ – তাই পুনরায় ট্রেন্ড উচ্চমুখী হওয়া শুরু করে, কিন্তু মার্কেট ক্রয়াধিক ( অত্যাধিক ক্রয়) হয়েছে এবং ইহা নিশ্চিত যে এখন একটি বিপরীত পরিবর্তন হবে। তরঙ্গ ৫ এর শেষ বোঝা যায় বিক্রয়াধিক ( অত্যাধিক বিক্রয় ) মার্কেট ( উচ্চমুখী ট্রেন্ডের মধ্যে ) এবং ডাইভারজেন্স দ্বারা।
ডাইভারজেন্স – এটি বলতে বুঝায় যে, মার্কেট উচ্চমুখী ট্রেন্ডে ক্রয়াধিক দেখা যাচ্ছে কিন্তু RSI ইন্ডিকেটরে বিপরীত দিক নির্দেশিত বিক্রয়াধিক দেখাচ্ছে। এতে বুঝা যায় যে উচ্চমুখী মার্কেট নিম্নগামী হবে। ( বিপরীতক্রমে নিম্নমুখী মার্কেটের ক্ষেত্রে উচ্চগামী )
তরঙ্গ ক, খ, গ – এই তরঙ্গগুলো তৈরী হয় প্রধান ট্রেন্ডের বিপরীত তরঙ্গের ট্রেন্ড পদ্ধতি হিসেবে। এই সময় নতুন ট্রেন্ড গঠিত হতে পারে আবার নাও হতে পারে এবং নতুন ১-২-৩-৪-৫-ক-খ-গ ক্রমানুসারে তরঙ্গগুলো শুরু হতে পারে।
ইলিয়ট তরঙ্গ এবং চক্রের প্রকারভেদঃ
ইহা খুব ভাল হতো যদি এই ৫-৩ তরঙ্গগুলো পেতাম এবং বিনিয়োগ করতাম, কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আমরা যখন মূল্য তালিকার দিকে তাকাই তখন এই রকম মসৃণ ৫-৩ তরঙ্গ পাওয়া যায় না, তার পরিবর্তে দেখা যায় গোলক ধাঁধার উপর নিচ পথের মত। এখন আপনি কি করবেন?
ইলিয়ট তরঙ্গ তত্ত্ব বলে যে প্রত্যেক তরঙ্গই ছোট ছোট তরঙ্গ দ্ধারা গঠিত।
যদি প্রত্যেক তরঙ্গই ছোট ছোট তরঙ্গের শ্রেণী দ্বারা গঠিত হয় তাহলে ছবিটি দেখতে এরকমঃ
ইলিয়ট তরঙ্গের চক্রগুলো
ইলিয়ট তরঙ্গ অনুসারে একটি বড় তরঙ্গ তৈরী হয় প্রতিটি পূর্ণ ১-২-৩-৪-৫-ক-খ-গ তরঙ্গের সমাবেশে ( বড় তরঙ্গের একটি চক্র ) ।
নিচে ইলিয়ট তরঙ্গ চক্রের একটি পরিচিত তালিকা এবং এদের বিভিন্ন প্রকারের নাম দেওয়া হলোঃ
তরঙ্গের প্রকার ৫ এর ট্রেন্ড ৩ এর বিপরীত ট্রেন্ড সময়ের পরিধি
সর্ব্বোচ্চ বৃহৎচক্র [[[[[[[[ [[ I] [II] [III] [IV] [V] [অ] [আ] [ই] শতাব্দী, যুগ
বৃহৎচক্র ( I) (II) (III) (IV) (V) (অ) (আ) (ই) যুগ, বাৎসরিক
চক্র I II III IV V অ আ ই বাৎসরিক, ত্রিমাসিক, মাসিক
প্রাথমিক [ ১] [২] [৩] [৪] [৫] [ক] [খ] [গ] ত্রিমাসিক, মাসিক, সপ্তাহিক, প্রতিদিন
মাধ্যমিক ( ১) (২) (৩) (৪) (৫) (ক) (খ) (গ) মাসিক, সপ্তাহিক, প্রতিদিন
গৌণ ১ ২ ৩ ৪ ৫ ক খ গ মাসিক, সপ্তাহিক, প্রতিদিন, ২৪০ মিনিট
মিনিট [ i] [ii] [iii] [iv] [v] [অ] [আ] [ই] সপ্তাহিক,প্রতিদিন,২৪০-৬০ মিনিট
মিনিটি ( i) (ii) (iii) (iv) (v) (অ) (আ) (ই) প্রতিদিন, ২৪০-৬০ মিনিট
উপমিনিটি i ii iii iv v অ আ ই ২৪০-৬০ মিনিট এবং আরও কম
টীকাঃ অনলাইন ট্রেডিং পদ্ধতিতে তৃতীয় বন্ধনীর পরিবর্তে গোলক চিহ্নও ব্যবহার করা হয়।